সাইট উন্নয়নে আপনাদের লেখা ও পরামর্শ চাচ্ছি-সম্পাদক

শিবচরে অপহরণের ১৩ দিন পরে আড়িয়াল খাঁ নদের কাশবন থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

শুক্রবার দুপুর ১২টায় শিবচর উপজেলার বহেরাতলা ছোট টেকেরহাট এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদের একটি কাশবন থেকে পুলিশ সামসুল আলম দফাদার (৩৫) এর গলিত লাশ উদ্ধার করেছে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট রাতে অজ্ঞাত ৮/৯ জন সন্ত্রাসীরা সামসুল আলমকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী কাঁচা রাস্তা থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। নিখোঁর থাকার ১৩ দিন পড়ে বহেরাতলার ছোট টেকেরহাট আড়িয়াল খাঁ নদের কাশবনে স্থানীয় লোকজন লাশটি দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ তার গলিত লাশ উদ্ধার করে মাদারীপুর মর্গে প্রেরণ করে। নিহত সামসুল আলম বহেরাতলার ছোট টেকেরহাট এলাকার ছেরা দফাদারের ছেলে। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল হুমকীর মুখে

পদ্মানদীর পানি তড়িৎ গতিতে হ্রাস পাওয়ায় কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌরুটে অসংখ্য ডুবোচর দেখা দিয়েছে। দিন দিন নদীর তলদেশে পলি ভরাট হয়ে নাব্যতা সংকটে বর্তমানে ফেরি পারাপারে সময় লাগছে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা। কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌরুটে কাঁঠালবাড়ি-চরজানাজাত টার্নিং পয়েন্টে চ্যানেলটি গত কয়েক মাস ধরে অতিরিক্ত পলি পরে ভরাট হয়ে নাব্যতা সংকটে পড়লে মঙ্গলমাঝির ঘাট ও তারপাশা হয়ে কাওড়াকান্দি-মাওয়ার সাথে ফেরি পারাপার করতে হচ্ছে। এতে প্রায় ৫ থেকে ৭ কিলোমিটার রাস্তা বেশি অতিক্রম করে যোগাযোগ ব্যবস্থা চলু রাখা হয়েছে। কাঁঠালবাড়ি-চরজানাজাত টার্নিং পয়েন্টে চ্যানেলটি গত দেড় মাস যাবত ড্রেজিং মেশিন দ্বারা সংস্কারের কাজ অব্যহত থাকলেও এর থেকে কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। কচ্ছপ গতিতে মেশিনটির কাজ চলতে থাকায় দিন দিন সমস্যা আরো প্রকাট আকার ধারণ করছে।
বর্তমানে কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌরুটে ৯টি ফেরি চলাচল করছে। এর মধ্যে ২টি রোরো,৩টি ফ্লাট ও ৪টি ক্যাপাট ফেরি। বাকী ২টি ফ্লাট ফেরির ইঞ্জিন বিকল থাকায় ডকে রয়েছে। রোরো 'শাহ মকদুম' ও 'ভাষা শহিদ বরকত' সহ ফ্লাট ফেরিগুলো অসংখ্য ডুবো চরের কারণে খুড়িয়ে খুড়িয়ে নদী পারাপার হচ্ছে। নদীপথের এই অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণ, পশ্চিম অঞ্চলের তেইশটি জেলার মানুষ। নাব্যতা সংকটে ফেরি পারাপারে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগায় কাওড়াকান্দি-মাওয়ার দুই পাড়ে প্রতি দিন শত শত গাড়ি ও ট্রাক আটকা পড়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। রো রো ফেরি মাহ মকদুম-এর চালক মো: সিরাজী জানান, অতি দ্রুতভাবে কাঁঠালবাড়ি চর জানাজাত টার্নিং পয়েন্টের চ্যানেল চালু না হলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই রো রো সহ সকল ধরনের ফেরিগুলো ডুবো চরের কারণে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়বে।
Read More ... »

শিবচরে এক রাতে ১৩ জন ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি গ্রেফতার

সোমবার রাতে শিবচর থানার পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক বা একাধিক মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত ১৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায় ছিনতাই চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ ও অস্ত্রসহ এক বা একাধিক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ১৩ জন আসামিকে সোমবার রাতে শিবচর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।
Read More ... »

মাদবরচর ইউনিয়নে দুই কৃষককে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা

মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের লপ্তিকান্দি গ্রামে বিকেলে ক্ষেতে আখ কাটার সময় দুই কৃষককে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। জানা যায়, শিবচর উপজেলার মাদবরচর লপ্তিকান্দি গ্রামে কৃষক বাচ্চু বেপারী (৪৫) ও তার ছোটভাই শহিদ বেপারী (৩৬) তাদের নিজ ক্ষেতে আখ কাটার সময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সন্ত্রাসী জলিল আকন, মালেক আকন, কালাম আকন সহ আরো ৪/৫ জন সন্ত্রাসী সহোদর দুই কৃষককে ধারালো ছুরি দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে আখ ক্ষেতে রেখে যায়। পরে এলাকাবাসী তাদের আর্ত্মচিৎকারে এগিয়ে এসে দুইজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় শিবচর হাসপাতালে ভর্তি কর। আহতরা আশংকাজনক বিধায় ডাক্তার তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

দত্তপাড়া ইউনিয়নে গাছে ঝুলানো যুবকের লাশ


আজ সকালে শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের গুয়াগাছিয়া গ্রামে শিরিষ গাছের সাথে গলায় রশি বাঁধা কুদ্দুস নামের এক যুবক (৩২) এর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকাবাসী সকালে সড়কের পাশে শিরিষ গাছে ঝুলন্ত যুবকের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। নিহত যুবকের সামনে সাদা রঙের একটি পিকআপ (ফরিদপুর-ড-১১-০০০৪) রাখা। নিহত কুদ্দুসের বাড়ি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার শ্রীকৃষ্ণদি গ্রামে। তার পিতার নাম আব্দুল বারেক মৃধ। তার পরিবারের পক্ষ থেকে একে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিবচর থানার ওসি আবদুল জলিল জানান, শুক্রবার সকালে শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের গুয়াগাছিয়া গ্রামের একটি পাকা সড়কের পাশে শিরিষ গাছের সাথে গলায় রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় একটি লাশ এলাকাবাসী দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে জানা যাবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা।




Read More ... »

শিবচরে সেনাবাহিনীর নায়েক কুপিয়ে জখম করেছে পুলিশ কনেস্টবলকে

ছোটভাই সেনাবাহিনী অবসর প্রাপ্ত নায়েক আবু তালেব মুন্সী ধারালো ছুড়ি দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করেছে তার আপন বড়ভাই অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনেস্টবল মোতালেব মুন্সী (৭০) কে। ঘটনাটি ঘটেছে গত গতকাল সন্ধ্যা ৭ টায় শিবচর উপজেলার বহেরাতলা ইউনিয়নের সরকারেরচর গ্রামে।
জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পুলিশ কনেস্টবল বড় ভাই মোতালেব মুন্সীর সাথে ছোটভাই সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত নায়েক আবু তালেব মুন্সীর দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত ঘটনার জের ধরে গতকাল সন্ধ্যায় মোতালেব মুন্সী সরকারেরচর বাজারের একটি চায়ের দোকানে বসে চা পানের সময় ছোট ভাই আবু তালেব সহ আরো ৪/৫ জন দুর্বৃত্তরা উপর্যপরি ধারালো ছুরি দিয়ে মোতালেবকে কুপিয়ে জখম করে মৃত্যু ভেবে একটি দোকানের কাছে রেখে যায়। স্থানীয় দোকানদারেরা পরে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় শিবচর হাসপাতালে ভর্তি করে। এই ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

শিবচরে রাতের অন্ধকারে ৩ লক্ষ টাকার গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা

পাঁচ্চর ইউনিয়নের বাহিরচর গ্রামে মোহাম্মদ ফিরোজ মাদবরের বসতবাড়ির ভিটা থেকে পূর্ব শত্র“তার জের ধরে ৩ লক্ষ টাকা মূল্যের শিরিষ ও দেবদারু গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। জানা যায়, উপজেলার পাঁচ্চর ইউনিয়নের বাহিরচর গ্রামের মোহাম্মদ ফিরোজ মাদবরের বসত ভিটা থেকে মধ্যরাতে আজিজুর রহমান, ইলিয়াছ আহমেদ ও হানিফ মাহমুদের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী প্রায় ৩ লক্ষ টাকা মূল্যের শিরিষ ও দেবদারু গাছ কেটে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

শিবচরে ব্র্যাকের পল্লী সমাজের সহযোগিতায় ৫০টি দুস্থ পরিবারের মধ্যে ঘর বিতরণ


শিবচর উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের দুস্থ পরিবারে মধ্যে ব্র্যাকের পল্লী সমাজের আর্থিক সহযোগিতায় ৫০টি অর্ধপাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। গত ১৫ দিন ধরে এই বসত ঘরের নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
জানা যায় ব্র্যাকের পল্লী সমাজের পক্ষ থেকে শিবচর উপজেলার নদী ভাঙ্গন ও অগ্নিকাণ্ডে তিগ্রস্ত পরিবারদের বসবাসের জন্য এই ঘরগুলো নির্মাণ করে দেওয়া হয়। প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা মূল্যের এই ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পল্লী সমাজের পাঁচ্চর শাখার প্রধান ওবায়দুর রহমান, পিওএসডি; সভা প্রধান মঞ্জুরী ও পল্লী সামাজের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
Read More ... »

শিবচর থেকে পাচার হওয়া দুই তরুণী ভারতের যৌনপল্লী থেকে ফিরে এসে থানায় মামলা : দুই পাচারকারী আটক

চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের মৃজারচর গ্রাম থেকে পাচার হওয়া দুই তরুণী ভারতের যৌনপল্লী থেকে ফিরে এসে থানায় মামলা করেছে। উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত দুই পাচারকারীকে শিবচর থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
জানা যায় ২০০৮ সালের ১০ আগস্ট শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের মৃজারচর গ্রামের হত দরিদ্র সেকান্দার মোল্যার কন্যা পপি (১৮) ও তার ছোটবোন হ্যাপি (১৬)-কে একই গ্রামের হাজেরা বেগম ও তার ছেলে দেওয়ান চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতের একটি যৌনপল্লীতে বিক্রি করে আসে। দুইবোন প্রায় এক বছর পরে কৌশলে যৌনপল্লী থেকে বেড়িয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শিবচর থানার ওসি আব্দুল জলিলের কাছে পাচার হাওয়া দুইবোন আশ্রয় নেয়। পরে ওসির সহযোগিতায় বড়বোন পপি বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে একটি পাচার মামলা দায়ের করে। উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত থাকা হালিম মোল্যার স্ত্রী হাজেরা বেগম (৪০) ও তার ছেলে দেওয়ান (২২)-কে শিবচর থানার পুলিশ আজ সন্ধ্যায় বাঁশকান্দি মৃজারচর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে।
Read More ... »

শিবচরে বৌভাত অনুষ্ঠানে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ : আহত ১১ জন

শিবচর উপজেলার সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নে দৌলতপুর গ্রামের বর আবুল কাশেম মুন্সীর বাড়িতে বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে এসে কনের পক্ষের মহিলাসহ ১১ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশংকাজনক।
জানা যায়, শিবচর উপজেলার সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের কুটি মিয়া মুন্সীর ছেলে কাসেমের সাথে একই ইউনিয়নের রাজারচর মঙ্গল মাদবরকান্দি গ্রামের শওকত খানের মেয়ে লাবনীর সাথে বুধবার বিয়ে হয়ে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বরের বাড়িতে বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে বর ও কনের পক্ষের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হয় সামচু মাস্টার (৪০), সাইফুল হাওলাদার (৩৫), মনির মুন্সী (৫০), সাইদুল (৩৪), শওকত (৫২), মেরাজ হাওলাদার (২৮), ওয়াশিম (১১), ফয়সাল (১০), জাহানারা (৩২), ফাহিমা (২৫), রুবেল (১৮)। এদেরকে শিবচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশংকাজনক। কনেপক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তাদের নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার ও ৬টি মোবাইল সেটসহ প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট হয়েছে।
Read More ... »

শিবচরের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বাবুল বেপারী ঢাকায় গ্রেফতার

ঢাকা থেকে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, হত্যা, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী শিবচরের বাবুল বেপারীকে (৩০) বুধবার মধ্যরাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও র‌্যাব।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিবচর থানার পুলিশের একটি দল ঢাকা যায়। সেখানে র‌্যাবের সদস্যদের সহায়তায় বুধবার মধ্যরাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ি দয়াগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাবুল বেপারীকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিবচর থানায় আনা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বাবুল বেপারী শিবচর উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের রামরায়ের কান্দি গ্রামের হাকিম বেপারীর ছেলে।
Read More ... »

শিবচরে উৎরাইল হাট থেকে সুন্দরী কাঠ উদ্ধার

শিবচরে উৎরাইল হাট থেকে র‌্যাব সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বেলা দুইটায় ১শ' ৬০ সিএফটি সুন্দরী কাঠ উদ্ধার করেছে। জানা যায়, র‌্যাব-৮ মাদারীপুরের এএসপি মাহমুদের নেতৃত্বে শিবচরের উৎরাইল হাটের কাঠপট্টি এলাকা থেকে বিভিন্ন দোকানে তল্লাসী চালিয়ে ১শ' ৬০ সিএফটি সুন্দরী কাঠ উদ্ধার করে। যার মূল্য আনুমানিক ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। কাঠ উদ্ধারের ঘটনায় কোন ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়নি। উদ্ধারকৃত কাঠগুলো শিবচর থানার পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
Read More ... »

শিবচরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মধ্যরাতে দুই গ্রামবাসীর : মালামাল লুটসহ আহত ১১

বুধবার রাত ১১ টায় শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের আর্য দত্তপাড়া গ্রামে এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে মহিলাসহ ১১জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, আওয়ামী লীগ সমর্থিত মাজেদ মাদবর ও একই এলাকার ইলিয়াছ মাদবরের সাথে আধিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র রাতে প্রথমে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে ইলিয়াছ মাদবরের লোকজন মাজেদ মাদবর ও তার ছোটভাই সৌদি প্রবাসী লুৎফর মাদবরের ৩টি ঘরে লুটপাট ও ভাংচুর চালিয়ে ১৫ ভরি স্বর্ণলঙ্কার, নগদ ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ও ৩টি মোবাইল সেট নিয়ে যায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা মাজেদ মাদবর (৪৮), সুজাদ (১৫), হেনা (২৭), আরবি (২২), আসমা (৪৫) কে ধারালো ছুড়ি দিয়ে জখম করে। উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মাজেদ মাদবরের গ্রুপ অপর পক্ষকে ধাওয়া করে ইলিয়াছ মাদবর (৪৫), বিজু মাদবর (১৮), উজ্জ্বল (২৫), ফয়জল হাওলাদার (৪৮), সুরা (২০) কে পিটিয়ে জখম করে। আহতদের শিবচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশংকাজনক। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় দুটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

শিবচরে নৈশকোচ খাদে : অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত

শুক্রবার রাত সাড়ে বারটায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বন্দরখোলা ইটের ভাটা এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় অর্ধ শতাধিক যাত্রী আহত হয়েছে। বরগুনা থেকে সুগন্ধা পরিবহনের একটি নৈশকোচ (যশোর-ব-০৭৬৫) ঢাকা যাবার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শিবচরের বন্দরখোলা ইটের ভাটার কাছে একটি খাদে পড়ে যায়। এতে নজরুল (৩২), ফেরদৌসী (২৫), শিরিন (৩৫), সোহাগ (২৭), মহসিন মল্লিক (৪০), রুবি (৩৫), ইদ্রিস মৃধা (৩৫), ছবি (২৫), সুখি (১৭), নাসির (২৮), ফারুক (৪৫), আলমগীর (৩৫), আফজাল (৩৫), খলিল মুন্সী (৩০), রোকসানা (২৬), রতন সাহা (২৮), মজিবর (২৩), কাঞ্চন (৩৫), জোবাইদা (৪৮), বিথি (৬), অরুণাসাহা (১৭), সাহাবুদ্দিন (৪১), মাহফুজা (২৯), একরাম (২২), গোবিন্দ দাস (৭৪), নয়নতারা (৩৫), ইছামতি (২০), অলকা (১২), রেজাউল (২৫), তামিম (১৭), বিশাই মাল (৪৮), মোতালেব মুন্সী (৪১), জয়গুন নেছা (৩৫), আরজুবার (৩৮), রিজু (৭) আহত হয়। আহতদের শিবচর, ভাঙ্গা, ফরিদপুর ও বরিশাল হাসপাতালে ভর্তি করো হয়েছে। এদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহত হওয়ার কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি।
Read More ... »

মাত্র আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ কাঁচিকাটা-গোলারবাজার-কালিখোলা সড়কটি সংস্কারের অভাবে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে


শিবচর উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের পান ও সবজি চাষ সমৃদ্ধ এলাকা বলে খ্যাত কাঁচিকাটা গ্রামের কাঁচিকাটা-গোলারবাজার-কালিখোলা সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে বর্তমানে চলাচলে প্রায় অনুপযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সড়কটি প্রায় একশ' বছরের পুরাতন এবং এলাকার ঐতিহ্য বহন করে আসছে। সড়কটি উপজেলা সদর থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত যা চান্দেরচর বাজার গ্রোথ সেন্টারের সাথে সরাসরি সংযুক্ত। এলাকার প্রায় ২৫ হাজার মানুষের চলাচলের জন্য একমাত্র পথ এই সড়কটি। মাত্র আড়াই কিলোমিটারের এই সড়কটির দেড় কিলোমিটার ইটের তৈরি বাকী এক কিলোমিটার কাঁচা মাটির। ইটের তৈরি অংশের স্থানে স্থানে ইট বিহীনসহ পুরো পথটি খানাখন্দে ভরা। যা বর্ষা মৌসুমে চলাচলে প্রায় অনুপোযোগী হয়ে পড়ে।
পান ও সবজি চাষে প্রসিদ্ধ হওয়া সত্বেও এ রাস্তাটির বর্তমান অবস্থার কারণে এ অঞ্চলের চাষীরা তাদের উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য উপজেলা সদর সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে ব্যর্থ হয়। ফলে চাষীরা অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে।
কাঁচিকাটা-গোলারবাজার-কালিখোলা সড়কটি সংস্কারের দাবীতে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মহলে ধর্না দিয়েও তার কোন প্রতিকার না পেয়ে স্থানীয়ভাবে মো. কামরুজ্জামান মিলনকে আহ্বায়ক, রতন কুমার পাল ও নান্নু সিপাইকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং মো. আজাদ হাওলাদারকে সদস্য সচিব করে ৫৮ সদস্য বিশিষ্ট সড়ক সংস্কার বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করেছে। বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক কৃষিবিদ মো. কামরুজ্জামান মিলন জানান, সড়কটির আশু সংস্কারের দাবীতে তারা স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করেছেন। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট ও আমরণ অনশনের মাধ্যমে সড়কটি সংস্কারের দাবী জানাবেন।
Read More ... »

শিবচরে এক জেলেকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা

বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের চরবাচামারা গ্রামের এক জেলেকে নৃশংসভাবে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। জানা গেছে, আব্দুর রব মুন্সী (৪৫) নামে এক জেলে ভোররাতে বটতলা নদী থেকে মাছ ধরে তার বাড়ি চরবাচামারা ফেরার পথে রাস্তার পাশে ওৎ পেতে থাকা চিহ্নিত সন্ত্রাসী কোব্বাত আলী, চানমিয়া ও মজিবর পূর্ব শত্রুতার জের ধরে জেলেকে নদীর পাড়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে মৃত্যু ভেবে ফেলে রেখে যায়। পরে এলাকাবাসী জেলে আব্দুর রব মুন্সীকে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে শিবচর হাসপতাল পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

