23 April 2010 :: 11:21am
শিবচর উপজেলার পদ্মানদী বেষ্টিত চরজানাজাত ইউনিয়নের আবদুল মজিদ বেপারীর কান্দি গ্রামে আবদুল কুদ্দুস শিকদারের ষষ্ঠ শ্রেণী পড়ুয়া মেয়ে সারমিন আক্তার (১৩) একই ইউনিয়নের আলতাফ খানের ছেলের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার বিয়ের দিন ঠিক করা হয়। গত দুইদিন থেকে বিয়ে বাড়ির ধুম ধাম চলে। বিয়ের দিন পোলাও, মাংস, মাছ, মিষ্টান্নসহ সকল ধরনের রান্না প্রায় শেষ। নিকটাত্মীয় স্বজনেরা এসেছে বিয়ে বাড়িতে। কিছুক্ষণের মধ্যে বর আসবে। এর মধ্যে মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কারণে বিয়ে বন্ধের জন্য বাঁধা হয় শিবচর উপজেলা প্রশাসন।
পারিবারিক ও থানা সূত্রে জানা যায়, শিবচর উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের আব্দুল মজিদ বেপারি কান্দি গ্রামের আবদুল কুদ্দুস শিকদারের মেয়ে ইলিয়াস আহম্মেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্রী মোসাম্মৎ সারমিন আক্তার (১৩) সঙ্গে একই ইউনিয়নের আলতাফ খানের ছেলে তোফাজ্জেল খান (২২) এর সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়। গত বৃহস্পতিবার (২২-০৪-১০) ছিলো বিয়ের ধার্য করা তারিখ। কিন্তু আপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে ব্যাপারটি এলাকার একটি সচেতন মহল শিবচর উপজেলা প্রশাসনকে জানায়। গতকাল দুপুরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানা ও উপজেলা লিগ্যাল এইড এসোসিয়েশনের সহায়তায় বিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়।
অপ্রাপ্ত কনের মা মোসাঃ রুনা বেগম বলেন, “পোলাও, মুরগীর রোস্টসহ রান্না প্রায় শেষ হইয়া গেছে। বাকি আছিলো মাংস আর মিষ্টান্ন। কিন্তু তার মধ্যে খবর পাইলাম মাইয়ারে বিয়া দেওয়া যাইবো না। আমরা আগেই জানতাম মেয়ের বিয়া বয়স হয় নাই। কিন্তু তার পরেও মেয়েকে বিয়া দেওয়া জন্য রাজি হই। কারণ এলাকার কিছু ছেলেরা আমার মেয়েটে জ্বালাতন করতো। এবং মেয়ের বাবা বিদেশে চলে যাবে। আমি একা বাড়িতে থাকবো তাই বিয়া দিতে চাইছিলাম।”
চরজানাজাত ইলিয়াস আহম্মেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান মাহমুদ বলেন, মেয়েটি আমাদের বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। মেয়েটি মেধাবী কিন্তু কেন যে বাবা-মা বিয়ে দেওয়া জন্য রাজি হলো বুঝতে পারি না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গত বুধবার রাতে চরজানাজাত ইউনিয়নের বেপারী কান্দির এলাকাবাসীর কাছ থেকে মোবাইলের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারি। পরে শিবচর উপজেলা চেয়াম্যান, শিবচর থানা ও উপজেলা লিগ্যাল এইড এসোসিয়েশনে ফোন করে তাদের অবগত করি। মেয়েটি মাত্র ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক তাই বৃহস্পতিবার সকালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে লোক পাঠিয়ে বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে।