মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি ও মুন্সীগঞ্জের মাওয়া এ দুই ঘাটের সিবোট চালকের সঙ্ঘর্ষের সমঝোতা বৈঠকে আবার বিবাদ হওয়ায় আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। মাওয়া থেকে ছেড়ে আসা কোনো লঞ্চ, স্পিডবোটকে কাওড়াকান্দি ঘাটে ভিড়তে দেয়া হয়নি। ফলে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রী।
জানা গেছে, গতকাল রোববার স্পিডবোট চলাচলের সিরিয়ালকে কেন্দ্র করে চালকদের মধ্যে সঙ্ঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন। আজ সোমবার সকালে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাটে সমঝোতা বৈঠকে যোগ দিতে যান কাওড়াকান্দি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি আতাহার বেপারী, স্পিডবোট চালক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হাওলাদার। এ সময় মাওয়া ঘাটের লোকজন সমঝোতা বৈঠকে বিবাদের জের ধরে তাদের ধাওয়া করে। পুলিশের সহায়তায় স্পিডবোট চালক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হাওলাদার রক্ষা পেলেও লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি আতাহার বেপারীকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে মাওয়া ঘাটের শ্রমিক ও চালক নেতারা। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ দিকে কাওড়াকান্দি ঘাটে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মাওয়া থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাটে ভিড়তে বাধা দেয় চালক, শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজন। ফলে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী হাজার হাজার যানবাহন পাড়ে আটকা পড়ে আছে। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রী।
শিবচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট আসাদুল ইসলাম জানান, গতকাল রোববার স্পিডবোট চালকদের সাথে সঙ্ঘর্ষের মীমাংসা করার জন্য আজ সকালে কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি ও স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মাওয়া ঘাটে গেলে তাদের তিনজনকে মাওয়া ঘাটের স্পিডবোট শ্রমিকরা মারধর করে। পরে এ ঘটনার জের ধরে কাওড়াকান্দি ঘাটে স্পিডবোট ও লঞ্চ শ্রমিকরা সকাল ১০টা থেকে ঢাকা-খুলনা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। মাদারীপুর পুলিশ সুপার সরদার তমিজউদ্দিন আহমেদ, পুলিশ ফোর্স ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আজ সন্ধ্যায় কাওড়াকান্দি ও মাওয়া ঘাটের উভয় পাড়ের লঞ্চ ও স্পিডবোট মালিক সমিতির সাথে প্রশাসনের জরুরি বৈঠক হবে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে গুরুতর আহত কাওড়াকান্দি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি আতাহার বেপারীর ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তিনি বলেন, সমঝোতার কথা বলে স্পিডবোটের শ্রমিকরা আমাদের ডেকে নিয়ে মারধর করে। গরম পানি দিয়ে আমার নাভির নিচের অংশ পুড়িয়ে দেয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল জানান, মাওয়া ঘাটে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্খা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে লৌহজং থানায় মামলা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের এএসপি সার্কেল সাইফুজ্জামান ফারুকী জানান, তাদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে।
রোববার সকালে মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি ও মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাটের স্পিডবোটের সিরিয়াল দেয়াকে কেন্দ্র করে দুই পাড়ে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে এরশাদ ও তোতাসহ ১০ জন স্পিডবোট চালক আহত হন।