শিবচরে এক রাতে ৫ বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি : ৭ লক্ষ টাকার মালামাল লুট

বুধবার মধ্যরাতে শিবচর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ডাকাত দলেরা হানা দিয়ে ৫ বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত করেছে। এ সময় ঘরে থাকা নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ৭ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। জানা যায়, ১০/১২ জনের শসস্ত্র ডাকাতদল কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নে মাগুরখন্ড গ্রামের কালাম হাওলাদার, মোসলেম মৃধা, দাদন বেপারি ও দত্তপাড়া ইউনিয়নের গুয়াগাছিয়া গ্রামের আসমত আলী মুন্সী ও শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে কপাট ও জানালার গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে নগদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ২৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৬টি মোবাইলসেটসহ প্রায় ৭ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
Read More ... »

শিবচরে আওয়ামী লীগের দু'গ্রুপের বন্দুক-যুদ্ধ : মহিলাসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ

শিবচরে এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের বিবাদমান দু'গ্রুপের বন্দুক-যুদ্ধে মহিলাসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে এগারটায় মাদবরচর ইউনিয়নের খাড়াকান্দি গ্রামে। জানা যায়, শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজের ছোটভাই সামসুল আলম বকুল হাওলাদারের সাথে একই গ্রাম মাদবরচর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতি হাওলাদারের সহিত দীর্ঘদিন ধরে এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। চলমান ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে বকুল হাওলাদার ও মতি হাওলাদারের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে প্রথমে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে দু'গ্রুপের মধ্যে বন্দুক-যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে আইয়ুব আলী হাওলাদার (৩৫), সোহাগ হাওলাদার (২২), সাথি আক্তার (১৭) গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদের শিবচর হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিবচর থানার ভরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত রাখারা জন্য দু'গ্রুপের বকুল হাওলাদার ও মিন্টু হাওলাদারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গ্রামটি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
Read More ... »

কুতুবপুর বাজারে পাটের গুদামে আগুন : ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

আজ (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৮ টায় শিবচর উপজেলার কুতুবপুর বাজারে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় সাড়ে ৭শ' মণের একটি পাটের গোলা পুড়ে সম্পূর্ণ ছাই হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। জানা যায়, কুতুবপুর বাজারে সরকারি একটি টল-ঘরে পাট ব্যবসায়ী আমিন উদ্দিন মাদবর, লতিফ বেপারি, মো. চান মিয়া মোল্লা, শুকুর বেপারি ৭শ' ৫০ মণ পাট বিক্রির জন্য গোলা করে রাখে। শনিবার রাতে রহস্যজনকভাবে গোলাটিতে আগুন লাগলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রায় ৩ ঘণ্টা পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সম হয়। ব্যবসায়ীরা ঘটনাটি নাশকতা বলে উল্লেখ করেছেন।
Read More ... »

প্রথমে মোবাইল চুরি, পরে টাকা ছিনতাই : প্রতিবাদ করতে গিয়ে মালামাল হারানো ব্যক্তিকে গণধোলাই

শিবচরে মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটায় এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছিনতাই হলো ৩ হাজার টাকা। শেষে সংঘবদ্ধ চোরের-দল মালামাল হারানো ব্যক্তি সিদ্দিক বেপারিকে দিয়েছে গণধোলাই। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর বাজার এলাকায়। জানা যায়, বাহাদুরপুর খানাকান্দি গ্রামের সিদ্দিক বেপারি বাহাদুরপুর বাজারে একটি সেলুনে বসে চুল কাটাতে থাকে। এ সময়ে তার শার্টের পকেটে থাকা একটি মোবাইল সেট পাঁচ্চর-দক্ষিণকান্দি এলাকার মন্টু শীলের ছেলে বিশু শীল (২৫) চুরি করে নিয়ে যায়। চুরি হওয়া মোবাইলটি বিশুর কাছে দেখে সিদ্দিক তাকে চোর বলে গালমন্দ শুরু করে। এ ঘটনার জের ধরে বিশুর সহযোগী ৭/৮ জন সংঘবদ্ধ হয়ে সিদ্দিক বেপারির মানিব্যাগে থাকা ৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। মালামাল হারানো ব্যক্তি সিদ্দিক চুরির প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে লাঠি দিয়ে বেধরক পিটিয়েছে চোরের-দল। চোরের-দল এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় মাতুব্বরেরা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওযার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ইউপি মেম্বর নুরুল ইসলাম মুন্সির সাথে যোগাযোগ করা হলে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এবং ছিনতাই হওয়া টাকা ও মোবাইল সেট চোরের কাছ থেকে উদ্ধার করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় সিদ্দিক বেপারি বাদি হয়ে একটি লিখিত অভিযোগে দায়ের করেছে।
Read More ... »

শিরুয়াইল বাজারে অগ্নিকাণ্ড : ৮ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ভস্মীভুত

বৃহস্পতিবার রাত ১টায় শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল বাজারে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩টি দোকানসহ প্রায় ৮ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ভস্মীভুত হয়েছে। জানা যায়, মধ্যরাতে আক্কাস বেপারির মুদি দোকানে মশার কয়েল থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হলে ছাত্তার বেপরীর ১টি জুতার দোকান ও আক্কাস বেপারির অন্য ১টি কসমেটিক্সের দোকান সম্পূর্ণ ভস্মীভুত হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দু'ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮ লক্ষাধিক টাকা।
Read More ... »

শিবচরে বিএনপি'র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ : ধাওয়া করে ইউনিয়ন সেক্রেটারিকে লাঞ্ছিত

শিবচর উপজেলার চর জানাজাত ইউনিয়ন শাখার বিএনপি সেক্রেটারি শাহজাহান মিনাকে লাঞ্ছিত করেছে তার প্রতিপক্ষ কর্মীরা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাত ৮টায় চর জানাজাত ছিরু চৌধুরীর হাট এলাকায়। জানা যায়, শিবচর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ থেকে গত ৮ সেপ্টেম্বর শাহজাহান মিনাকে চর জানাজাত ইউনিয়নের সেক্রেটারি ঘোষণা করা হয়। বিএনপি'র অপর গ্রুপ আমজাদ বেপারির সমর্থকেরা এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার রাতে ছিরু চৌধুরীর হাটের একটি চায়ের দোকানে শাহজাহান মিনাকে লাঞ্ছিত করে। তারা সেক্রেটারির পদ থেকে শাহজাহান মিনাকে অপসারণ করে আমজাদ বেপারিকে সেক্রেটারি দাবী করে স্লোগান দেয়।
Read More ... »

আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের যুবকের লাশ উদ্ধার

মঙ্গলবার দুপুরে শিবচর থানার পুলিশ শিরুয়াইল ইউনিয়নের সিপাইকান্দি এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদের কাশবন থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। জানা যায়, এলাকাবাসী আড়িয়াল খাঁ নদের কাশবনের কাছে অজ্ঞাত যুবকের লাশটি ভাসমান অবস্থায় দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে মাদারিপুর মর্গে প্রেরণ করেছে। অজ্ঞাত যুবকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

চোরকে চিকিৎসাসেবা

ভ্যান চুরির অভিযোগে কথিত চোর আজাহার (৩৫) কে প্রথমে উত্তম মধ্যম দিয়ে পরে তাকে সুস্থ করার জন্য চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকালে উপজেলার পাঁচ্চর ইউনিয়নের গোয়ালকান্দা গ্রামে।
জানা যায়, গোয়ালকান্দা গ্রামের সামচু বেপারির একটি ভ্যানগাড়ি মধ্যরাতে তালা ভেঙ্গে আজাহার চুরি করে হাজি শরিয়াতুল্লাহ সেতুর দিকে যেতে থাকে। বিষয়টি উপস্থিত লোকজন টের পাওয়ায় ভ্যানগাড়িটি ব্রিজের উপরে রেখে আজাহার পালিয়ে যাওয়ার সময় লোকজন তাকে ধাওয়া করে আটক করে। সকালে সামচু বেপারী ও আরও ২৫/৩০ জন ভ্যানচালক সংঘবদ্ধ হয়ে চোরকে গণধোলাই দিলে সে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। চোরের অবস্থা বেগতিক দেখে ভ্যানচালকেরা হাতুড়ে ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসাসেবা দিয়ে তাকে সুস্থ করে। চোরের চিকিৎসাসেবা ও তাকে বাড়ি পৌছানোর জন্য ১ হাজার টাকা জরিমানা গুণতে হয়েছে ভ্যানচালকদের। ভ্যানচালক আজাহারের বাড়ি রাজৈর উপজেলার ইসুবপুর গ্রামে।
Read More ... »

এনজিও-র ঋণের টাকার তাড়া খেয়ে ঘরবাড়ি ফেলে স্বপরিবারে পালিয়ে গেছে এক গৃহবধু

শিবচরের কয়েকটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে উচ্চহারে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে ঘরবাড়ি ফেলে রাতের অন্ধকারে এলাকা ছেড়েছে আকিমন নেছা (৩৮) নামের এক দিনমজুর পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৮ আগস্ট শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের ছলেনামা গ্রামে। ঋণ গ্রহীতার স্বামীর নাম আ: রাজ্জাক হাওলাদার (হালান)।
জানা যায়, গত ৫ মে ২০০৯ তারিখে গণ-উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর বাঁশকান্দি ইউনিয়নের শেখপুর শাখা থেকে দিনমজুর আ: রাজ্জাক হাওলাদরের স্ত্রী আকিমন নেছা ১৮ হাজার টাকার একটি ক্ষুদ্রঋণ উত্তোলন করে। ঋণের টাকা দিয়ে চলতে থাকে ৪ সন্তান ও স্বামী নিয়ে তার অভাব-অনটনের সংসার। হঠাৎ করে গত এক মাস ধরে ঋণের কিস্তি দেয়া বন্ধ হয়ে যায় আকিমন নেছার। গণ-উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড-এর শেখপুর শাখার ম্যানেজার সিদ্দিক মিয়া আকিমন নেছাকে কয়েকবার তার ঋণের কিস্তি পরিশোধের তাগিদ দেয়। অভাবী আকিমন নেছা বার বার সময় চেয়েও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। এক সময় আকিমন তার স্বামী ও ৪ সন্তান নিয়ে রাতের অন্ধকারে ঘরবাড়ি ফেলে অজানার উদ্দেশ্যে চলে যায়। পরে ম্যানেজার তার ঋণের টাকা উসুল করার জন্য আকিমনের ঘরটি ভেঙ্গে নিয়ে যায়। শেখপুর বাজারের ব্যবসায়ী আলমগীর, কলেজ ছাত্র শহিদুল ইসলাম এবং শিক্ষক আহসান মিয়া সহ এলকাবাসী জানান, অভাবী আকিমন নেছা আশা, ব্র্যাকসহ আরও ৪/৫টি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছে। সব মিলিয়ে ঋণের পরিমাণ হবে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। এনজিও-র ঋণের টাকায় মোটা অংকের সুদ থাকায় সে আর কোন ঋণ থেকেই মুক্তি পায়নি। দিন দিন ঋণ বোঝা সুদসহ ফুলে ফেপে প্রকট আকার ধারণ করায় প্রাণ রক্ষার্থে আকিমনের পরিবার রাতের অন্ধকারে ঘরবাড়ি ফেলে অজানার উদ্দেশ্যে চলে গিয়েছে। এ ব্যাপারে গণ-উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসেম মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমরা যদি ঘরটি ভেঙে না নিয়ে আসতাম তবে অন্যকেহ নিয়ে যেত।
Read More ... »

সংবাদ প্রকাশের পর...ধর্ষক স্কুল-শিক্ষককে আটক করে থানায় মামলা নিয়েছে পুলিশ

'৮ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ : সম্ভ্রমের মূল্য ২০ হাজার টাকা ও ৫১ বেত্রাঘাত' শিরোনামে 'শিবচর সংবাদ' ওয়েবসাইটসহ জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর শিবচর থানার পুলিশ রবিবার সন্ধ্যায় ধর্ষণ-মামলা দায়ের করে ধর্ষক স্কুল শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে। উল্লেখ্য গত বুধবার সন্ধ্যায় শিবচর উপজেলার সন্ন্যাসিরচর ইউনিয়নের রাজারচর মৌলভিকান্দি গ্রামের উকিল কান্দি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরু ফকির একই গ্রামের জালাল ফরাজির ৮ বছরের শিশু কন্যাকে ৫শ’ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তার গোয়াল-ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে শিশুটিকে ধর্ষণ করে লম্পট স্কুল শিক্ষক পালিয়ে যায়। শিশুটির বাবা-মা তার আর্ত্মচিৎকারে এগিয়ে এসে তাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে শিবচর হাসপাতালে ভর্তি করে। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় মতুব্বর সেলিম মেম্বার ও মোতালেব উকিল ধর্ষিতার বাড়ির উঠানে এক সালিস বৈঠক বসায়। তাদের রায়ে ধর্ষককে ৫১টি বেত্রাঘাত ও অসুস্থ ধর্ষিতাকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ধর্ষকের কাছ থেকে আদায় করা হয় ২০ হাজার টাকা। উক্ত ঘটনাটি ‌'শিবচর সংবাদ' ওয়েবসাইটসহ জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপরে হস্তক্ষেপে শিবচর থানার ওসি আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে একদল পুলিশ রবিবার সন্ধ্যায় ধর্ষককে গ্রেফতার করে এবং ধর্ষিতার বাবা জালাল ফরাজিকে বাদি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।
Read More ... »

অর্থের অভাবে অপারেশন করতে না পেরে মরতে বসেছে এক গর্ভবতী

উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের চরকান্দি গ্রামের হতদরিদ্র ভ্যান-চালক ইউনুছ শেখের স্ত্রী এক সন্তানের জননী অন্তঃসত্ত্বা শিউলি আক্তার (২৩) অর্থের অভাবে অপারেশন করতে না পেরে চার-চারটি হাসপাতাল থেকে ফেরত এসে বাড়িতে বসে মৃত্যুর প্রহর গুণছে। হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার জানিয়ে দিয়েছে অন্তঃসত্ত্বা শিউলির কোনমতেই নরমাল ডেলিভারি সম্ভব নয়।
রবিবার সকালে শিউলিকে প্রথমে শিবচরে পরে মাদারিপুর সদরে এরপর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও মাতৃমঙ্গল হাসপাতালে নেওয়া হয়। ডাক্তার আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে তার পেটে তিনটি সন্তান আছে বলে নিশ্চিত হয় এবং তাকে অপারেশনের পরামর্শ দেয়।
আট মাসের গর্ভবতী শিউলি রক্তশূন্যতায় ভোগায় অপারেশনের সময় প্রয়োজন হবে রক্তের; এই কারণে তার অপারেশনে প্রায় ৪০ হাজার টাকা প্রয়োজন। শিউলির পেটে তিনটি সন্তান থাকায় ডাক্তাররা তাকে ঢাকা পিজি হাসপাতালে গিয়ে অপারেশনের পরামর্শ দেয়। হতদরিদ্র ভ্যান-চালক ইউনুছ শেখ অর্থের অভবে স্ত্রীকে নিয়ে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েছে।
Read More ... »

৮ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ : সম্ভ্রমের মূল্য ২০ হাজার টাকা ও ৫১ বেত্রাঘাত

শিবচরে গ্রাম্য সলিসির রায়ে ৮ বছরের শিশু কন্যাকে ধর্ষণের দায়ে পঞ্চাষোর্ধ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরু ফকিরকে শাস্তি হিসেবে ৫১টি বেত্রাঘাত করা হয়েছে। অসুস্থ শিশুটিকে চিকিৎসাবাবদ ধর্ষকের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ২০ হাজার টাকা। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার শিবচর উপজেলার সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের রাজারচর মৌলভীকান্দি গ্রামে।
জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় রাজারচর উকিল কান্দি রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নুরু ফকির একই এলাকার হত দরিদ্র জালাল ফরাজির শিশুকন্যা (৮) কে ৫শত টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার গোয়াল ঘরে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করলে মেয়েটির চিৎকারে তার বাবা-মা এগিয়ে আসলে ধর্ষক পালিয়ে যায়। পরে শিশুটির বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে শিবচর হাসপাতলে ভর্তি করেন। এই ব্যাপারে ধর্ষিতার বাবা ধর্ষক নুরু ফকিরকে আসামি করে শিবচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ধর্ষক প্রভাবশীল হওয়ায় স্থানীয় লোকজনসহ এলাকার মাদবর সেলিম মেম্বর ও মোতলেব ফকির তরিঘরি করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় ধর্ষিতার বাড়ির উঠানে এক গ্রাম্য সালিসি বসায়। বিচারের রায়ে ধর্ষক নুরু ফকিরকে ৫১টি বেত্রাঘাত করা হয় এবং ধর্ষিতার চিকিৎসা বাবদ ধর্ষকের কাছ থেকে আদায় করা হয় ২০ হাজার টাকা। মেয়েটির বাবা জালাল ফরাজি জানান, আমি এলাকার গরীব মানুষ পাঁচ জনের রায় মেনেই আমার চলতে হবে। আমার একা কিছু করা সম্ভব না। শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল জানান, ঘটনার সত্যতা যাচাই হয়েছে। আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বাদীর পুরোপুরি সম্মতি থাকলে আমি মামলা নিয়ে নেব।
Read More ... »

প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি : আহত ২

শুক্রবার মধ্যরাতে শিবচর উপজলার মাদবচর ইউনিয়নের ডাইয়ার চর ফকির কান্দি গ্রামের কোরিয়া প্রবাসী আবুবকর ফকিরের বাড়িতে এক দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। ডাকাতেরা গৃহকর্তার বোন ঊর্মি (১১) ও ভাই কামাল হোসেন (১৮) কে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করেছে। জানা যায়, ১০/১২ জনের সশস্ত্র ডাকাত দল কোরিয়া প্রবাসী আবুবকর ফকিরের ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে নগদ ২১ হাজার টাকা, ৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ২টি মোবাইল সেটসহ প্রায় ২ লাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
Read More ... »

মটরসাইকেল চাপায় নিহত এক

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর)বিকেল ৫টায় শিবচর-পাঁচ্চর সড়কের বাহাদুরপুর এলাকায় মটরসাইকেল চাপায় চান মিয়া কাড়াল (৬৫) নিহত হয়েছে। জানা যায়, শিবচর থেকে একটি মটরসাইকেল পাঁচ্চর যাওয়ার পথে চান মিয়া কাড়ালকে পিছন দিক থেকে চাপা দেয়। চান মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে শিবচর পরে ঢাকা নেওয়ার পথে কওড়াকান্দি ফেরিঘাট এলাকায় মারা যায়। গাড়িসহ চালক পলাতক। নিহত চান মিয়া পাঁচ্চর ইউনিয়নের ঢালীকান্দি গ্রামের বাসের ঢালীর ছেলে।
Read More ... »

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩ টায় শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নের মোড়লকান্দি গ্রামে পানিতে ডুবে সিমা আক্তার (৯) মারা গেছে। জানা যায়, সিমা পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে তলিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে শিবচর হাসপাতালে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহত সিমা দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নের মোড়লকান্দি গ্রামের বাচ্চু মোড়লের মেয়ে।
Read More ... »

২১ লিটার ফেন্সিডিলসহ তিন মহিলা মাদক ব্যবসায়ী আটক

সোমবার (৩১ আগস্ট) রাত ৯টায় শিবচর হাইওয়ে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাওড়াকান্দি ফেরিঘাট এলাকা থেকে ২১ লিটার ফেন্সিডিলসহ ৩ মহিলা মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। পুলিশ জানায়, যশোর থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে মহিলা মাদক ব্যবসায়ীরা ফেরির অপেক্ষায় কাওড়াকান্দি ফেরি ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকে। পুলিশ সন্দেহ করে রোজিনা (৩০), জাবেদা খাতুন (৪৫), বরকাতুন্নেছা (৪৮) এর হাতে থাকা তিনটি ব্যাগে তল্লাসি চালিয়ে পলিথিনে মোড়ানো ২১ লিটার ফেন্সিডিল উদ্ধার করে। পরে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়ি যশোর সদর থানার নারায়ণপুর গ্রামে। এই ব্যপারে শিবচর থানায় মাদক দ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

