06 May 2010 :: 11:21am
শিবচরের চরাঞ্চলে এবার কাওলিপাড়া বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে অন্তত ১২শ’ বিঘার ধান। পানিতে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকার বোরোর মাঠ,বাদামের ক্ষেত। বিশেষ করে চরাঞ্চলের একমাত্র ফসল হারিয়ে কৃষকের ঘরে ঘরে হাহাকার নেমে এসেছে। জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্লাবণকে চরাঞ্চলের কৃষকদের জন্য মহাবিপর্যয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ধার-কর্য বা ঋণের টাকা পরিশোধের চিন্তায় কৃষকের ঘরে এখন শুধু বিষন্নতা।
সরেজমিনে চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে,গতকাল বুধবার সকালে চরজানাজাত ও কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের কাওলিপাড়া বাঁধ ভেঙ্গে অন্তত ১২শ বিঘার ধান নিমিষেই তলিয়ে যায়। পদ্মাবেষ্টিত এ চরাঞ্চলের ৪টি ইউনিয়ন মাদবরচর,চরজানাজাত,বন্দরখোলা,কাঁঠালবাড়ির ১০ হাজার কৃষকের অন্তত ১৫ হাজার বিঘার বোরো ধান ও আড়াই হাজার বিঘার বাদাম পানিতে তলিয়ে গেছে। গত ৩ দিনে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ও পূর্ণিমার প্রভাবে পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়ে চরাঞ্চলের একমাত্র ফসল হারিয়ে কৃষকের ঘরে ঘরে আহাজারি নেমে এসেছে। পানি বৃদ্ধির গতি অস্বাভাবিক হওয়ায় হাজার হাজার বিঘার জমির কাচা ধান পানির নিচেই রয়ে গেছে। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠের উপর দিয়ে এখন ট্রলার ও নৌকা চলতে দেখা গেছে। একদিকে ধান ও ফসল হারানো অপরদিকে মহাজন,ব্যাংক ও এনজিওদের ঋণের টাকা পরিশোধের চিন্তায় বিমর্ষ হয়ে পড়েছে। কৃষক ও পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে চরাঞ্চলজুড়ে হাহাকার নেমে এসেছে। চরাঞ্চলের জনপ্রতিনিধিরা এ সংকটকে কৃষকের জন্য চরম বিপর্যয় বলে আখ্যা দিয়ে দ্রুত সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
মাদবরচরের হাফিজ মিয়া বলেন,এ বছর আগেভাগে পানি আহায় আমাগো চরের হাজার হাজার বিঘার ধান ও বাদাম তলাইয়া গেছে। এবার আমরা পুলাপাইন নিয়া কি খামু? ধানই পামু কই? ধার বা ঋণের টাকাই বা দিমু কইর থিকা? আল্লায় জানে। দয়া কইরা আমাগো বাঁচান।
চরজানাজাত ইউপি চেয়ারম্যান বজলু সরকার বলেন, এই চরের চারটা ইউনিয়নের প্রায় লাখো মানুষ এই ধান ও বাদামের উপর নির্ভরশীল। বাকি সময় এই জমিতে পানি থাকে। তাই ফসল হারিয়ে কৃষকদের ঘরে এখন শুধু হাহাকার।
মাদবরচর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়ায় চরের হাজার হাজার বিঘার প্রতিদিন ধান ও বাদাম এখন পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান বলেন, চরাঞ্চলসহ সারা উপজেলার ধানসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে চরের কৃষকের এক্ষতি তাদের জন্য চরম সংকট আকারে দেখা দিবে। কারণ এ ফসলের উপরই মূলত হতদরিদ্র এ মানুষগুলো নির্ভরশীল। চরে হাহাকার নেমে আসবে।
