(২৪ জুন, ২০১০) :: ওজন পরিমাপক যন্ত্র না থাকার সুযোগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শত শত ওভারলোড ট্রাক নিয়ে লক্কর ঝক্কর ফেরিগুলো চরম ঝূঁকি নিয়ে প্রতিদিন মাওয়া-কাওড়াকান্দির উত্তাল পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। ফলে যেকোন সময় বড় ধরনের প্রাণহানির শংকা করছেন খোদ সংশ্লিষ্টরা।
বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, যমুনাসেতু ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ওজন পরিমাপক (ওয়েট স্কেল) থাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অতিরিক্ত বোঝাই ট্রাকসহ ভারী যানবাহনগুলো কাওড়াকান্দি-মাওয়া রুট বেছে নিয়েছে। পণ্যবাহী প্রায় যানবাহনগুলোই ২০ থেকে ৩০ টন পর্যন্ত মালামাল নিয়ে ফেরিগুলোতে উঠে দীর্ঘ পদ্মা পারাপার হয়। সূত্র আরো জানায়, আন্তজার্তিক মেরিনটাইপ সংস্থার (আইএমও) কোড অনুযায়ী বাংলাদেশে চলাচলরত ফেরিগুলো ৩০ বছর চলার কথা থাকলেও মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটের ফেরিগুলো অতি পুরাতন ও মেয়াদোত্তীর্ণ। এরমধ্যে ১৯৬৩ সালে মিডিয়াম টাইপ ফেরি যশোহর; ফ্লাট ফেরিগুলোর মধ্যে ১৯৩৮ সালে থোবাল ও যমুনা; ১৯২৫ সালে রানীক্ষেত, রায়পুরা, রানীগঞ্চ ও টাপলো; ১৯৭৩ সালে ফেরি কেটাইপ কুমারী, কামিনী ও ১৯৬৩ সালে ভিভিআইপি ফেরি কর্ণফুলী নির্মিত হয়েছিল। ফলে অতিরিক্ত বোঝাইয়ের কারণে প্রায়শই ফেরিগুলোর ইঞ্জিন ও পল্টুনের ডেক প্লেট, র্যাম্প, ফেরির ঢালা ও পাটাতন, র্যাম্পের কব্জাসহ গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে ফেরিগুলো বিকল হয়ে যায়।
কাঠবোঝাই ট্রাক ড্রাইভার ইদ্রিস মিয়া বলেন, যমুনায় ও আরিচা রুটে ওজন মাপার মেশিন থাকায় আর এই ঘাটে কোন বাঁধা না থাকায় আমরা ভারী ট্রাক নিয়া সবসময়ই মাওয়া দিয়াই পার হই।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড মাস্টার ওয়েলফেয়ার এসোশিয়েশনের (ফেরি চালকদের সংগঠন) সভাপতি ইদ্রিস হোসেন সিরাজী বলেন, এ রুটের পুরাতন ফেরিগুলো চরম ঝূঁকি নিয়ে ২৫-৩০ টনের ট্রাকগুলো নিয়েই সবসময় ১৭ কিলোমিটার দূরত্বের দীর্ঘ পদ্মা পার হই।
বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক আশিকুজ্জামান বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উভয় পাড়ে ওজন পরিমাপক যন্ত্র না থাকার সুযোগে ২৫-৩০ টনের ট্রাকগুলো নিয়ে সবসময় পারাপার হওয়ায় ফেরিগুলোও প্রতিনিয়ত মেরামত করে পরিচালনা করতে হচ্ছে। ওজন পরিমাপক যন্ত্রের সাথে সাথে যানবাহন সংশ্লিষ্টদের সচেতন হতে হবে।