শিবচরে ডাকাতি ২ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট

রবিবার রাত একটায় শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের সাদেকাবাদ গ্রামে মোতালেব মাদবরের বাড়িতে এক দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। জানা যায়, ১০/১২ জনের শসস্ত্র ডাকাতদল জানালার গ্রিল কেটে মোতালেব মাদবরের ঘরে প্রবেশ করে সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ২৩ হাজার টাকা, ২টি মোবাইল সেটসহ প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
Read More ... »

২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত চরমপন্থী সদস্য গ্রেফতার

শনিবার (২৯ আগস্ট) রাত ৯টায় শিবচর থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উমেদপুর ইউনিয়নের কাচিকাটা গ্রাম থেকে ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী চরমপন্থী দলের সক্রিয় সদস্য মোহাম্মাদ আলী হোসেন সরদার (৩২) কে গ্রেফতার করেছে। জানা যায়, সাজাপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি আলী হোসেন সরদার কাচিকাটা গ্রামে তার বাড়ির আঙিনায় বসে সহযোগীদের নিয়ে আড্ডা দেওয়ার সময় পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, ২০০৬ সালে ঢাকার ডেমরা থানার একটি অস্ত্র মামলায় মহানগরীয় জজকোট চরমপন্থী আলী হোসেন সরদারের নামে ২৭ বছরের সাজা ঘোষণা করে। পরে সে ৩ বছর ফেরারি অবস্থায় ছিল। গ্রেফতারকৃত আলী হোসেন সরদার উমেদপুর ইউনিয়নের কাচিকাটা গ্রামের কালু সরদারের ছেলে। তার নামে শিবচর, ডেমরা ও মুন্সিগঞ্জ থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও খুনসহ ৭টি মামলা রয়েছে।
Read More ... »

কুয়েত শিবচর প্রবাসী সমবায় সমিতির আত্মপ্রকাশ ও ইফতার-দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

শেখ এহছানুল হক খোকন (কুয়েত থেকে)॥ গত ২৭ আগস্ট কুয়েত সিটির গুলশান হোটেলে শিবচর প্রবাসী সমবায় সমিতির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়। সমিতির সভাপতি মোঃ সোহবার হোসেন খলিফার সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন- আতাউল গণি মামুন, অন্যতম সংগঠক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী; বিশেষ অতিথি শেখ আকরামুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু পরিষদ; নেকমোহাম্মদ, সমিতির উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সম্মিলিত মিডিয়া গ্রুপ কুয়েত; আকবর হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী; অলিউল্লাহ্ খালাসী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী; মোঃ ইয়াকুব, বুর‌্যো চীপ আজকের সূর্যোদয়; বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট আলী আজম; প্রকৌশলী কাজী মঞ্জুরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কুয়েত; মনির হোসেন মন্টু, সভাপতি ঋতুরঙা শিল্পী গোষ্ঠী; মইন উদ্দিন মইন, সভাপতি সবুজ বাংলা সাংস্কৃতিক জোট; আব্দুল লতিফ, বিএনপি নেতা; আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিন, সভাপতি জাতীয় পার্টি; ইসমাইল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাতীয়পার্টি; আল-আমিন চৌধুরী স্বপন, বিএনপি নেতা; সাংবাদিক শেখ এহছানুল হক খোকন; ইমতিয়াজ, প্রতিনিধি আজকের সূর্যোদয়; কবি জাহাঙ্গীর হোসেন বাবলু সহ সামাজিক, রাজনৈতিক ও দুর দুরান্ত থেকে আগত দুই শতাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শিবচর প্রবাসী সমবায় সমিতির সহ সভাপতি ফোরহাদ আলী খলিফা, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল ইসলাম (বাচ্চু) ও সদস্যদের মধ্যে মোঃ সাইফুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, মাসুদ মাতবর, সহিদ উল্লাহ খালাসী, এম.এ মান্নান মিয়া, উজ্জ্বল হোসেন, ফারুল মোড়ল, হাফেজ খলিফা, মোক্তার হোসেন, শরিয়ত উল্লাহ খালাসী, রফিকুল ইসলাম, মাসুদ হাওলাদার, সরোয়ার হোসেন, মোঃ মাদুস আলী, মুছলেম তালুকদার, নওসের আলী, মাসুদ খান, আব্দুর রাজ্জাক ফকির, আঃ বারেক মিয়া, মিজানুর রহমান, সুরুজ মিয়া তালুকদার, মহতাব খান, ওমর ফারুক, মজিবর সিকদার, রাখিতুল্লাহ ভূইয়া, আক্কাছ বেপারী, মোঃ রাফি সহ কর্মকর্তা ও সকল সদস্যের উপস্থিতি ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ আলোচনা প্রবাসের মাটিতে উৎসাহ ও প্রেরণার সঞ্চার করে। মাওলানা ইসমাইল হোসেনের দোয়া মাহফিলে শিবচর প্রবাসী সমবায় সমিতি সহ সকল প্রবাসী মুসলামানদের জন্য দোয়া করেন। ইফতারের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।


Read More ... »

৫০ বোতল বাংলা মদ উদ্ধার : স্বামী-স্ত্রীসহ আটক তিন

বুধবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১২ টায় শিবচর থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৌরসভার জেলখানা রোড থেকে ৫০ বোতল বাংলা মদসহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। জানা যায়, কাওড়াকান্দি ফেরিঘাট এলাকা থেকে একটি ভ্যানযোগে কাদির মাদবর (২৮), ইকবাল মাদবর (৩২) ও তার স্ত্রী রুবিনা (৩০) জেলখানা রোড দিয়ে তাদের নিজ বাড়ি বহেরাতলা ইউনিয়নের দাইকান্দি যাবার পথে শিবচর থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের কাছে থাকা ২টি ব্যাগে তল্লাসি চালিলে ৫০ বোতল বাংলা মদ উদ্ধারসহ তাদেরকে আটক করে। আটককৃত কাদির মাদবর ও ইকবাল মাদবর বহেরাতলা ইউনিয়নের দাইকান্দি গ্রামের চান মিয়া মাদবর ও করিম মাদবরের ছেলে। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

আখক্ষেত থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় গুলি ও অস্ত্র উদ্ধার

মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বেলা ১১ টায় উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের চরচান্দ্রা এলাকার একটি আখক্ষেত থেকে র‌্যাব ৩ রাউন্ড গুলি ও ১টি পাইপগান উদ্ধার করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৮ মাদারীপুরের ডিএডি শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের চরচান্দ্রা গ্রামের কাসেম মুন্সীর একটি আখেক্ষেতের ভেতর থেকে পলিথিনে মোড়ানো ৩ রাউন্ড গুলি ও ১টি দেশীয় তৈরি পাইপগান উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ডাকাত আটক

সোমবার (২৪ আগস্ট) মধ্যরাতে উপজেলার পাঁচ্চর কৃষি ব্যাংকের জানালার গ্রিল কেটে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ব্যবসায়ীরা ধাওয়া করে ফয়জল ফরাজী (২৫) নামে এক ডাকাতকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
জানা যায়, ৫/৬ জনের ডাকাতদল সোমবার মধ্যরাতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, পাঁচ্চর শাখার জানালার গ্রিল কেটে ব্যাংকে প্রবেশের সময় নৈশপ্রহরী হোসেন হাওলাদার ডাকাতদের উপস্থিতি টের পেয়ে শোরগোল শুরু করে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নৈশপ্রহরীর চিৎকার শুনে ডাকাতদের ধাওয়া করে ফয়জল ফরাজী নামে একজনকে আটক করে পরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। আটককৃত ডাকাত ফয়জল পাঁচ্চর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের লাল মিয়া ফরাজীর ছেলে। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

মোটরসাইকেল চাপায় জেলে নিহত

শনিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৮ টায় শিবচর-পাঁচ্চর সড়কের নলগোড়া এলাকায় মোটর সাইকেল চাপায় জেলে সাধু মালো (৫২) নিহত হয়েছে। শিবচর থেকে একটি মটর সাইকেল কাওড়াকান্দি ফেরিঘাটে যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাধু মালোকে রাস্তার উপর চাপা দেয়। মুহুর্তে সাধু মালো রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে। এলাকাবাসী তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথম শিবচর হাসপাতাল পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। ঘটনার পর মটর সাইকেল আরোহী গাড়িসহ পলাতক রয়েছে। নিহত সাধু মালো শিবচর পৌরসভার নলগোড়া এলাকার রামকৃষ্ণ মালোর ছেলে।
Read More ... »

শ্বশুর-শাশুড়ির হাত-পা বেধে গৃহবধুকে অপহরণ

আজ (২২ আগস্ট) রাত ১টায় শিবচর উপজেলার চর জানাজাত সামাদ চৌধুরীকান্দি গ্রামে শ্বশুর-শাশুরির হাত-পায়ে রশি বেধে পুত্রবধুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ঘরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও সাংসারিক অন্যান্য মালামাল দুর্বৃত্তরা লুট করে নিয়ে যায়।
জানা যায়, ১০/১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত ঘরের কপাট ভেঙ্গে শফর উদ্দিন উকিল (৬০) ও তার স্ত্রী রাশিদা (৪৫) কে হাত-পা রশি দিয়ে বেধে পুত্রবধু আকলিমা (২২) কে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় ঘরে থাকা ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৫০ হাজার টাকা, ২টি মোবাইল সেটসহ সাংসারিক অন্যান্য মালামাল লুট করে দুর্বৃত্তরা চলে যায়। উক্ত ঘটনার সময় অপহৃত আকলিমার স্বামী জয়নাল উকিল ঢাকায় ছিল। শফর উকিল ও তার স্ত্রীর আর্ত্ম চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে তাদের হাত-পায়ের রশি খুলে উদ্ধার করে। পুলিশ চর জানাজাতের বিভিন্ন স্থানে তল্লাসি চালিয়ে এখন পর্যন্ত অপহৃত আকলিমার হদিস পায়নি। শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল জানান, উক্ত ঘটনাটি প্রেমঘটিত ব্যাপার হতে পারে। মেয়েটির হদিস পাওয়া গেলে ঘটনার সত্যতা বেড়িয়ে আসবে।
Read More ... »

বিয়ে বাড়ির আনন্দ শোকাবহ বিষাদে পরিণত ॥ আড়িয়াল খাঁ নদে বর-কনের ট্রলার ডুবি : নিখোঁজ ৮

বুধবার (১৯ আগস্ট) রাত ৯টায় শিবচর উপজেলা দত্তপাড়া খাড়াকান্দি গ্রামে বর মওলা মাদবরের বাড়িতে বিয়ের আনন্দ এক বেদনা-বিধুর শোকাবহ বিষাদে পরিণত হয়েছে। সন্ন্যাসীরচর পুরাতন ফেরিঘাট এলাকার বর ও কনে বহনকারী ৫৩ জন যাত্রীসহ ট্রলারটি আড়িয়াল খাঁ নদে নিমজ্জিত হলে ৫৩ জন যাত্রীর মধ্যে ৪৫ জন সাঁতার কেটে পাড়ে উঠতে পারলেও এরমধ্যে ৮ জন নিখোঁজ রয়েছে।
জানা যায়, গত বুধবার বিকেলে দত্তপাড়া খাড়াকান্দি এলাকার রহমান মাদবরের ছেলে বর মওলা মাদবর চর মানাইর এলাকার মান্নান ফকিরের মেয়ে রিনা (২২)র সহিত বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ট্রলারযোগে আড়িয়াল খাঁ নদ দিয়ে তার বাড়ি দত্তপাড়ায় রওয়ানা করলে পুরাতন ফেরি ঘাটের কাছে বিপরীত দিক থেকে আসা বালি বোঝাই একটি ট্রলারে ধাক্কা লেগে বর-কনের ট্রলারটি ডুবে যায়। এতে বর ও কনেসহ ৪৫ জন যাত্রী সাঁতার কেটে পাড়ে উঠলেও ৮ জন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজেরা হল- দেলোয়ার শেখের ছেলে কামরান (৭), নুরু মাদবরের মেয়ে বর্ষা (৭) ও বৃষ্টি (৫), মান্নান মাদবরের ছেলে হাসান (৮), টুকু ফরাজীর ছেলে মিজান (৯), বারেক ফরাজী (৮১), হান্নান মাদবরের মেয়ে সোমা (৫) এবং ছামাদ শেখের ছেলে আলমগীর (৩৫), এদের বাড়ি দত্তপাড়া ইউনিয়নের খাড়াকান্দি গ্রামে। বুধবার মধ্যরাত থেকে ৫টি ট্রলার দিয়ে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও নিখোঁজদের সন্ধান এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
Read More ... »

নিউইয়র্ক

মীজান রহমান

দু'সপ্তাহের উপর হয়ে গেল আমি ক্যানাডার বাইরে। শীতের পাখিদের মত উড়ে এসেছি দক্ষিণের ঊষ্ণতায়। নিউইয়র্কে আমার মেয়ে উর্বি, ক্যালিফোর্নিয়ায় বড় ছেলে বাবু। এ-ঊষ্ণতার জুড়ি নেই। প্রথম মাসটি নিউইয়র্কে, পরেরটি ক্যালিফোর্নিয়ায়। এক উপকূল থেকে আরেক উপকূলে। নিজেকে কল্পনা করি এক উড়ুক্কু পারাবতের মত---এক মহাসাগরের বার্তা বয়ে যাচ্ছি আরেক মহাসাগরের কাছে।
বেশ আছি এখানে। সীমাহীন আরাম। রান্নাবান্না নেই, কাপড়ধোয়া নেই, বিছানা করা নেই, ধূলা মোছা নেই, এমনকি দুপুরে যে ফলমূল খাই সেগুলোও উর্বি অফিসে যাবার আগে কেটে রেখে যায় আমার জন্যে---মানা শুনবার মেয়ে নয় সে। এখানে আমার কোনও কাজ নেই। অটোয়াতে কাজ আমাকে খুঁজে বেড়াত সারাক্ষণ, অন্তহীন কাজ। এখানে আমি কাজকে খুঁজি অন্তহীন অবসরের মাঝে। সময় কাটাই বই পড়ে। লেখালেখি করি একটু-আধটু, যৎকিঞ্চিৎ গণিতচর্চাও করতে হয়। সারাদিন একা একা বাসায় থেকে আর আছেই বা কি করার। ওরা দুজনই চাকরিজীবি---উর্বি নিউইয়র্কের পৌর-প্রকৌশলী, জীবন প্রযুক্তিবিশারদ। উদিতা, ওদের একমাত্র সন্তান, গ্রেড এইটের ছাত্রী। তিনজনই কাজ নিয়ে ব্যস্ত, আমিই কেবল কাজশূন্যতার হালকা হাওয়াতে দুলছি। টেলিভিশন আছে চোখের সামনে, দেখিনা। টেলিভিশন আমি প্রায় কখনোই দেখিনা। ছেড়ে রাখি, তাকাইও বা মাঝে মাঝে, কিন্তু দেখিনা। শব্দটা সঙ্গ দেয়, পর্দার আলোটা কল্পনাকে সজাগ রাখে। এখানে আমি তা'ও করি না। দরকার হয়না। এখানে সেই সুক্ষ্ম নৈঃশব্দটি নেই। গ্রীবা তুলে তাকালেই নগরের ব্যস্ত জীবন তীরের মত ছুটে চলে চোখের সামনে। এখানে আমি হেমন্তের পাতাঝড়ার শব্দটিও শুনতে পাইনা, সব চাপা পড়ে যায় গাড়ির চাকার নিচে। বিকেলবেলা যখন হাঁটতে বেরুই রাস্তায়, তখন মনে হয় যেন আমার পায়ের কোন শব্দ নেই, এই যে হঠাৎ হঠাৎ শালিকেরা উদয় হয় ঝোপের আড়াল থেকে, কখনোবা নভেম্বরের বাউল বাতাস ঝটকা বেগে দোলা দিয়ে যায় গাছেদের, তাদেরও কোন শব্দ শোনেনা কেউ। সব শব্দকে পিষে মারছে নগর তার চাকার তলায়।
নিউইয়র্ক বিশাল শহর। 'বিশাল'এর চেয়ে বিশালতর কোনও শব্দ আমার জানা নেই যা দিয়ে বর্ণনা করতে পারি একে। দৈর্ঘ্যে প্রস্থে উচ্চতায়, ধনে জনে সম্পদে----বিশাল। বিপুল। যেদিকে তাকাই সেদিকেই বিস্ময়, বিশ্বজয়ী মানবচিত্ত এখানে স্রষ্টার আসন অধিকার করেছে। চারিদিকে কেবল মানুষেরই জয়জয়কার। দালানগুলো আকাশ দখল করেছে, সুড়ঙ্গগুলো পাতাল দখল করেছে, সেতুগুলো বশ করেছে ক্ষুরধার জলধারাকে। এ-শহরে মানুষ আসে স্বপ্ন নিয়ে----ছোট মানুষ, বড় মানুষ, স্বল্পধী, তীক্ষ্ণধী, ধীহীন শ্রীহীন সর্বরকম মানুষই এখানে আসে রাশি রাশি স্বপ্ন নিয়ে। এ-শহর স্বাপ্নিকের শহর, কল্পনা ও নির্মাণের শহর। সৃষ্টির ফোয়ারা বয় এখানে। দেশবিদেশের স্বাপ্নিক মানুষ এখানে আসে সাফল্যের সোনালি কল্পনা নিয়ে। নিউইর্কের এই যে বিপুল বিস্তার, এ তো সেই স্বপ্নেরই সোনালি ফসল। আবার ভাল করে তাকালে দেখা যাবে এখানেই কত অজস্র ভাঙ্গা স্বপ্নের কঙ্কাল ছড়ানো সর্বত্র। ভাগ্যলক্ষ্মী কারো জন্যে রচনা করেছে সাফল্যের স্বর্ণদ্বার, কারোবা ব্যর্থতার সীমাহীন অন্ধকার। পৃথিবীর যত সুখ এখানে, যত দুঃখ এখানে। এ-শহরে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠদের বাস, পৃথিবীর যারা হীনতম তাদেরও। বৃহত্তম আর ক্ষুদ্রতম দুয়েরই সহাবস্থান এ-শহরে। পৃথিবীর পরম সুন্দর এখানে, চরম কুৎসিৎও এখানেই। পরম বিস্ময় আর চরম বিস্মরণীয়ও এখানেই। চরম নিষ্ঠুরতার দৃশ্য যেমন দেখা যাবে সর্বত্র তেমনি দেখা যাবে পরম করুনারসের অবারিত প্রবাহ। নিউইয়র্ককে দেখতে চাইলে 'মেড ইন চায়না' যন্ত্র নিয়ে আসবেন না, আসবেন ভেতরের চোখদুটি নিয়ে । এ-শহরের রহস্য বুঝতে হলে আপনার নিজেরও খানিক রহস্য থাকা প্রয়োজন।


এই রহস্যভরা বিশাল শহরেই সুখের সংসার আমার তিনটি প্রিয় মানুষের----উর্বি-জীবন-উদিতা। ছোট্ট বাসা তাদের, নগরকেন্দ্র থেকে নিরাপদ দূরত্বে, স্ট্যাটেন আইল্যাণ্ড নামক এক তরুছায়াচ্ছন্ন নীলাভ দ্বীপের ওপর, যেখানে রাতের বেলা কান পেতে থাকলে আটলান্টিকের গাঢ় নিঃশ্বাস শোনা যায়। ওদের জীবন প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের এক সুবর্ণ মোহনা। সপ্তাহের প্রতিটি কাজের দিন তারা বাস করে ইংরেজিভাষী জগতে----এক শব্দ বাংলা বলার উপায় নেই। উদিতার স্কুলেও তাই। বিকেলে বাড়ি ফেরার পর ওরা বাংলাদেশে চলে যায়----বাংলা ছাড়া অন্য কোন ভাষায় তারা কথা বলেনা নিজেদের মধ্যে। শনি-রোববারও তাই। এই একটি পরিবার উত্তর আমেরিকায় (বিরল হলেও নিশ্চয়ই আরো অনেক পরিবার আছে এরকম) যাদের কাজের জীবন এক জগতে, ঘরের জীবন আরেক জগতে। এবং দুই জীবনেই তারা সমান সুখি ও স্বচ্ছন্দ্। তাদের বাংলা যেমন ত্রুটিহীন, ইংরেজিও নিখুঁত। এদিকে সাংস্কৃতিক জীবনও কানায় কানায় পূর্ণ। জীবনের পেশা যদিবা প্রযুক্তি, প্রাণ তার গানের সুরেতে আঁট করে বাঁধা। কৈশোর থেকেই সে সুরের পাগল। গান লেখে, সুর দেয়, নিজে গায়ও----বাংলার পরমধন্য পঞ্চকবির সনাতন ধারায়। কর্মজীবনে অবসর তার বিরল, তবুও যেটুকু বিরতি কর্ম আহার আর নিদ্রার ফাঁকে, তার সবটুকুই সে সঁপে দেয় সুরদেবতার পাদমূলে। কখনো গান, কখনো বাঁশি, কখনো গীটার, কখনোবা কীবোর্ড। দেশে থাকলে এতদিনে শীর্ষতারকার স্থান দখল করে নিত নিঃসন্দেহে।
ওদিকে উর্বিও ছাড় দেবার পাত্রী নয়। ওর নেশা হল অভিনয়। নিউইয়র্ক শহরের বাঙ্গালি পাড়ায় এমন কোনও নাট্যগোষ্ঠী নেই যারা উর্বির খবর জানেনা এবং তাদের কোনও অনুষ্ঠানাদিতে ওর অংশগ্রহণ কামনা করেনা। এত যে তার ব্যস্ততা ( সকাল চারটেয় ঘুম থেকে উঠে পাঁচটার মধ্যে অফিসে পৌঁছানো , যাতে আড়াইটায় মেয়েকে স্কুল থেকে তুলে বাড়ি ফিরতে পারে), তবুও নাটকের শঙ্খধ্বনি শোনামাত্র তার মন ময়ূরের মত নেচে ওঠে। নাওয়া খাওয়া ছাড়তে হলেও সে পাগলের মত ছুটে যায় যেখানে যাওয়া দরকার। 
হয়ত ভাবছেন, এতকিছু করার সময় পায় কি করে তারা। তাহলে বলি এতকিছু করার পর তারা কি করে। প্রতি রোববার সকাল সোয়া দশটায় গাড়িবোঝাই রসদপত্র ( হারমোনিয়াম, খাতাপত্র, পানির বোতল, কোকের বোতল অনেকগুলো, মোয়াসিঙ্গারা জাতীয় কিছু খাদ্যসামগ্রি) নিয়ে ত্রিশ মাইল দূরের বাঙ্গালিপাড়া, অর্থাত্‌ কুইন্সের জ্যাক্সন হাইটসের দিকে রওয়ানা হয়। পৌনে বারোটা নাগাদ তারা ৭৩তম স্ট্রীট আর ৩৪তম এভিনিউর মোড়ে অবস্থিত সরকারি স্কুলটির ধারে এসে পার্ক করে। স্কুলের দরজা খোলা হয় ১২টার দুচার মিনিট আগে। আস্তে আস্তে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আসতে শুরু করে তাদের বাবা-মায়েদের হাত ধরে। শুরু হয় 'উদীচী স্কুলের' বাংলাশিক্ষার সাপ্তাহিক পরিক্রমা। কেবল বাংলা ভাষাই নয়, সংস্কৃতিও। গান, নৃত্য, অঙ্কন, নাটক----সবই কিছু কিছু শেখানো হয় সেখানে। প্রথম পর্বে ছাত্র-শিক্ষক সবাই জড় হয় বড় হলঘরটিতে (শিক্ষকদের বেশির ভাগই কার্যত অবৈতনিক, ছাত্রদের কাছ থেকে নামমাত্র যেটুকু মাসোহারা পাওয়া যায় তাতে শিক্ষকদের বেতন দেওয়া দূরে থাক, প্রয়োজনীয় খরচপত্রগুলোও মেটানো শক্ত )। অধ্যক্ষ জীবন বিশ্বাসের পরিচালনায় জাতীয় সঙ্গীত গায় সবাই----এটা বাধ্যতামূলক। তারপর একটি দুটি গানের মহড়া, দেশাত্মমূলক বেশির ভাগই। সাড়ে বারোটার দিকে ছেলেমেয়েরা যে যার ক্লাসে চলে যায়। সন্ধ্যা ছটায় স্কুলগৃহ খালি করে দিতে হয়----ভাড়া করা স্কুলের সবকিছুই চুক্তিমাফিক বরাদ্দকৃত। ছুটির পর একে একে বাড়ি চলে যায় সবাই----সবার শেষে যায় উর্বি-জীবন-উদিতা, ক্লান্ত তৃপ্ত অবসন্ন দেহে। পরের দিন সাত সকালে তো আবার একই নিয়মের পুনরাবৃত্তি। গত আট বছর ধরে ওরা চালাচ্ছে স্কুলটি। আট বছর ধরে তাদের জীবন এই স্কুলটির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। পশ্চিম বিশ্বের অধিকাংশ মানুষই সপ্তাহে পুরো দুটো দিন ছুটি পায়----শনি আর রবিবার। ইচ্ছে করলে শুক্রবার বিকেলেই তারা বাক্সপত্র নিয়ে গাড়ি হাঁকিয়ে যেকোন যায়গায় চলে যেতে পারে দুদিনের ছুটিতে, যা জীবন-উর্বির জীবনে সম্ভব নয়। এতে কি তাদের আক্ষেপ আছে কোনও? মোটেও না। এ'ই তাদের ছুটি। এ কাজ তাদের প্রাণের তাগিদে করা। তারা শুধু নয়,উদীচীর সঙ্গে জড়িত প্রতিটি বাঙ্গালিই----শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, সকলেই। উদিতার এখন টিনেজ বয়স, কিন্তু উত্তর আমেরিকার অন্যান্য টিনেজদের মত সে নয়। সে শুধু বাংলা বলেই না, বাংলা গান করে, নাচে, অভিনয় করে, আবৃত্তি করে।
উত্তর আমেরিকার কোনও বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানই বেশিদিন টেকে না----প্রধানত ব্যক্তিগত রেষারেষি ও দলীয় কোন্দলের জন্যে। আমার জানামতে নিউইয়র্কের উদীচী স্কুলটি তার ব্যতিক্রম। তার প্রধান কারণ জীবনের দক্ষ, বিচক্ষণ পরিচালনা। উর্বি-জীবন, এ-মানুষদুটির মত সংস্কারমুক্ত বাঙ্গালি আমি খুব কমই দেখেছি। কে হিন্দু কে মুসলমান আর কে বৌদ্ধ-খৃস্টান এ নিয়ে তাদের বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। ধর্মবৈষম্যের ঘৃণ্য বিষয়টাই অত্যন্ত ন্যক্কারজনক তাদের রুচিতে। আমার মতে এটিই উদীচীর দীর্ঘায়ুতা ও জনপ্রিয়তার মূল কারণ। এর ফলে এখানে বাংলাশিক্ষার নামে ধর্মীয় শিক্ষাদানের কোন গুপ্ত প্রচেষ্টা থাকে না, যা আমি দেখেছি কোন কোন জায়গায়। এবং এর কারণেই হয়ত এই একটি বাংলা স্কুল যেখানে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ দু'জায়গার অভিভাবকরাই ভরসা পান ছেলেমেয়েদের নিয়ে আসতে।
ব্যক্তিগতভাবে আমি যখনই বেড়াতে আসি ওদের বাড়িতে তখনই, রোববার এলেই, অতি আগ্রহের সংগে চলে যাই উদীচী স্কুলে। ওরা স্কুল চালায়, আমি বারান্দায় বসে বই পড়ি। আজকাল উত্তর আমেরিকার প্রায় কোথাও পুরোপুরি বাঙালি পরিবেশ আমি পাই না, মনটা উপোস করে থাকে। সে অভাবটি খানিক পূরণ হয় উদীচীতে এলে। ছোট একটা আশার আলো জ্বলে ওঠে মনে।
এবার এমন হল যে প্রথম রোববারটি সারাদিন স্কুলে না থেকে সময় কাটালাম পুরনো বন্ধু শহীদ কাদরির বাসায়। ওর স্ত্রী নীরা, আমাকে মীজানভাই বলে ডাকে, দু'হাজার দুই থেকে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ পরিচয় আমাদের প্রধানত আমার লেখালেখির বরাতে। দু'হাজার তিনে ওদের বিয়ে হয়। আমাদের পুরনো বন্ধুত্বে একটা নতুন মাত্রা যোগ হয় এতে করে।


আধুনিক বাংলা কবিতায় শহীদ কাদরির কি স্থান সেসম্বন্ধে বহু গুণিজনের বহু জ্ঞানসমৃদ্ধ আলোচনা-সমালোচনা লিপিবদ্ধ হয়েছে গত তিন দশকে। তাতে নতুন কিছু যোজন করার যোগ্যতা বা ক্ষমতা আমার নেই। শহীদ আমার যৌবনের বন্ধু, অত্যন্ত প্রিয় বন্ধু, ওটুকুই যথেষ্ঠ আমার জন্যে। আমার ছোটবেলার বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই বিপুল সাফল্য অর্জন করেছে পরবর্তী জীবনে। তাঁরা প্রসিদ্ধি চেয়েছিল, পেয়েছেও। খ্যাতির মোহ একেবারে নেই এমন দাবি নিখাদ সততার সঙ্গে করতে পারবে এহেন সাধুব্যক্তির সাক্ষাত আমার ভাগ্যে আজো ঘটেনি। তবে খ্যাতির কামনায় কাতর হওয়া, সে চরিত্র শহীদের নয়।
কিঞ্চিত লেখাপড়াজানা লোকেদের মধ্যে খানিক কৃত্রিমতা এবং লোকদেখানোর দুর্বলতা অনেকেরই। তারা হলেন, আমার বিচারে, মধ্যবিধ (mediocre), আমি নিজেকেও সে কাতারে ফেলি। তারা পানিতে ডুব দিয়ে দুটি বুদবুদ তোলেন, তারপর তাদের কোনও চিহ্ন থাকে না। খ্যাতির লালসাটি সচরাচর তাদের মধ্যেই দেখা যায় সবচেয়ে প্রকটভাবে। শহীদ এসবের অনেক উর্ধে। খ্যাতিকাতরতা একটি রুচিহীন অশ্লীলতা ওর কাছে। সত্যিকার ঋদ্ধ ও সিদ্ধ মানুষ যাঁরা তাদের কাছে 'সাফল্যে'র কোনও পারমার্থিক গুরত্ব নেই। শহীদের চরিত্রে একরকম বিদগ্ধ বৈরাগ্য আছে যা তাকে বিষয়ের প্রতি বিমুখ করে, স্থূল সাফল্যের প্রতি বিরূপ করে, এমনকি কোনও বিশেষ লক্ষ্যের প্রতিও করে উদাসীন। সে একজন সত্যিকার নির্মোহ পুরুষ।
আমি দেশ ছেড়েছি '৬২ সালে। বলতে গেলে প্রায় তখন থেকেই আধুনিক বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে আমার যোগাযোগ পুরোপুরিই ছিন্ন হয়ে গেছে। বিশেষ করে বাংলা কবিতার সঙ্গে। ছোটবেলায় কবিতা পড়তাম, আর দশটা বাঙালি ছাত্রের মতই। গভীরভাবে বুঝতাম তা নয়, তবুও ভাগ্যক্রমে দু'চারজন কবিসাহিত্যিকের সঙ্গে একটা হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, সম্ভবত কাছাকাছি পাড়ায় থাকার জন্যে। তাদের অনেকেই এখন দেশের বরেণ্য পুরুষ। তার মধ্যে শহীদ একজন। ওর কবিতা অবশ্যই আমি বুঝি না, কিন্তু ওর বক্তব্যটুকু হয়ত আন্দাজ করতে পারি কিছুটা। ও একটি অতলান্ত সমুদ্র সেটুকু বুঝি। কখনো দীঘির জলের মত শান্ত---তখন তাঁকে সাধারণ ছাপোষা মানুষদের মতই নিরীহ মনে হয়। আবার যখন এলোপাথাড়ি ঢেউ এসে ওকে উত্যক্ত করতে শুরু করে, তখন সে ক্রুদ্ধ গর্জনে ভীমাকার মূর্তি ধারণ করে----সেসময় তার সঙ্গে কোনরকম তর্কযুদ্ধে লিপ্ত হওয়া মানে নির্ঘাত্‌ আত্মবিনাশের পথে ধাবিত হওয়া। ভয়ভীতি বলে কিছু নেই ওর। 
শহীদ কাদরি যেমন মানুষ হিসেবে অন্য কারো মত নয়, কাব্যজীবনেও সে অন্য কবিদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আশির দশকের গোড়াতে সে যখন কাব্যসৃষ্টির সর্বোচ্চ শিখরে ঠিক তখনই কি এক রহস্যময় কারণে সে যেন সিদ্ধান্ত নেয়ঃ আর নয়, ঢের হয়েছে লেখা। গৌতম বুদ্ধের মত মুকুট ফেলে বনের আশ্রয় নেওয়া যেন। আমাদের গণিতশাস্ত্রে আলেকজাণ্ডার গ্রথেনডাইক বলে এক অর্ধ-উন্মাদ জিনিয়াস আছেন যে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ গণিতজ্ঞ হিসেবে প্রায় সর্বসম্মত স্বীকৃতিলাভ করবার অনতিকাল পর ৪২ বছর বয়সে স্পেনের পিরেনিজ পর্বতের এক জঙ্গলাকীর্ণ গুপ্তস্থানে গিয়ে সেই যে আত্মগোপন করে রইলেন, তারপর চল্লিশ বছরের উপর পার হয়ে গেল, আজ পর্যন্ত তাঁর খোঁজ পায়নি কেউ। শহীদ কোনও পর্বতকন্দরে লুকোতে যায়নি গ্রথেনডাইকের মত, তবে বাংলা কবিতায় সে'ও অনেকটা নিখোঁজ সম্রাটেরই মত। ওর পিরেনিজ ছিল প্রথমে বিলেত, তারপর যুক্তরাষ্ট্র। উভয় জায়গাতে সে নিজের শরীরের ওপর অকথ্য অত্যাচার করেছিল-----কাগজের বিছানায় মোটা বইএর বালিশে মাথা রেখে ঘুমনো থেকে শুরু করে অর্ধাহার অনাহার---সবকিছুর সঙ্গেই বেশ ঘনিষ্ঠ পরিচয় হয়েছে তার। তিন সালে তার তৃতীয় স্ত্রী নীরা যেন আমেরিকার কোস্টগার্ডদের মতই তাকে ঝড়ের সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে ওর নিউইয়র্কের বাসাতে। কিন্তু এদ্দিনে তার শরীর অনেকটাই ক্ষয় হয়ে গেছে। প্রধানত কিডনি, তারপর আরো অনেককিছু। মানুষের মন যতই উর্ধাচারী হোক দেহ তাকে কখনই ভুলতে দেবেনা যে তার পাখাদুটি শক্ত সূতো দিয়ে বাঁধা মাটির সঙ্গে----একদিন না একদিন সেখানেই ফিরতে হবে তাকে।


নিজের আগুনে নিজেই দগ্ধ হবার কাহিনী খুব বিরল নয় ইতিহাসে----সম্ভবত আমাদের প্রিয় কবি শহীদ কাদরিও তেমনি এক উদাহরণ। ওকে বেশ কাছে থেকে দেখবার সৌভাগ্য হয়েছে আমার----সে অভিজ্ঞতা একদিকে যেমন দারুণ আনন্দের, আরেকদিকে প্রচণ্ড কষ্টের। কত বিশাল সম্ভাবনা ছিল মানুষটির----এদ্দিনে হয়ত কিংবদন্তীর পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারত কাব্যজগতে, কিন্তু এখন তার স্থান শুধু কবিতাপ্রেমিকদের অন্তরে আর সাহিত্যালোচকদের জ্ঞানগর্ভ অভিসন্দর্ভে। ওর মত প্যাশন (এর ভাল বাংলা আমার জানা নেই, কারো জানা থাকলে দয়া করে আমাকে বলবেন। প্রাণাগ্নির কাছাকাছি একটা শব্দ কিন্তু ঠিক প্রাণাগ্নি বোধ হয় নয়) আমি অন্য কারো মধ্যে দেখিনি। প্যাশন তার জীবনের জন্যে, জীবনের যত সুখ যত আনন্দ বিরহ বিস্ময়, যত রূপ রস গন্ধ, যত প্রেম যত মুক্তি বন্ধন, যত জ্ঞান যত বিজ্ঞান, মানুষের কল্পনা আর মেধা দিয়ে গড়া যত কীর্তি, সবকিছুর জন্যেই তার সীমাহীন প্যাশন। তার প্যাশন প্যাশনেরই জন্যে। বাংলা কবিতার এক অত্যুজ্জ্বল নক্ষত্র হয়েও সকল যুগের সকল জ্ঞানের প্রতি তার অনুরাগ, তার কৌতূহল আমাকে বিস্মিত করেছে। আমি গণিতের একটি ক্ষুদ্র অংশ ছাড়া আর কিছু বুঝিনা সংসারে। এই ক্ষুদ্র অংশটির প্রতিও তার আগ্রহের অন্ত নেই। সে যেন এক সর্বভুক ডাইনাসোর যার সবকিছু গ্রাস করা চাই, সবকিছু আহরণ করা চাই। অগস্ত্য মুণির মত সম্ভব হলে সে জ্ঞানবিজ্ঞানের পুরো সমুদ্রটাই শোষণ করে নিত। 
তবুও কেন তার এই সীমিত সাফল্য?
আমার নিজের মতটাই বলি তাহলে। আমার মতে তার সবই ছিল,একটি মৌলিক বস্তু ব্যতিরেকে। তার নাম স্বপ্ন। শহীদ কাদরির কি বিশেষ স্বপ্ন ছিল? মানে তার নিজস্ব, ব্যক্তিগত স্বপ্ন? কোনও উচ্চাকাঙ্ক্ষা? সঠিক জানিনা, তবে আমার যেন মনে হয়, না। সাফল্য বলতে আমরা সাধারণ অর্থে যা বুঝি----নামযশ প্রভাব প্রতিপত্তি পদক পদবী, ইত্যাদি। এসবের জন্যে মেধা ও শ্রমের বাইরে আরো দুটি মৌলিক জিনিসের প্রয়োজন-----স্বপ্ন ও প্যাশন। স্থায়ী কীর্তি রেখে চাইলে এমন এক বিশাল স্বপ্ন থাকতে হয় যার প্রভাবে যুগ যুগ ধরে আরো বহু প্রজন্মের ভেতর সেই একই স্বপ্নের বীজ অঙ্কুরিত হয়, সঞ্চারিত হয়। সেই স্বপ্ন ও সেই অগ্নি ছিল আইনস্টাইন আর রবীন্দ্রনাথের, ছিল পিকাসো আর সেক্সপিয়ারের। তাই তাঁরা ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। সেই উপাদানটি সম্ভবত নেই আমার বন্ধুটির। সেই আকাঙ্ক্ষাটিও নেই তাঁর। এই একটি বিবাগী মানুষ যাকে কোনও বিশেষণ দিয়ে আটকানো যায়না , কোনও ছক ছাপে বাঁধা যায়না। সে একান্তভাবেই শহীদ কাদরি, এক এবং অভিন্ন।
এবার ওর সঙ্গে আলাপ হল মৃত্যু আর বিশ্বাস নিয়ে। মৃত্যু কিভাবে সাধারণ মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রিত করে সেটা সবারই জানা----পৃথিবীর যাবতীয় প্রতিষ্ঠিত ধর্মই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। মজার ব্যাপার হল, মৃত্যু অনেক অসাধারণ মানুষের জীবনকেও দারুণভাবে প্রভাবিত করে কখনও কখনও। ভল্টেয়ার সারাজীবন ঈশ্বরবিশ্বাসীদের নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করেছেন, অথচ মৃত্যুর আগে তিনি পাদ্রী ডাকিয়ে প্রার্থনা করিয়েছিলেন, যথাযথ খৃষ্টান পদ্ধতিতে দেহসৎকার কামনা করেছিলেন। সারাজীবন অবিশ্বাসী বলে খ্যাত আমাদের প্রিয় কবি শামসুর রাহমানও শুনেছি মৃত্যুকালে প্রথাগত তৌবা পাঠ করেছিলেন। অপরদিকে বার্টাণ্ড রাসেল শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁর অবিশ্বাসের আদর্শে অটল ছিলেন, যেমন ছিলেন বাংলাদেশের বিখ্যাত বুদ্ধিজীবি আহমদ শরীফ ও ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা ওয়াহিদুল হক। ধর্মবিশ্বাসীরা দারুণ দম্ভের সঙ্গে প্রচার করে বেড়ান যে আইন্সটাইনের মত বিশাল বিজ্ঞানীও ছিলেন তাঁদের দলে। আইনস্টাইন ছিলেন কি ছিলেন না তার কোনও অখণ্ডনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই, এবং থাকলেও তাতে প্রমাণ হয় না যে ঈশ্বর সত্যি সত্যি আছেন বা নেই। তবে মৃত্যু যে অমর মানুষদের সঙ্গেও বিচিত্রভাবে খেলা করতে পারে তার উদাহরণ ভুরি ভুরি। মৃত্যু যখন আসন্ন হয়ে পড়ে তখন মানুষের বুদ্ধি ও মননের জগতটিকে দখল করে নেয় প্রকৃতি। চেতনা কুয়াশাচ্ছন্ন হয়, বিচারবুদ্ধি হয় দারুণভাবে ব্যাহত। তখনকার বিশ্বাস অবিশ্বাস কোনক্রমেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
সৌভাগ্যবশত শহীদ বা আমি কারো অনুভবের মধ্যে আসন্ন অবসানের সম্ভাবনা প্রবেশ করেনি আজো। তবে মৃত্যু ওর ঘরের দোরকোঠাতে এসে দাঁড়িয়েছিল, একবার নয়, দুবার। দ্বিতীয়বারের ঘটনাটির একটা রোমহর্ষক বর্ণনা শুনলাম ওর মুখ থেকে এবার। হাসপাতালের বিছানা শুয়ে যন্ত্রণায় কাতর। পেটের অসুখ দারুণ আকার ধারণ করেছে। বাথরুমে যেতে হচ্ছে বারবার, বারবার। মলদ্বার দিয়ে নির্গত হচ্ছে অনর্গল স্রোত। সে মলের রঙ সাধারণ পায়খানার মত নয়----গাড়ির ইঞ্জিনে যে তেল ব্যবহার করতে হয় ঠিক যেন সেই রঙ, শহীদের নিজেরই বর্ণনা অনুযায়ী। ডাক্তাররা বিবিধ ওষুধপত্র দিয়ে সেই অবিরাম মলস্রাব রোধ করার আপ্রাণ চেষ্টা করে ব্যর্থ হবার পর তাকে পাঠিয়ে দিলেন নিউইয়র্কেরই আরেক হাসপাতালে যেখানে এক নামকরা বিশেষজ্ঞ কাজ করতেন। দুঃখের বিষয় যে ডাক্তারটির এতই নামডাক সারা মহাদেশব্যাপী যে তিনি প্রায়ই দেশের বাইরে চলে যেতেন জরুরি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনে। সেবার তাঁর ডাক পড়েছিল ক্যানাডার কোন এক হাসপাতালে। শহীদ যখন মুমূর্ষু অবস্থায় জরুরি অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় তখন তিনি ক্যানাডার সীমান্তে পৌঁছুবার উপক্রম। নিউইয়র্ক থেকে চূড়ান্ত জরুরি বার্তা এল তাঁর সেলফোনে যে তাঁর গাড়ি ঘোরাতে হবে, নইলে একটি রোগীর মৃত্যু অনিবার্য। আসলে সেই যে কালো রাবের মত দেখতে পায়খানা ওটা ছিল রক্ত। পেটের পর্দা ছিঁড়ে মল বেরিয়ে শেষমেষ যা বেরুচ্ছিল সেটা ছিল নিখাদ রক্ত, তাজা রক্ত। পুরো চব্বিশ ঘন্টা ধরে একাধারে রক্তস্রাব হচ্ছিল ওর। সেটা প্রথম হাসপাতালের ডাক্তাররা বুঝতে পারেননি। এখন রোগী রক্তশূন্যতায় মরণোন্মুখ। ক্যানাডামুখি গাড়ি ফিরে এল নিউইয়র্কে। সোজা হাসপাতালে। জীবনমৃত্যুর খেলা। একমুহূর্ত সময় নষ্ট করার উপায় ছিল না।
যাই হোক, অস্ত্রোপচার হল সফলভাবেই। পাকস্থলীর ফুটো মেরামত হয়ে গেল। রক্তক্ষরণ বন্ধ। রোগী ফিরে এল তার শয্যায়। জ্ঞান ফিরে এল আস্তে আস্তে। কিন্তু এই জ্ঞান ফিরে আসা আর না আসার মাঝখানে এক অলীক রাজ্যের অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাঁর। তারই এক অবিশ্বাস্য বর্ণনা শুনলাম ওর মুখ থেকে। এক ভয়াবহ মায়াপুরি যেখানে অশরীরি ছায়াদের বিচরণ। সে এক বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা বটে। এই মায়াপুরিই কি সেই শাস্ত্রবর্ণিত পরলোক যার অস্তিত্বের ওপর আমাদের অনেকেরই সীমাহীন সংশয়? সে প্রশ্ন জীবনের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কারো মনে উদয় হবে না হয়ত, কিন্তু মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে উপনীত একজন ভয়ানকভাবে অসুস্থ মানুষের মনে সেটা জাগতে পারে বই কি। বিশ্বাসী না হলেও পারে।
আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠল শহীদ। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবার পর সেই সার্জেনের সঙ্গে একদিন দেখা করার কথা । পরীক্ষা-টরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে শহীদ বেরিয়ে আসবে তাঁর অফিস থেকে এমন সময় তিনি পেছন থেকে ডেকে উঠলেনঃ "মিস্টার কাদরি, আর ইউ এ বিলিভার?"
এরকম সরাসরি প্রশ্ন আজকাল কেউ করে না সাধারণত। মুহূর্তের জন্যে ও হয়ত কথা খুঁজে পাচ্ছিল না। হ্যাঁ না কিছু বলার আগেই ভদ্রলোক বলে উঠলেনঃ "ইফ ইউ আর নট মেবি ইউ সুড বি, ফর দি ফ্যাক্ট ইউ আর এলাইভ ইজ নাথিং বাট এ মিরাকেল।"
ডাক্তারটি নিজে যে একজন ঈশ্বরবিশ্বাসী মানুষ তাতে কোনও সন্দেহ থাকে না এর পর। তিনি দৈবত্বে বিশ্বাস করেন, তাই তিনি দৈবঘটনা মানেন। কিন্তু যার বিশ্বাসের খুঁটি ভেঙ্গে গেছে জ্ঞান ও বোধের ভিত্তিতে, তাকে যদি কোনদিন ফিরে আসতে হয় মৃত্যুর মুখ থেকে,তাহলে তার মনও কি টলে উঠতে পারে না নতুন করে? সত্যি কি তাই? দৈবসত্তা ছাড়া কি দৈবঘটনা সম্ভব? আসলেই কি সেগুলো দৈবঘটনা? নাকি সম্ভাব্যতার নিম্নতম মাত্রায় পৌঁছানো ঘটনার অবিশ্বাস্য বাস্তবায়ন মাত্র? অবিশ্বাস্যতাই কি অলৌকিকতার মত মনে হয়না জীবন ও মৃত্যুর মধ্যবর্তী স্থানে? ব্যক্তিগতভাবে আমাকে এখনও সে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়নি, কিন্তু শহীদের হয়েছে। এবং সে প্রশ্নের পুরোপুরি মীমাংসা এখনো বোধ হয় হয়নি। বিশ্বাসের পেছনে বৈজ্ঞানিক কোনও যুক্তি নেই সেটা সে জানে , কিন্তু যমের থাবা থেকে ফিরে আসা সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার নিরিখে দ্বিতীয় একটা যুক্তি দাঁড়াতে পারে বটে, যার ভিত্তি বিজ্ঞান নয়, দর্শনও নয়, কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্নরকম এক লোকোত্তর জ্ঞান যা শুধু শহীদের মত একটি 'পুনর্জীবিত' মানুষের পক্ষেই লাভ করা সম্ভব। আমি সেজগতের খবর জানিনা।


প্রতি রোববার জীবন-উর্বি-উদিতার সঙ্গে ফিরে আসি স্ট্যাটেন আইল্যাণ্ডের বাসায়। নিজে গাড়ি চালাই না বলে চারদিকে তাকিয়ে দেখতে পারি রাতের নগরকে। রাতের নিউইয়র্ককে একেকসময় একেকরকম মনে হয় আমার। একই রূপসীকে একেক পোশাকে দেখার মত, তার কুহকিনী চোখদুটি একেকভাবে দিশেহারা করে বিমোহিত পথিককে। কখনো মনে হয় কোনও মায়াবী হ্রদের জলে ভাসমান লাখো লাখো তেলের প্রদীপ, কখনোবা সারি সারি সমুদ্রবিহারী জাহাজের বলরুমে মন্দলয়ের নৃত্যলীলায় নিমগ্ন যুগল যুগল প্রেমিকপ্রেমিকা। আসলে নিউইয়র্কের মানুষ জানে দিনের আলো নিভে গেলে কেমন করে জ্বালতে হয় রাতের প্রদীপ। তাদের শহর কেবল ইঁটপাথরের পাষাণ দানব নয়, ললিত প্রাণের প্রমিত ছন্দও স্পন্দিত হয় তার শোনিতপ্রবাহে। দিনের আলোকে এর বিপুলতায় আমরা অভিভূত হই, রাতের আলোকে এর আনন্দধারাতে হই আপ্লুত। নিউইয়র্কের মত শহর পৃথিবীতে নেই, আমার মতে। সাফল্যের চূড়ায় উঠতে চাইলে নিউইয়র্কে যেতে হবে, সেটা বাণিজ্যেই হোক আর শিল্পকলাতেই হোক। নিউইয়র্ক হল সাফল্যের এভারেস্ট। 
স্ট্যাটেন আইল্যাণ্ড থেকে নিউইয়র্কের যে কোনও জায়গায় যেতে সাধারণত লোকে ফেরিতে করে এপার-ওপার হয়, নতুবা গাড়িতে সেতু পার হয়। সেতুটির নাম ভেরাজানো-ন্যারোজ ব্রিজ----সংক্ষেপে ভেরাজানো। বিদঘুটে নামটির একটা ইতিহাস আছে। ন্যারোজ একটি প্রণালীর নাম----সেতুর নিচে বিশাল এক জলাশয় যেখানে হাডসন নদী তার সমস্ত জল উজাড় করে ঢেলে দেয় আটলান্টিকের কাছে নিয়ে যাবার জন্যে। আর ভেরাজানো একটি ব্যক্তির নাম। ইতালি থেকে আগত জিওভানি দ্য ভেরাজানো নামক ষোড়শ শতাব্দীর এক বিশিষ্ট পরিব্রাজকের সম্মানার্থে সেতুটির নামকরণ। একসময় এটিই ছিল বিশ্বের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১.৩ মাইল। যে কোন সামুদ্রিক জাহাজ এর নিচ দিয়ে যাতায়াত করতে পারে, এতটাই উচ্চতা। দূর থেকে মনে হয় পুরো সেতুটাই আকাশ থেকে ঝুলছে-----মাটির সঙ্গে কোনভাবেই সংযুক্ত নয়। বাস্তবের শরীরে গাঁথা এক বিশাল অবাস্তব। এর সত্যিকার সৌন্দর্য ফুটে ওঠে রাতের বেলা। প্রতি রোববার ওদের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে ভেরাজানোকে মনে হয় প্রকাণ্ড এক আলোকিত মোতির মালা অলৌকিক কোনও রূপসীর গলায় ঝুলে আছে । রূপসীটি কল্পনায়, মালাটি চোখের সামনে জ্বলন্ত রূপের শিখা। সে এক অসাধারণ দৃশ্য। চোখ ফেরাতে পারিনা যতক্ষণ না জীবনের গাড়ি ভিন্ন পথে মোড় নিতে শুরু করে।
পৃথিবীর অন্যান্য শহরে সন্ধ্যার পর মনে হয় শহরটি রাতের অন্তর্গত হয়ে গেল। কেবল নিউইয়র্কেই মনে হয় উলটো----এখানে রাত্রি হয় নগরের অন্তর্গত। মানুষের কল্পনার রং দিয়ে গড়া এ এক কল্পরাজ্য।   

স্ট্যাটেন আইল্যাণ্ড,নিউইয়র্ক,
৩০ নভেম্বর, '১০, মুক্তিসন ৩৯
Read More ... »

চার বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা

গতকাল (১৮ আগস্ট) উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নে একই রাতে চার বাড়িতে ডাকাতেরা ডাকাতির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। উৎরাইল চৌধুরী বাড়ির ইকবাল চৌধুরীর ঘরের ৭/৮ জনের ডাকাতদল জানালার গ্রিল কেটে ঘরে ঢোকার সময় গৃহকর্তার ছোট ভাই সালাহউদ্দিন চৌধুরী দেখে ফেললে ডাকাতেরা তাকে কিল ঘুরি মেরে পালিয়ে যায়। ঐ রাতেই একই গ্রামের আরব মৃধার বাড়িতে ডাকাতেরা দরজা ভাঙার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এছাড়াও উত্তর চর তাজপুর গ্রামের আকমত মুন্সী ও প্রবাসী সালাম ঢালীর ঘরের দরজা ভাঙতে গেলে লোকদের চিৎকারে ডাকতদল পালিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
Read More ... »

বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশু নিহত

সোমবার (১৭ আগস্ট)সকাল ৯ টায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের হাজী শরিয়াতুল্লাহ সেতুর পশ্চিম পাড়ে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে পপি আক্তার (৯) ঘটনাস্থলে মারা গেছে। কাওড়াকান্দি থেকে একটি লোকাল বাস ভাঙ্গা যাওয়ার পথে পপি রাস্তা পারাপরের সময় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায়। গাড়িসহ চালক পলাতক। নিহত পপি দত্তপাড়া বাবলাতলা গ্রামের আবু কালামের মেয়ে।
Read More ... »

জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা পায়খানার ছাদে : জাতীয় শোক দিবস পালনে শিবচরের এক কলেজে ব্যাতিক্রম ঘটনা

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে শিবচরের নুরুল আমিন বিশ্ব বিদ্যালয় কলেজে ছাত্ররা শোক দিবসের কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। দুপুর ১২টার দিকে কলেজে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা কলেজের সামনে না টানিয়ে কলেজের পায়খানার ছাদে ফেলে রাখা হয়েছে। কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযোগ করে জানান, শোক দিবসের কর্মসূচী পালনের উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে ৮টায় কলেজে গিয়ে কলেজের গেট বন্ধ পাওয়া যায়। কলেজে কোন পতাকা টানানো হয় নাই। পরে কলেজের অধ্যক্ষের মোবাইলে ফোন দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এতে কলেজের ছাত্রলীগসহ সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ক্ষিপ্ত হয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকাল ১০টার সময় কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে। জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা কলেজের পায়খানার ছাদে ফেলে রাখা হয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শিবচর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে ফোন করে ঘটনাটি জানানো হয়।
জানা যায়, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা নুরুল আমিন বেপারী বিকল্প ধারার কেন্দ্রীয় কমিটির একজন নেতা। কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ লুৎফর রহমান নুরুল আমিন বেপারীর ছোট ভাই। উমেদপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ দাদন হাওলাদার বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই বিএনপি করে। বর্তমানে বিকল্প ধারার রাজনীতি করেন। জাতীয় শোক দিবসে কলেজের ঘটনাটা আসলেই ঘৃণিত দোষীদের বিচার হওয়া উচিত। শিবচর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ সামসুদ্দিন খান বলেন, কলেজের ছাত্রলীগের ফোন পেয়ে কলেজে গিয়ে দেখি দুপুর ১২ টার সময়ও কলেজের সামনে জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা টানানো নেই। পতাকাগুলো বাথরুমের ছাদে পরে আছে। জাতীয় শোক দিবসে এমন একটা ঘটনা খুবই ন্যাক্কার জনক। আজ বিকেলের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দোষী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, কলেজে সকালেই পতাকা টানানো হয়েছিলো। তবে ওটা পরে কলেজের ছেলেরা কলেজের পায়খানার ছাদে ফেলে দিয়েছে। কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি খালেদ হাসান পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক এনায়েত করিম ছাত্রদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ আওয়ামী লীগের বিপরীত রাজনীতি করে বলেই তারা এ জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে। জাতীয় পতাকা খারাপ জায়গায় ফেলে রেখে তারা শুধু ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকেই অপমান করে নাই। তারা সারা দেশকে অপমান করেছে। আমরা এটার সঠিক বিচার দাবী জানাই।
Read More ... »

যথাযোগ্য মর্যদায় ১৫ আগস্ট পালিত

এ.কে.এম. নাসিরুল হক: শিবচরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের যৌথ উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট পালিত হয়। শিবচর পৌরসভা ও উপজেলার ১৮ ইউনিয়নে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়। জাতীয় সংসদের হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী লিটন এমপি বহেরাতলা, ভদ্রাসন, শিবচর, পাঁচ্চর, মাদবরেরচর, সন্ন্যাসিরচর, বন্দরখোলা ও দত্তপাড়া ইউনিয়নে গণভোজের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। মাদারিপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাহাবুদ্দিন মোল্লা, শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম তালুকদার, ভাইস চেয়ারম্যান সামসুল আলম খান, মাদারিপুর জজ কোর্টের পিপি এডভোকেট সুজিত চ্যাটাজি বাপ্পি, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Read More ... »

জেলেকে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা

উপজেলার চর বাচামারা গ্রামে শনিবার (১৫ আগস্ট) ভোরে জেলে জয়নাল মাদবর (৩২)কে কতিপয় সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করেছে। জানা যায়, জয়নাল শনিবার ভোরে পদ্মানদী থেকে মাছ শিকার করে তার বাড়ি চর বাচামারা গ্রামে ফিরছিল। এ সময় রাস্তার পাশে ওৎ পেতে থাকা চিহ্নিত সন্ত্রাসী মিজান মাদবার ও মিরাজসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জন দুর্বৃত্ত পুর্ব শত্রুতার জের ধরে তার গতিরোধ করে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। পড়ে এলাকাবাসী মুমূর্ষু জয়নালকে প্রথমে শিবচর পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
Read More ... »

আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দার গ্রেফতার

বুধবার (১১ আগস্ট) রাত ১০টায় শিবচর থানার পুলিশ গোপান সংবাদের ভিত্তিতে কাওড়াকান্দি ফেরিঘাট এলাকা থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দার হযরত আলী (৫০)কে গ্রেফতার করেছে। জানা যায়, কাওড়াকান্দি ফেরিঘাট এলাকা দিয়ে হযরত আলী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করলে শিবচর থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দার হযরত আলীকে গ্রেফতার করে। আটককৃত ডাকাত সর্দার হযরত আলী শরিয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানার জালালপুর গ্রামের করম আলী বেপারির ছেলে। তার বিরুদ্ধে শিবচর, মুন্সিগঞ্জ, ভাঙ্গা, গোসাইরহাট থানায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন ও অস্ত্রসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
Read More ... »

মাদকাসক্ত যুবকের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় যুবতীকে কুপিয়ে জখম

সোমবার (১০ আগস্ট)সকালে উপজেলার কুতুপুবপুর ইউনিয়নের বড় কেশবপুর গ্রামে মাদকাসক্ত যুবক শফিকুল মাদবর (২৮)এর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় একই গ্রামের দবির মিয়ার মেয়ে শামিরন আক্তার (২০)কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করেছে উক্ত মাদকাসক্ত যুবক।
জানা যায,গত বেশ কিছুদিন ধরে মাদকাসক্ত যুবক শফিকুল মাদবর শামিরনকে উক্ত্যক্ত করে আসছিল। রবিবার রাতে শফিকুল শমিরনকে কুপ্রস্তাব দেয়। শামিরন শফিকুলের কুপ্রস্তাবের কথা শুনে তাকে ঝাড়ুপেটা করে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল সোমবার সকালে ধারালো ছুড়ি দিয়ে শামিরনকে এলোপাথারিভাবে কুপিয়ে তাকে মৃত ভেবে এলাকা ত্যাগ করে চলে যায়। শামিরনকে প্রথমে শিবচর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতলে প্রেরণ করে। মুমূর্ষু শামিরন এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। মাদকাসক্ত যুবক শফিকুলকে আসাসী করে শিবচর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

আটরশি ও চন্দ্রপাড়ার লাখো মুরিদের ভিড়ে কাওড়াকান্দি-মাওয়া রুটে হাজার পরিবহন আটকা ॥ পুলিশের লাঠিচার্জে অর্ধশত যাত্রী আহত

বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) রাতে বিশ্বমুসলিমের পবিত্র রজনী শবেবরাতের নামাজ শেষে আটরশির বিশ্বজাকের মঞ্জিল ও চন্দ্রপাড়ার লাখো মুসলিমের ভিড়ে কাওড়াকান্দি ও মাওয়ারুটের দু'পাড়ে প্রায় এক হাজার পরিবহন আটকা পড়ে আছে। ফজরের নামাজ শেষে আটরশি ও চন্দ্রপাড়ার মুরিদগণ ঢাকার পথে রওয়ানা হলে কাওড়াকান্দি ফেরিঘাটে দু'ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৪ কি.মি. যানজটের সৃষ্টি করে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সামাল দিতে ব্যর্থ হলে অনিয়মতান্ত্রিক অবস্থায় পরিবহন চলাচল করায় মূহুর্তেই ঘাটের যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। পড়ে ভাঙ্গা হাইওয়ে, পাঁচ্চর হাইওয়ে ও শিবচর থানা থেকে কাওড়াকান্দি ফেরিঘাটে যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কাওড়াকান্দি ঘাটের অবস্থা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও পুলিশের বেধরক লাঠিচার্জে প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হয়েছে। ঢাকার কামরাঙ্গির চরের আবু কালাম জানান, "আটরশি থেকে ফজরের নামাজ শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম। আমিসহ আরও কয়েকজনের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে।" নারায়ণগঞ্জের চাষারা এলাকার বাহাউদ্দিন মোল্লার প্রাইভেটকারের কাচ ভেঙ্গে তাকে পিটুনি দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের লাঠিচার্জের ব্যাপারে জানতে চাইলে পাঁচ্চর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আসাদ জানান, লাখো মানুষের পদচারণা ও হাজার হাজার পরিবহনকে সামাল দিতে ছোট-খাটো এ ধরনের দু-একটা ঘটনা ঘটতে পারে।
গত কিছুদিন ধরে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটে ফেরি স্বল্পতা রয়েছে। নদীতে ১৪টি ফেরি চলাচল করলেও ৪টি আরিচায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং ৩টি মেরামতের জন্য ডকে উঠানো হয়েছে। বর্তমানে ৭টি ফেরি চলাচল করছে মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটে। ফেরি স্বল্পতাই যানজটের পাল্লাকে দিন দিন ভারী করছে। অন্যদিকে নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে সময় লাগে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা।
Read More ... »

পদ্মানদী থেকে ৬ জলদুস্য আটক ॥ ৪টি রামদা ও ২টি ট্রলার উদ্ধার

বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) ভোর রাতে শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের মাগুরখণ্ড এলাকার পদ্মানদীতে জেলেদের ট্রলার থেকে মাছ লুট শেষে এলাকাবাসী ধাওয়া করে ৬ জলদস্যুকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
জানা যায়, জলদস্যু সাইদুল ইসলাম (৩৫), জুয়েল (২২), আলমগীর বেপারী (৪০), রাজ্জাক মোল্লা (২৪), জাহাঙ্গীর হোসেন (২২), রাজিব মোল্লা (৩৫) জেলেদের ১৩টি মাছের ট্রলারে লুট শেষে চলে যাওয়ার সময় জেলেদের চিৎকারে এলাকাবাসী ও অন্যান্য জেলেরা ১৫/২০টি ট্রলার নিয়ে জলদস্যুদের ধাওয়া করে ৬ জনকে আটক করে। পরে আটককৃত জলদুস্যদের শিবচর থানার পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়। পুলিশ জলদস্যুদের ২টি ট্রলারতল্লাসী চালিয়ে ৪টি রামদা উদ্ধার করে। আটককৃত জলদস্যুদের বাড়ি চরজানাজাত ইউনিয়নের মোল্লাকান্দি গ্রামে। এই ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

শিবচরে পদ্মানদীতে নৌকা ডুবি, জেলে-কন্যা নিখোঁজ

বুধবার (৫ আগস্ট) সকাল ৯টায় শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা কাজিরসুরা এলাকায় পদ্মানদীতে বাবার সাথে মাছ শিকার করতে গিয়ে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হয়েছে জেলে-কন্যা অজুফা আক্তার (১১) । বন্দরখোলা কাজিরসুরা চর এলাকায় জেলে তারা মিয়া ঘরামি তার শিশুকন্যা অজুফাকে নিয়ে একটি ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে জাল নিয়ে পদ্মানদীতে মাছ শিকার করতে যায়। আকস্মিক বাতাসে নদীতে নৌকা ডুবে গেলে জেলে তারা মিয়া ঘরামি সাঁতার কেটে পাড়ে উঠলেও অজুফার আর ফিরে আসেনি।
Read More ... »

পড়ল ধরা নারীলোভী

শিবচর উপজেলার খাড়াকান্দি গ্রামের ধনাঢ্য ব্যক্তি ফয়জুল শেখ (৪৫) নারীলোভে সর্বসমেত ২১টি বিয়ে করলেও অধিকাংশই ঘটেছে লোকচক্ষুর আড়ালে। প্রকাশ্যে তিনি স্বীকৃতি দিয়েছেন চার স্ত্রীকে। তাদের গর্ভে আসা ১০ সন্তানের তিনজন বর্তমানে প্রবাসে আছে। বছর দেড়েক আগে এই প্রৌঢ় নিজ এলাকার মেয়ে নাসিমা আক্তারকে (১৭) বিয়ে করেন। শেষাবধি গোপন আর গোপন না থাকায় ব্যাপারটি সবার মুখে মুখে প্রশ্ন হয়েই দেখা দেয়। ফলে গত শনিবার স্থানীয় মাতব্বর মতি হাওলাদার ও মেম্বার আইয়ুব আলী হাওলাদারের নেতৃত্বে বিচার সভা বসে। এতে ফয়জুল শেখ অভাবী মেয়েদের দুর্দশা বুঝে টাকা-পয়সা ঢেলে বিয়ের নামে তাদের শয্যাসঙ্গিনী বানানোর কথা স্বীকার করেছেন।
ওই বিচারে নাসিমাকে ২১তম স্ত্রী করে নেওয়ার কাগজপত্র প্রমাণপত্র হিসেবে দেখানো হলেও কঠিন রায়ই মিলেছে তার ভাগ্যে। তাতে অপরাধীকে প্রায় হাজার জনতার উপস্থিতিতে ৪১ বার জুতাপেটা করা বাদেও নেওয়ানো হয়েছে নাকেখত। সেই সঙ্গে তার নবজাতক কন্যাটির লালন-পালনার্থে ফয়জুল শেখের কাছ থেকে আদায় করা হয় এক লাখ টাকা। আর ভবিষ্যতে সাবধান থাকার প্রশ্নে বিচারক তাকে জানিয়ে দিয়েছেন অন্য রকমের কথা। এতে বলা হয়েছে, অপরাধী ২১তম স্ত্রী নাসিমা আক্তারকে কখনও দেখতে গেলে ফের ভাগ্যে মিলবে এই জুতাপেটা এবং নাকেখত।
Read More ... »

শিবচরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১

শনিবার (১ আগস্ট) বিকেলে শিবচর-দত্তপাড়া সড়কের বাদশাকান্দি গ্রামে নসিমনের চাকায় পিষ্ট হয়ে সাব্বির হোসেন (৪) ঘটনাস্থলে মারা গেছে। শিবচর থেকে যাত্রী বোঝাই একটি নসিমন দত্তপাড়া যাওয়ার পথে সাব্বির রাস্তা পারাপারের সময় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। পুলিশ গাড়িটি আটক করেছে। গাড়ি চালক পলাতক। নিহত সাব্বির দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাবলাতলা বাদশাকান্দি গ্রামের সেফায়েত মুন্সীল ছেলে। সাব্বিরের মৃত্যুর পর থেকে এলাকাবাসী দত্তপাড়া-শিবচর সড়কটি পায় ৬ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
Read More ... »

শিবচরে ডাকাতি : ২ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট, আহত ২

বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের মাগুরখন্ড গ্রামে মজিবর হাওলাদারের বাড়িতে এক ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। ডাকাতেরা গৃহকর্তা মজিবর হাওলাদার (৪৫) ও ছেলে আলম (১৮) কে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছ। জানা যায়, ১০/১২ জনের সশস্ত্র ডাকাতদল মজিবর হাওলাদরের ঘরের কপাট ভেঙ্গে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে নগদ ২৭ হাজার টাকা, ৯ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে যায়।
Read More ... »

নজর দিন..................


মাদারীপুর জেলার শিবচরের উৎরাইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষের টিনের চালা প্রায় ঘেঁষে পল্লী বিদ্যুতের ১১০০০ ভোল্টেজের এই লাইনটি যাওয়ায় যে কোন মুহুর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। -ছবি: ইমতিয়াজ আহমেদ।
Read More ... »

শোক সংবাদ :: পপুলার ক্লিনিকের স্বত্ত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেনের ইন্তেকাল

পপুলার ক্লিনিকের স্বত্ত্বাধিকারী জনাব মো. আনোয়ার হোসেন গতকাল (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় হৃদযন্ত্রেরক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি অসুস্থতাবোধ করলে প্রথমে তাকে ক্লিনিকে আনা হয়, পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। তিনি এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে শিবচর পৌরএলাকার সকল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়। শিবচর হাতিরবাগান মাঠে সকাল ১১টায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং পৌরসভার গুয়াতলায় নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়। উল্লেখ্য, জনাব আনোয়ার হোসেন শিবচর পৌরসভার হিসাবরক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন।
Read More ... »

শিবচরে একটানা ১৮ ঘণ্টা প্রবল বৃষ্টিপাতে কাওড়াকান্দি ঘাটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ : দুইপাড়ে আটকে আছে ৫ শতাধিক গাড়ি

টানা ১৮ ঘণ্টা প্রবল বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে কাওড়াকান্দি ও মাওয়া রুটে মঙ্গলবার সকাল থেকে লঞ্চ ও স্পিডবোট সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। ফেরি চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় থাকলেও পরাপারে সময় লাগছে প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা। এতে কাওড়াকান্দি ও মাওয়া রুটে দুই পাড়ে ৫ শতাধিক গাড়ি আটকা পড়ে আছে। গত ১৮ ঘণ্টা প্রবল বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীর স্রোত তীব্র আকার ধারণ করলে ফেরি চলাচলে দ্বিগুণ সময়ের চেয়েও বেশি লাগছে। এদিকে অবিরাম বৃষ্টিপাতের দরুণ কাওড়াকান্দি ২নং ফেরিঘাটের পল্টুন মাটি চাপা পড়ে গতকাল রাত থেকে বন্ধ রয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার ফলে সকল লঞ্চ ও স্পীডবোট বন্ধ থাকায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
Read More ... »

শিবচরে নিখোঁজ হওয়ার ছয় দিন পর আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে কিশোরের লাশ উদ্ধার

গতকাল (২৭ জুলাই) শিবচর উপজলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের গুপ্তেরকান্দা গ্রামে নিখোঁজ হওয়ার ৬ দিন পর শেখ মিজানুর রহমান (১৬) এর মৃতদেহ আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। জানা যায়, গত ২২ জুলাই সন্ধ্যায় আইয়ুব শেখের ছেলে মিজানকে একই গ্রামের কুদ্দুস মাদবরের ছেলে জাকির মাদবর (২৮) বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর মিজান বাড়ি ফিরে না আসলে তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাননি। গত সোমবার রাত ১০টায় মিজানের মৃতদেহ আড়িয়াল খাঁ নদে ভাসতে দেখে স্থানীয় জেলেরা পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত মিজানের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং তার হাত-পা রশি দিয়ে বাধা। এ ব্যাপরে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

ফরায়েজী আন্দোলন এবং ডানলপ সাহেবের নীলকুঠি

জহিরুল ইসলাম খান:
সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত 'ডানলপ সাহেবের নীলকুঠি' নামে। গরীব চাষীদের উপর ব্রিটিশ নীলকরদের অত্যাচার ও ঐতিহাসিক 'ফরায়েজী আন্দোলন'-এর নীরব সাক্ষী হিসেবে এখনও এটি দাঁড়িয়ে আছে। মাদারিপুর জেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে সদর উপজেলার ছিলারচর ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রামে এই নীলকুঠিটির অবস্থান।
জনশ্রুতি আছে, বহুকাল আগে থেকেই গ্রামটি বিভিন্ন পীর-আউলিয়ার পদস্পর্শে ধন্য বলে এর নাম হয় আউলিয়াপুর। এই গ্রামেই রয়েছে খ্যাতিমান আউলিয়া হযরত শাহ সুফী খাজা ইউসুফ শাহ আহসানের দরগা শরীফ। অযত্নে অবহেলায় দরগাটি আজ জরাজীর্ণ। দরগাটির অবস্থান নীলকুঠির পাশেই। ৫০ বছর আগেও এই এলাকাটি ছিল ঘনজঙ্গলে আবৃত। এখানে বাস করত বাঘসহ নানা ধরনের হিস্র প্রাণী। এখন অবশ্য এখানে আর জঙ্গল নেই।
প্রায় দু’শ বছর আগের কথা। ডানলপ সাহেব নামের একজন ইংরেজ নীলকর নীলের ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার বাসনা নিয়ে তিনি এসেছিলেন এই এলাকায়। ১২ একর জমির ওপর তিনি স্থাপন করেন নীলকুঠি। এই নীলকুঠি আজ প্রায় নিশ্চিহ্ন। কুঠির জমিও বিভিন্নভাবে বেহাত হয়ে গেছে। কুঠির ধ্বংসাবশেষ এবং ইটের তৈরি ভবনের ভিত্তি পড়ে রয়েছে। আর স্মৃতি হিসাবে প্রায় অত রয়ে গেছে শুধু চুল্লিটি।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, বৃহত্তর ফরিদপুরের অংশ হিসেবে মাদারিপুরে নীলচাষ শুরু হয় পলাশী যুদ্ধের কিছুকাল পর থেকেই। এলাকার তৎকালীন কৃষকদের ধান, পাট, গম, সরিষাসহ অন্যান্য ফলস বাদ দিয়ে শুধুমাত্র নীল চাষে বাধ্য করা হত। যে জমিতে একবার নীল চাষ করা হতো সেখানে অন্য কোন ফসল চাষ করা সম্ভব হত না। অত্যন্ত দরিদ্র কৃষকদের বিপদের সময় স্থানীয় দালালের মাধ্যমে সুদে ও দাদনের টাকা দিয়ে নীলচাষে প্রভাবিত করা হত। মাদারিপুর ছিল নীলচাষের জন্য খুবই উপযোগী। তখন ইংরেজই এদিকে ভিড় জমিয়েছিল নীলচাষ করতে।
এই ডানলপ সাহেবের নীলকুঠির সাথে জড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক ‘ফরায়েজী আন্দোলন’। উপমহাদেশের ব্রিটিশদের অত্যাচার যখন চরম পর্যায়ে তখন নীল কুঠিয়াল ও তাদের দোসর জমিদার-মহাজনদের অত্যাচারে এ অঞ্চলের কৃষকরাও জর্জরিত হয়ে পড়ে। এ সময় মাদারিপুরের শিবচর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের হাজী শরীয়তউল্লাহ ও তার পুত্র পীর মহসীনউদ্দিন দুদুমিয়া কুঠিয়ালদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শরীয়তউল্লাহ ও দুদুমিয়া এলাকার কৃষকদের নিয়ে গড়ে তোলেন বিশাল এক লাঠিয়াল বাহিনী। এই প্রতিবাদ এক সময় গণআন্দোলনে রূপ নেয়।
শরীয়তউল্লাহ মারা যাওয়ার পর তার ছেলে দুদুমিয়ার নেতৃত্বে ১৭৩৮ সালে বৃটিশদের সাথে নীলকুঠি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পরাজিত নীল কুঠিয়াল ডানলপ তার দলবল নিয়ে নীলকুঠি ছেড়ে পালিয়ে যায়। আউলিয়াপুরের যে স্থানে এই য্দ্ধু হয় সেই স্থান এখনও ‘রণখোলা’ নামে পরিচিত।
বিলুপ্তপ্রায় ডানলপ নীলকুঠির পূর্ব পাশে রণখোলা, পশ্চিমে আউলিয়াপুর বাজার, উত্তরে কালীতলা ও দেক্ষিণ আউলিয়াপুর দরগা শরীফ। ১২ কক্ষ বিশিষ্ট এ কুঠির মাঝামাঝি অংশে রয়েছে চুল্লি, পাশেই রয়েছে প্রায় ৪০ ফুট উঁচু চিমনি।
দিন দিন অযত্ন আর অবহেলায় এই ঐতিহাসিক নির্দশনটি বিলুপ্ত হতে বসেছে। এলাকাবাসী চায় তাদের পূর্ব-পূরুষদের উপর অত্যাচার ও ফরায়েজী আন্দোলনের ইতিহাসের শেষ স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে এই নীলকুঠি সরকার সংরণ করুক। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এলাকা পরিদর্শন করে এলাকাবাসীকে নীলকুঠি সংরক্ষণ করার আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়নের কোন লক্ষণ দেখেনি বলে জানালেন এলাকাবাসী।
বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির সদস্য মাদারিপুরের অন্যতম ইতিহাসবিদ ডা. আব্দুল বারির সাথে কথা হলে তিনি এই নীলকুঠিকে সংরক্ষণের দাবী জানান। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক এই নীলকুঠি হারিয়ে গেলে মাদারিপুর অঞ্চলে ব্রিটিশদের অত্যাচার ও ফরায়েজী আন্দোলনের কোন স্মৃতিচিহ্নই অবশিষ্ট থাকবে না। নীলকুঠি সংরক্ষণে সরকার এগিয়ে আসবে এই প্রত্যাশা মাদারিপুরবাসীর।
বর্তমানে নীলকুঠির অনেক জমি বেহাত হয়ে গেছে। এই জমি উদ্ধার না করা পর্যন্ত নীলকুঠি সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়। নীলকুঠি রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরী। শুধু দর্শনার্থীদের জন্যই নয় এই নীলকুঠির ঐতিহাসিক গুরুত্বও অপরিসীম।
Read More ... »

শিবচরে ২ বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ৫০

আজ (২৭ জুলাই) দুপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে বন্দরখোলা চৌরাস্তা এলাকায় ২টি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১ আহত প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রী। ঢাকা থেকে পিরোজপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা দেশ পরিবহনের একটি বাস ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-০৮৭৪ ও মাদারীপুর থেকে কাওড়াকান্দির উদ্দেশে ছেড়ে আসা চন্দ্রা পরিবহনের একটি বাস ঢাকা মেট্রো-জ-৪৫৩১ মুখোমুখি সংঘর্ষে চান মিয়া (৩৬) নামে এক ভ্যানচালক ঘটনাস্থলে মারা যায়। নিহত চান মিয়া শিবচর উপজেলার সন্ন্যাসীরচর গ্রামের নুরুদ্দিন শেখের ছেলে।
দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন সিরিয়া (৩৮, কুলসুম (৩৫), মজিবর (৩৪), কহিনুর (২৮), তোবারক (৩৯), জুলহাস (৩৫), নাসির উদ্দিন (২৩), আবেদা (৩৫), কামাল (৩৮), মতিয়ার (৫৫), বাবুল (১৮), শেখ আমিনুল ইসলাম (৩৯), হোসেন আহম্মেদ (৩৫), মোবারক (২২), বারেক (৩৫), সেলিনা (২৮), রিপা (১৮), হেপি (২৭), রুমানা (২০), মমিনুর রহমান (৩৫), সিরাজুল (২৮), শেখ বছির উদ্দিন (৩৮), শিপন (৩২), ইউনুছ (১৮), সাকিল (২৩), বারেক (২৭), জীবন দাস (৩৪), অজুফা (৪৯), সবুর উদ্দিন (৪৪), অর্জুন মালো (৩৮), শেফালী রানী দাস (৩৬), শিখা (১৩), রহিমদ্দিন (৫০)-কে শিবচর, ভাঙ্গা ও ফরিদপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশংকাজনক। গাড়ি চালক পলাতক। পুলিশ বাস দুটি আটক করেছে।
Read More ... »

শিবচরে ডাকাতি হওয়া ২ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার ।। জুয়েলার্স মালিক আটক

আজ (২৭ জুলাই) দুপুরে শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর বাজারের কৃষ্ণ জুয়েলার্স থেকে ডাকাতি হওয়া ২ ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ দোকান মালিক পরি কর্মকারকে আটক করেছ পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ডাকাত আব্বাসের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে শিবচর থানার পুলিশ কৃষ্ণ জুয়েলার্সের বিভিন্ন স্থানে তল্লাসী চালিয়ে ২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার ও জুয়েলার্স মালিক পরি কর্মকারকে আটক করে। উল্লেখ্য গত ১১ জুলাই পাঁচ্চর ঠাকুরবাজার এলাকার দিলীপ কর্মকারের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি শেষে পুলিশ ৫ ডাকাতকে আটক করে। গ্রেফতারকৃত ডাকাতেরা পরি কর্মকারের কাছে স্বর্ণ বিক্রি করছে বলে পুলিশকে জানায়। পরে শিবচর থানার পুলিশ পাঁচ্চর কৃষ্ণ জুয়েলার্স থেকে ২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করে।
Read More ... »

শিবচরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে মহিলাসহ আহত দশ

শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা মফিজুল্লাহ হাওলাদার কান্দি গ্রামে গতকাল (২৬ জুলাই) রবিবার সন্ধ্যায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে মহিলাসহ আহত হয়েছে দশ। বন্দরখোলা মল্লিককান্দি গ্রামের তোতা বেপারী সাথে মফিজুল্লাহ হাওলাদার কান্দি গ্রামের নাজিম উদ্দিন বেপারীর জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তোতা বেপারী ও তার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে নাজিম উদ্দিন বেপারী (৫০), গিয়াস বেপারী (৩৫), মালু বেপারী (৪৫), রহিমন (৩৮), আফছারুল (২২)কে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। উক্ত ঘটনার জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েলে নাজিম বেপারীর লোকজন তোতা বেপারী (৬০), ইলিয়াছ (৩০), সালেহা (৪৮), তৈয়ব (২৩), মরিয়ম (৩৮)কে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আহতদের শিবচর হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে।
Read More ... »

মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটের মেয়াদোত্তীর্ণ ১০ ফেরিতে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার

মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটের সার্ভে ও ফিটনেসবিহীন মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরিতে অত্যন্ত ঝূকিপূর্ণভাবে প্রতিদিন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার যানবাহন ও যাত্রী পারাপার হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা রক্ষায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা বিআইডবিউটিসি নদীপথে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখলেও চলতি ঝড়ের মৌসুমে যান ও মাল চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ। ফলে নৌপথে নিরাপদে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে চরম শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমনকি মন্ত্রীসহ ভিভিআইপিদের বহনকারী ফেরিটিরও ৫ বছর ধরে সার্ভে হয়নি। ফলে চলমান বর্ষা মৌসুমে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ভিভিআইপিসহ হাজার হাজার যাত্রী ও যানমাল চরম ঝুঁকির মধ্যে উত্তাল পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন। সূত্র জানায়, এ রুটে চলাচলকারী ১০টি ফেরির সব কটি ফেরিই ৫০-৬০ বছরের পুরোনো। ফেরিগুলো সচলের চেয়ে বিকলই থাকে বেশি সময় ধরে। ১৮ কিলোমিটার দূরত্বের দীর্ঘ ডুবোচরে ভরা এ নৌরুটে দীর্ঘদিন চলতে চলতে ফেরির পেট পাতলা হয়ে জং ধরে ও মরিচা পড়ে পেটের জোড়াগুলো আলগা হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও এ রুটের নাওডুবা-মাগুরখণ্ড-মাওয়া চ্যানেলটি অত্যন্ত সরু হওয়ায় সামান্য বাতাসেই ডুবোচরে সংঘর্ষ হওয়ায় ফেরিগুলোর প্রপেলারে প্রতিনিয়তই চিড় ধরে সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সূত্রের অভিযোগ, প্রতি বছর সার্ভে করার নিয়ম থাকলেও কোনো ফেরিরই গত ৪/৫ বছরের বেশি সময় ধরে সার্ভে না করায় ঝুঁকি বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। সম্প্রতি অর্ধশত বছরের পুরোনো ডাম্ব ফেরি রায়পুরা তলা ও পাশে ছিদ্র হয়ে ২২টি যানবাহন ও তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে পদ্মার বুকে ডুবতে বসেছিল। পরে ৬টি পাম্প মেশিন বসিয়ে ও শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট এসে মধ্যরাতে ফেরিটিকে উদ্ধার করা হয়। রায়পুরার মতোই এ রুটে পাতলা পেট, জং ধরা ও মরিচা পড়া দীর্ঘদিনের আরো ১০টি ফেরি চলছে। ভিভিআইপিদের পারাপারে ব্যবহৃত কেট আই ধরনের সিঙ্গেল ফেরি কর্ণফুলীর অবস্থাও একই রকম। থোবাল ও রানীক্ষেতসহ সব ফেরিই প্রতিনিয়ত পানি ডাম্পিং করে বিপজ্জনকভাবে চালানো হচ্ছে। এ রুটে চলাচলকারী অর্ধ শতাধিক ফিটনেসবিহীন লঞ্চও প্রতিদিন চরম ঝুঁকির মধ্য দিয়ে উত্তাল পদ্মা নদী পাড়ি দিচ্ছে। বিআইডবিউটিসির একাধিক সূত্র জানায়, এ রুটে চলাচলকারী ফেরি ১৯৭৮ সালে নির্মিত ৮-৩৯০ আইটি (টাগটি) ২০০৫ সালের এপ্রিলে, ১৯৭৮ সালে নির্মিত ৮-৩৯১ আইটি (টাগটি) ২০০৬ সালের মার্চে, ১৯৭৫ সালে নির্মিত ৮-৩৯৪ আইটি (টাগ) ২০০৮ সালে ফেব্রুয়ারিতে, ১৯৭৫ সালে নির্মিত ৮-৩৯৫ আইটি ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ১৯৭৬ সালে নির্মিত ৮-৩৯৭ আইটিটি ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ১৯৬১ সালে নির্মিত আইটি বেলজিয়াম ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ১৯৬৫ সালে নির্মিত আইটি ইরান ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এবং মিডিয়াম টাইপ ফেরির মধ্যে ১৯৬৩ সালে নির্মিত ফেরি যশোর ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে সার্ভে করা হয় না। এছাড়াও ফ্লাট ফেরিগুলোর মধ্যে ১৯৩৮ সালে নির্মিত থোবাল ও যমুনা, ১৯২৫ সালে নির্মিত রানীক্ষেত, রায়পুরা, রানীগঞ্জ ও টাপলো, ১৯৭৩ সালে নির্মিত ফেরি কেটাইপ কুমারী, কামিনী ও ১৯৬৩ সালে নির্মিত ভিভিআইপি ফেরি কর্ণফুলীসহ উল্লিখিত ফেরিগুলো গত ৫ বছর ধরে সার্ভে করা হয়নি। ফলে সব ফেরিগুলোই সার্ভে সার্টিফিকেট ছাড়া ঘন ঘন ডকিং (মেরামত) করে চলছে। ফেরি রায়পুরাসহ কয়েকটি ফেরি তলায় সিমেন্ট দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে ডকিং করে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে ১৮ কিলোমিটার দূরত্বের এ নদীপথ চলাচল করছে। অথচ প্রতি বছরের সার্ভে সার্টিফিকেট ছাড়া নৌযান চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও গত অন্তত ৫ বছর ধরে কোনো ফেরিরই সার্ভে পর্যন্ত করা হয়নি। সূত্র জানায়, চাঁদপুর ও ভোলা নৌরুটে চলাচলরত ঢাকা, কুমিল্লা ও কস্তুরি ফেরি ৩টিও একইভাবে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে।বিআইডবিউটিসির উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক মেরিটাইপ সংস্থা আইএমওর কোড অনুযায়ী বাংলাদেশে চলাচলরত ফেরিগুলো ৩০ বছর চলতে পারে। তবে ফেরিস্বল্পতার কারণে মেকানিক্যাল মডিফিকেশনের মাধ্যমে ফেরিগুলো সচল রাখা হয়েছে। তবে সূত্র জানায়, বছর বছর সার্ভে ছাড়া এসব ফেরি চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এক্ষেত্রে সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের সার্ভে বিভাগে চলাচলরত এক লাখ নৌযানের জন্য রয়েছেন মাত্র ২ জন কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে আইটি ৩৯০ এর মাস্টার ইনচার্জ শফিকুর রহমান বলেন, পুরোনো ফেরিগুলো দীর্ঘ এ রুটে চালানো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ফেরিচালক বলেন, ‘ফেরি চালানোর ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার লিখেও কোনো প্রতিকার পাই না।’ অনেক ফেরিচালক নৌযানগুলো সার্ভে না করার ফলে নিজেদের সার্টিফিকেট জব্দ হওয়ার শঙ্কায়ও রয়েছেন। মাওয়া জোনের এজিএম আশিকুর রহমান বলেন, পুরোনো এ ফেরিগুলো জোড়াতালি দিয়ে চালানো হচ্ছে। ফোনালাপে বাংলাদেশ সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর (অব.) বজলুর রহমান বলেন, ‘সার্ভে বিভাগে জনবল সংকট রয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি মাওয়া রুটে কিছু নৌযানকে ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে। শিগগিরই আমি দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ রুটে গিয়ে সমস্যাগুলো দেখবো।’

Read More ... »

শিবচরে ১৩ তরুণ গড়ে তুলেছেন উৎরাইল ছাত্র মিতালী পাঠাগার

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার গ্রাম পর্যায়ে ১৩ তরুণের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে উৎরাইল ছাত্র মিতালী পাঠাগার নামে একটি গ্রন্থাগার। 'বই হোক জীবন গঠনের হাতিয়ার' স্লোগানকে সামনে রেখে ২০০৬ সালের জুলাইয়ে যাত্রা শুরু করে গ্রন্থাগারটি। কোনো রকম পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই এ ১৩ তরুণের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে গ্রন্থাগারটি।
গ্রন্থাগারটি প্রতিষ্ঠার মূলে যারা রয়েছে তারা সবাই ছাত্র। দেশের বিভিন্ন স্থানে লেখাপড়া করছেন। আর গ্রামে যারা থাকছেন তারা পালাক্রমে পাঠাগারটি দেখাশোনা করেন। যারা প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তারা প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে থাকেন। ঘর ভাড়া, পত্রিকা বিল বাবদ প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা খরচ হয়।
পাঠাগারটি সম্পর্কে স্থানীয় লোকজন জানান, ছেলেদের উদ্যোগটা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তারা নিয়মিত এখানে পত্রিকা পড়তে পারেন। এ তরুণরা শুধু পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠাই করেননি, স্থানীয় তরুণ-তরুণীদের পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে এলাকার তরুণ-তরুণীরা এখন পাঠাগারমুখী হচ্ছেন।প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয় পাঠাগারটি। নবীন-প্রবীণ পাঠকদের পদচারণায় মুখর থাকে সারাদিন। এখানে একটি জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক ও স্থানীয় পত্রিকা রাখা হয় নিয়মিত। এখান থেকে বই বাড়িতে নিয়ে পড়ারও সুযোগ রয়েছে। বই দিয়ে পাঠাগারটিকে সহায়তা করার জন্য উদ্যোক্তারা দাতা গোষ্ঠী, সুধীজনদের দৃষ্টি কামনা করেন। কেউ সহায়তা করতে চাইলে ০১৭২১০৯১৯০৫ নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন। পিছনে
Read More ... »
Read More ... »
ড. এটিএম তোফাজ্জল হোসেন

১৯৫৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি শিবচর উপজেলার মির্জারচর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞানের অধ্যপক।
Read More ... »
ড. এএফএম আশরাফ আলী


১৯৪৫ সালে শিবচর থানার মির্জারচর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক।
Read More ... »
ড. খলিফা মো. আব্দুল মালিক

১৯৪৬ সালে শিবচর থানা সেনেরবাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক। তিনি লন্ডনে পিএইচডি লাভ করেন।
Read More ... »
Read More ... »


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ভ্রমণ
Read More ... »

ই-বুক


ই-বুক
লেখকের নাম

Read More ... »

প্রবাসীর লেখা


[পড়ার জন্য লেখার নামে ক্লিক করুন]

০৫। নিউইয়র্ক :: মীজান রহমান
০৪। বাংলা শব্দের ভোজ বিলাস ::  অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবী (লন্ডন থেকে)
০৩। সাংঘাতিকী :: কবিতা ::  অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবী (লন্ডন থেকে)
০২। ইউরোপে বাংলাদেশ :: অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবী (লন্ডন থেকে)
০১। বিশ্ব বিরহদিবস ৩০ জুন :: অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবী (লন্ডন থেকে)
Read More ... »

টেলিফোন ইনডেক্স

.
.
---------------- উন্নয়নের কাজ চলছে-------------
Read More ... »

ব্যক্তিত্ব

.
------------- উন্নয়নের কাজ চলছে-----------
  • মন্ত্রী 
  • সাংসদ 
  • রাজনীতিবিদ 
  • সমাজকর্মী 
  • মুক্তিযোদ্ধা 
  • সাংবাদিক 
  • মিডিয়া ব্যক্তিত্ব 
  • সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব 
  • খেলোয়াড় 
  • অধ্যাপক 
  • শিক্ষক 
  • গবেষক 
  • লেখক 
  • ডাক্তার 
  • ইঞ্জিনিয়ার : স্থপতি 
  • ভূতত্ত্ববিদ 
  • বিচারক 
  • আইনজীবী 
  • ব্যাংকার 
  • স্থলবাহিনি, বিমানবাহিনি, নৌবাহিনি, বাংলাদেশ রাইফেলস, 
  • পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও ভিডিপি 
  • এনজিও কর্মকর্তা 
  • শিল্পপতি 
  • ব্যবসায়ী 
  • জমিদার
Read More ... »

এক নজরে শিবচর উপজেলা

------------ উন্নয়নের কাজ চলছে----------
Read More ... »

শিক্ষালয়

------------------ নির্মাণাধীন ----------------------

কলেজ
উচ্চ বিদ্যালয়
নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
মাদ্‌রাসা
প্রাথমিক বিদ্যালয়
Read More ... »

ইউনিয়ন পরিচিতি

--------------- নির্মাণাধীন---------------
০১। বন্দরখোলা
০২। ভদ্রাসন
০৩। দ্বিতীয়খন্ড
০৪। উমেদপুর
০৫। বাঁশকান্দি
০৬। কাদিরপুর
০৭। কাঁঠালবাড়ি
০৮। বহেরাতলা
০৯। নিলখী
১০। সন্ন্যাসিরচর
১১। কুতুবপুর
১২। চর জানাজাত
১৩। দত্তপাড়া
১৪। পাঁচ্চর
১৫। শিরুয়াইল
১৬। মাদবরচর
১৭। ভান্ডারীকান্দি
১৮। শিবচর
Read More ... »

১০০-১০০ প্রতিনিধিত্বে নারীর গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়ন চাই

নূর-উর-নাহার মেরী, মুশতারী বেগম ও লাভলী ইয়াসমিন


এদেশের নারী মুক্তি আন্দোলনে বেগম রোকেয়ার অবদানকে মাইলফলক হিসেবে দেখা হয়। তিনি নারীদের অধিকার সচেতন হওয়ার জন্য প্রথমে শিক্ষা অর্জনের কথা বলেছেন। তৎকালীন সময়ে তিনি স্বপ্ন দেখতেন, বাংলার মেয়েরা লেখাপড়া শিখে পুরুষদের মতো জজ, ব্যারিস্টার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হবেন এবং ভাইসরয় পদে বসে দেশ শাসনও করবেন। তার ঐ স্বপ্ন যে আকাশ-কুসুম ছিল না প্রায় শতাব্দীকালের পরিক্রমায় সর্বক্ষেত্রে মেয়েদের পদচারণায়, তা অনেকটাই বাস্তব রূপ লাভ করেছে। বর্তমানে এদেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী এবং বিরোধী দলীয় নেত্রীও একজন নারী। সে সঙ্গে প্রশাসনে, পুলিশ বাহিনীতে এমনকি সেনাবাহিনীতেও মেয়েরা অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেছে। কিন্তু ‘রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে’ মেয়েরা এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। সে জন্য মেয়েদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের দাবিটি এখন অত্যšত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও বিভিন্ন সভা-সেমিনারে নারীদের ক্ষমতায়নের কথা বলেছেন। বিভিন্ন এনজিও ও নারীবাদী সংগঠন মেয়েদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বিভিন্ন ফর্মূলা দিচ্ছেন। কিন্তু তাদের দাবিসমূহে নানান দূর্বলতা রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। সেজন্য ‘এমপো বাস্তবায়ন ফোরাম বাংলাদেশ’ এর অšতর্ভূক্ত ২৫টি সংগঠন ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য তথা কেন্দ্রে, বিভাগে, নগরে, জেলায়, উপজেলায় ও ইউনিয়নে সমমর্যাদায় ১০০:১০০ প্রতিনিধিত্বে নরনারীর ‘গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়ন’ সুনিশ্চিত করার জন্য লাগাতার ক্যাম্পেইন করে আসছে। সেই ক্যাম্পেইনেরই ধারাবাহিকতায় আজকের এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গক্রমেই উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, নারীদের “রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন” শব্দবন্ধটির পরিবর্তে “গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়ন” শব্দবন্ধটি এখন সর্বত্র অধিকতর গুরুত্ব ও মর্যাদা পাচ্ছে। কেন না, গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়নের মধ্যে অবশ্যই রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন থাকছে, কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের মধ্যে গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়ন নাও থাকতে পারে। তার উদাহরণ অগণতান্ত্রিক, কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোর দিকে নজর দিলেই পাওয়া যাবে। আবার “রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন” শব্দবন্ধটি অগণতান্ত্রিক মহলে বেশ আদরণীয়, কেন না এর ব্যবহারের মাধ্যমে তারা অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা দখলে নেয়ার ও রাখার যৌক্তিকতা আড়াল করার প্রয়াস পান। তাই, এমপো বাস্তবায়ন ফোরাম বাংলাদেশ ও সিডিএলজি’র পক্ষ থেকে প্রকাশিত সব ধরনের লেখায় “রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন” শব্দবন্ধটির পরিবর্তে “গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়ন” শব্দবন্ধটি বরাবরই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এতে, আশা করা যায়, সমাজের অন্যান্যরা তাদের কথায় ও লেখায় এর ব্যবহার বৃদ্ধিতে অনুপ্রাণিত হবেন। ঠিক যেমনি “গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার” ও “গণতান্ত্রিক রাজনীতির স্থানীয়করণ” শব্দবন্ধদ্বয়ের ব্যবহার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

যাহোক, উপমহাদেশে মেয়েদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ইতিহাস বেশ পুরনো নয়। বৃটিশরা শাসন পরিচালনায় এদেশের রাজনীতিকদের সম্পৃক্ত করতে ১৮৬১ সালে প্রণীত হয় ভারতীয় কাউন্সিল আইন। ১৮৬২ সালে গঠিত হয় বঙ্গীয় আইনসভা। তখন সীমিত ভোটাধিকারের ভিত্তিতে আইনসভায় সদস্য নির্বাচিত করা হতো। তৎকালীন বঙ্গীয় আইনসভায় ১২ জন সদস্যের মধ্যে কোনো নারী সদস্য ছিলেন না। তবে ১৯৪৭-১৯৫৪ সালের পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদে ১৭১ জন সদস্যের মধ্যে সর্বপ্রথম ২ জন নারীকে সদস্য নির্বাচিত করা হয়। ১৯৫৪-৫৮ সালে পূর্ববাংলা প্রাদেশিক পরিষদে ১২ জন নারী নির্বাচিত হন। ১৯৬২-৬৫ সময়কালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে ৫টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। এরপর স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩-৭৫ সময়কালে প্রথম জাতীয় সংসদে ১৫টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত হয়। দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ (১৯৭৯-৮২) ও তৃতীয় জাতীয় সংসদ (১৯৮৬-৮৭) এ ৩০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়; ১৯৮৬-৮৭ মেয়াদের সংসদে সর্বপ্রথম বিরোধী দলীয় নেতার পদে নারী হিসেবে শেখ হাসিনা নির্বাচিত হন। চতুর্থ জাতীয় সংসদ (১৯৮৮-৯০) তে নারীদের জন্য কোনো আসন সংরক্ষণ করা হয়নি। তবে পঞ্চম জাতীয় সংসদ (১৯৯১-৯৬), ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ (১৯৯৬-৯৬) ও সপ্তম জাতীয় সংসদ (১৯৯৬-২০০১) এ প্রতিবার নারীদের জন্য ৩০টি আসন সংরক্ষিত রাখা হলেও অস্টম জাতীয় সংসদে (২০০১-০৬) নারীদের জন্য কোনো আসন সংরক্ষিত ছিল না। চলতি নবম জাতীয় সংসদে ৪৫ জন নারী সংরক্ষিত আসনে এবং ১৯ জন নারী সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু সংরক্ষিত আসন পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদে নারীদের প্রকৃত ক্ষমতা ও মর্যাদা যে একদম প্রতিষ্ঠিত হয়নি তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যদিকে স্থানীয় সরকারেও সংরক্ষিত ব্যবস্থায় নারীদের প্রতিনিধিত্বের শুরু বেশীদিনের নয়। বর্তমানে সংরক্ষিত আসন হিসেবে ইউনিয়নে, পৌরসভায় ও নগর কর্পোরেশনে প্রতি তিন ওয়ার্ডে (ইউনিয়নে মেম্বার ও শহরে কাউন্সিলর পদে) একজন নারী প্রতিনিধি নির্বাচকমন্ডলীর ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, সংরক্ষিত আসনের এই ধারায় ‘নারীদের ক্ষমতায়ন’ অব্যাহত থাকলে পুরুষদের সমকক্ষ হতে তাদের আরও ১০০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। সেজন্য ‘এমপো বাস্তবায়ন ফোরাম বাংলাদেশ’ মনে করে, ১০০:১০০ প্রতিনিধিত্বে নর-নারীর গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়নের ফর্মূলাটি কেন্দ্রে, বিভাগে, নগরে, জেলায়, উপজেলায় ও ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হলে অত্যন্ত অল্প সময়ে বলা যায় আগামী এক দশকের মধ্যেই প্রকৃত ক্ষমতা ও মর্যাদায় বাংলাদেশের নারীরা প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে পুরুষদের পর্যায়ে উন্নীত হয়ে যাবেন। 

বাংলাদেশে একটি মাত্র সরকার রয়েছে, যার নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’। তার বিপরীতে ‘স্থানীয় সরকার’ নামে আরেকটি ব্যবস্থা থাকলেও তা স্বশাসিত. স্বাবলম্বী কোনো ‘গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা’ নয়। প্রকৃতপক্ষে এগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের বর্ধিত শাখা বা এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। সেজন্য দুই প্রকারের সরকার ব্যবস্থা অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা ও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় তৃণমূলে ‘গণতান্ত্রিক রাজনীতির স্থানীযকরণ’ এবং নারীদের ‘গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়ন’ করা খুবই জরুরী প্রয়োজন। ণতন্ত্রায়ন ও স্থানীয় সরকার গবেষক এবং সিডিএলজি’র নির্বাহী পরিচালক আবু তালেব ‘গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকারের রূপরেখা’য় ১০০:১০০ প্রতিনিধিত্বে নারীদের গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়নের জন্য মিলেনিয়াম প্রোপোজাল পার্ট ওয়ান (এমপো) এর আলোকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে ১১ দফা সুপারিশ উপস্থাপিত করেন। এমপো প্রস্তাবনা ও উক্ত ১১ দফা সুপারিশের পক্ষে দেশে-বিদেশে ব্যাপক জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যেই গঠন করা হয় ‘এমপো বাস্তবায়ন ফোরাম বাংলাদেশ’ যা ২৫টি সংগঠনের একটি একতাবদ্ধ মোর্চা। আমরা আশা করি এই মোর্চার সদস্য সংগঠনের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকবে এবং আমাদের ন্যায়সংগত আন্দোলনও বেগবান হতে থাকবে ।

এখানে সংক্ষেপে ১১ দফা সুপারিশ প্রণয়নের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করা প্রয়োজন। বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় আইনসভা হচ্ছে এক কক্ষ বিশিষ্ট যা “জাতীয় সংসদ” নামে পরিচিত। জাতীয় সংসদের সাধারণ ও সংরক্ষিত আসন পদ্ধতিদ্বয়ের পরিবর্তে একই পদ্ধতিতে প্রতি আসনে দুইজন সদস্য নির্বাচনের প্রস্তাব ১১ দফার ১ নং দফায় করা হয়েছে। জাতীয় সংসদের এক আসনে নারী ও পুরুষ উভয়ে একই পদ্ধতিতে নির্বাচিত হলে নারী সদস্যকে নিয়ে উপহাস করার আর কোনও সুযোগই থাকবে না। জাতীয় সংসদ পরিচালনায় নারীর অংশগ্রহণ পদ্ধতিগতভাবে সুনিশ্চিত করার জন্য ১১ দফার ২ নং দফায় একজন মহিলা ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করার প্রস্তাব করা হয়। পৌরসভাগুলি ও ঢাকা নগর কর্পোরেশনের নির্বাচনের পর জেলা পরিষদের নির্বাচনের কথা শুনা যাচ্ছে। আমাদের দাবী হচ্ছে বিভাগকেও নির্বাচিত প্রতিনিধির অধীনে আনতে হবে। এর জন্য সর্বাগ্রে সরকারের একটি সমন্বিত স্তরগত নীলনকশা প্রণয়ন করতে হবে এবং বিভাগকে স্থানীয় সরকারের সর্বোচ্চ ইউনিট এবং ৪,৫০১টি ইউনিয়ন ও ৩১৬টি নগরকে স্থানীয় সরকারের সর্বনিম্ন ইউনিট ধরে প্রশাসনিক ইউনিটগুলি সাজাতে হবে। সেই সাথে প্রতিটি ইউনিটকে গণতন্ত্রের ভিত হিসেবে স্ব-শাসিত, স্বাবলম্বী করতে ‘গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকারের রূপরেখা’ বাস্তবায়ন করতে হবে। অর্থাৎ বিভাগে বিভাগীয় সরকার, জেলায় জেলা সরকার, উপজেলায় উপজেলা সরকার, ইউনিয়নে ইউনিয়ন সরকার এবং ৩১৬টি শহরে সেকেলে পৌরসভা ও নগর কর্পোরেশন পদ্ধতিদ্বয় বাতিল করে একরূপ ৩১৬টি নগর সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। স্বাভাবিকভাবে এসব স্থানীয় সরকারে ক্ষমতার বিভাজন নীতি অনুসারে সরকারের তিনটি বিভাগ তথা স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় সংসদ ও স্থানীয় আদালতের উপস্থিতি নিশ্চিত থাকতে হবে। যেমন, দেশের ৪,৫০১টি ইউনিয়নে ইউনিয়ন সংসদ, ইউনিয়ন প্রশাসন ও ইউনিয়ন আদালত এবং ৩১৬টি নগরে নগর সংসদ, নগর প্রশাসন ও নগর আদালত থাকতে হবে। স্থানীয় সরকারের প্রতিটি স্তরে সমমর্যাদায় ১০০:১০০ প্রতিনিধিত্বে নারীদের গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়ন সুনিশ্চিত করতে ১১ দফা সুপারিশের ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং দফায় একদম নির্দিষ্ট করে প্রস্তাব করা হয়েছে। আবার, কেউ কেউ জাতীয় স্তরে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট জাতীয় আইনসভা স্থাপনের কথাও বলছেন। যদি কখনও জাতীয় আইনসভার উচ্চ কক্ষ গঠিত হয় ১১ দফার ১০ নং দফায় সে উচ্চ কক্ষের নাম ‘জাতীয় সভা’ করার এবং প্রতি জেলা থেকে একজন মহিলা জাতীয় সভাসদ ও একজন পুরুষ জাতীয় সভাসদ সরাসরি ভোটে নির্বাচিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, এবং রাষ্ট্রের অন্যান্য ক্ষেত্রেও যথাসম্ভব নারীদের গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়নের নীতির কথা ১১ নং দফায় সাধারণভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেরকম ব্যবস্থা গৃহীত ও বাস্তবায়িত হলে নারীরা নিজেরা কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সরকারে অবস্থান করেই যেসব প্রথাগত বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন সেসবের অবসানে প্রয়োজনীয় আইন, বিধি-বিধান ও কর্মসূচী প্রণয়ন ও কার্যকর করতে সক্ষম হবেন। সংসদ ছাড়াও নারীদের ভাইস চেয়ারপার্সন, ডেপুটি মেয়র, ডেপুটি স্পিকার পদেও ১০০:১০০ প্রতিনিধিত্বে গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়নের কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া, চেয়ারপার্সন, মেয়র, স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদীয় কমিটির প্রধান, প্রেসিডেন্ট এসব পদ নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এসব পদে নারী-পুরুষ উভয়ে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন বলে নারীদের সার্বিক অর্থে সক্ষমতা অর্জনের মানদণ্ড বিচারের সুযোগও থাকবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এমপো’র প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে নারী-পুরুষ উভয়কে একে অপরের অধীনস্থ না করে পরিপূরক ও সহায়ক করা হয়েছে। অর্থাৎ এই পদ্ধতির মাধ্যমেই একুশ শতকের উপযোগী একটি উন্নত গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণ করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে; একে অবশ্যই একটি একতাবদ্ধ মানবজাতি গঠনের উপায় হিসেবে কাজে লাগাতে হবে। ‘এমপো’র আলোকে বাংলাদেশের নারীদের অতীত ও বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ বিষয় বিবেচনায় নিয়ে প্রণীত এই ১১ দফা সুপারিশ হলো: ১. জাতীয় সংসদের প্রতি আসনে একজন নারী সংসদ সদস্য ও একজন পুরুষ সংসদ সদস্য নির্বাচিত করতে হবে; দুই. জাতীয় সংসদে একজন মহিলা ডেপুটি স্পিকার ও একজন পুরুষ ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করতে হবে; ৩. ইউনিয়নের প্রতি ওয়ার্ডে একজন মহিলা মেম্বার ও একজন পুরুষ মেম্বার নির্বাচিত করতে হবে; ৪. ইউনিয়নে একজন মহিলা ভাইস চেয়ারপার্সন ও একজন পুরুষ ভাইস চেয়ারপার্সন নির্বাচিত করতে হবে; ৫. পৌরসভা ও নগর কর্পোরেশনের প্রতি ওয়ার্ডে একজন মহিলা কাউন্সিলর ও একজন পুরুষ কাউন্সিলর নির্বাচিত করতে হবে; ৬. প্রত্যেক পৌরসভা ও নগর কর্পোরেশনে একজন মহিলা ডেপুটি মেয়র ও একজন পুরুষ ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত করতে হবে; ৭. এমপো অনুযায়ী উপজেলায় নির্বাচিত একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও একজন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে; ৮. উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় সংসদের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা হতে একজন মহিলা সদস্য ও একজন পুরুষ সদস্য নির্বাচিত করতে হবে; ৯. জেলা ও বিভাগে একজন মহিলা ভাইস চেয়ারপার্সন ও একজন পুরুষ ভাইস চেয়ারপার্সন নির্বাচিত করতে হবে; ১০. জাতীয় সভা গঠনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক জেলা হতে একজন মহিলা জাতীয় সভাসদ ও একজন পুরুষ জাতীয় সভাসদ নির্বাচিত করতে হবে; এবং ১১. এমপোর আলোকে রাষ্ট্রের অন্যান্য ক্ষেত্রেও ১০০:১০০ প্রতিনিধিত্বে নারী-পুরুষের গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়ন সুনিশ্চিত করতে হবে।

বলা হয়, নারীর দাসত্ব শুরু হয়েছে দাস প্রথা চালুরও পূর্বে। মাতৃতন্ত্র থেকে পিতৃতন্ত্রে প্রবেশ করার মধ্য দিয়ে নারীর উপর পুরুষের আধিপত্য প্রাতিষ্ঠানিকতা লাভ করে। পরবর্তীকালে নারীর প্রতি যাবতীয় অন্যায়Ñঅবিচারকে সৃষ্টিকর্তা ও প্রকৃতি প্রদত্ত আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠা করা হয়। অন্যান্য দেশের মত এই উপমহাদেশেও এসব আইন দ্বারা নারীর উপর নানা প্রকার নির্যাতনকে সমর্থন দেয়া হয়। পূর্বে সতীদাহ প্রথা, কন্যা শিশু হত্যা, কুমারী পণ প্রথা, শিশু বিবাহ, সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত রাখা ইত্যাদি কঠোরভাবে চালু ছিল। বর্তমানে এসব প্রথার রূপ পাল্টেছে মাত্র। স্বামীর গৃহে নির্যাতিত হওয়া, অফিস আদালত ও রাস্তাঘাটে নিগৃহীত হওয়া, যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হওয়া, পুরুষের চেয়ে কম পারিশ্রমিক পাওয়া, প্রেমিক কর্তৃক প্রতারণা, এসিড সন্ত্রাসের শিকার হওয়া, হত্যা-ধর্ষণের শিকার হওয়া ইত্যাদি প্রতিদিনকার খবর। সম্প্রতি এসবের সঙ্গে যোগ হয়েছে ‘ইভ টিজিং’ নামক মহামারী রোগ। এসব অনাচার চলতে পারছে কেবল গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মেয়েদের দুর্বল অবস্থানে রাখার কারণে। সেজন্য এমপো অনুযায়ী প্রণীত ১১ দফা সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে এসব ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে এবং নারী-পুরুষ উভয়ের উপযোগী একটি একতাবদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার দিকে দেশটি যাত্রা শুরু করবে, তাতে বিশ্বের অন্যান্য দেশও অনুপ্রাণিত হবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে। এরফলে একদিন না একদিন প্রতি বছর ‘বিশ্ব নারী দিবস’ পালন করার পরিবর্তে ‘বিশ্ব মানুষ দিবস’ পালন করার সুযোগও সৃষ্টি হবে বলে আমরা মনে করি।

তৃণমূলে স্থানীয় সরকার পরিচালনায় নারীর অংশগ্রহণ ও অবদান রাখার গুরুত্ব বর্ণনায় এ্যনি ফিলিপস্ বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার জন্য নারীরা খুব ভালোভাবে প্রস্তুত। স্থানীয় বিষয়ে তাদের বিশেষ স্বার্থ রয়েছে। তাঁরা স্থানীয় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আবাসিক ব্যবস্থা, শিশু পালন, বিভিন্ন সেবাখাত এবং পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে গভীর জ্ঞান রাখেন। এসব বিষয় স্থানীয় সরকারের দায়িত্বের অšতর্ভূক্ত বলে স্থানীয় সরকার পরিচালনায় নারীদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য।’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাইলে সকল স্থানীয় নির্বাচনের আগেই সমমর্যাদায় ১০০:১০০ প্রতিনিধিত্বে নরনারীর গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়নের সুপারিশগুলো বাস্তব রূপ দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। বিশেষ করে তৃণমূলে গ্রামীণ এলাকার ৪,৫০১টি ইউনিয়নে এবং নগরীয় এলাকার ৩১৬টি শহরে এই পদ্ধতিটি (১১ দফা সুপারিশের ৩, ৪, ৫ ও ৬ নং দফা) পাইলট প্রকল্প হিসেবেও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে পারেন। যদিও ইতোমধ্যে ১১ দফার ২নং দফা অনুসারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতে একজন মহিলা ডেপুটি স্পিকার নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন (আমরা মনে করি এটি চলতি জাতীয় সংসদে এখনই কার্যকর করা যেতে পারে) এবং সে সঙ্গে অন্যান্য ক্ষেত্রে ‘নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের’ কথা বলছেন; আশা করি, এমপো’র আলোকে উপজেলায় নির্বাচিত ৪৮১ জন মহিলা ভাইস চেয়ারপার্সন ও ৪৮১ জন পুরুষ ভাইস চেয়ারপার্সন তঁাঁদের প্রকৃত ক্ষমতা ও দায়িত্বও বুঝে পাবেন (১১ দফা সুপারিশের ৭ নং দফা)। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এসব আকাঙ্খার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেই বলব নারী সমাজের গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়নের আকাঙ্খা কেবল এমপো অনুযায়ী প্রণীত ১১ দফার পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই পূরণ করা সম্ভব। এমপো বাস্তবায়ন ফোরাম বাংলাদেশ আরও বিশ্বাস করে, ১১ দফা সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকেই নারীর গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়নের একটি মডেল কান্ট্রি হিসেবে বিশ্বে বিশাল মর্যাদা ও সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হবে; যার মধ্যে নোবেল পুরস্কারের মতো মহাসম্মানীয় মর্যাদাবান সুনাম অর্জনও হতে পারে বইকি। সম্মানিত সুধীবৃন্দ, এমপো বাস্তবায়ন ফোরামের পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। (এটি গত ২৪ ডিসেম্বর ২০১০ এ জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এমপো বাস্তবায়ন ফোরাম বাংলাদেশ আয়োজিত ‘১০০-১০০ প্রতিনিধিত্বে নারীর গণতান্ত্রিক ক্ষমতায়ন হলো একুশ শতকের মন্ত্র’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় পঠিত হয়।)


লেখকবৃন্দ: নূর-উর-নাহার মেরী, মুশতারী বেগম ও লাভলী ইয়াসমিন যথাক্রমে এমপো বাস্তবায়ন ফোরাম বাংলাদেশ এর আহবায়ক ও যুগ্ম আহবায়কদ্বয়। ফোন: ০১৭১৫১০৫৫৪৫; ইমেইল: ampobd@yahoo.com
Read More ... »
Widget By Devils Workshop
 

আজকের চাঁদ

CURRENT MOON

© 2009-2010 shibcharsangbad | Design by: Md. Abul Hossain Miah

^ উপরে আসুন