সাইট উন্নয়নে আপনাদের লেখা ও পরামর্শ চাচ্ছি-সম্পাদক

২১ লিটার ফেন্সিডিলসহ তিন মহিলা মাদক ব্যবসায়ী আটক

সোমবার (৩১ আগস্ট) রাত ৯টায় শিবচর হাইওয়ে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাওড়াকান্দি ফেরিঘাট এলাকা থেকে ২১ লিটার ফেন্সিডিলসহ ৩ মহিলা মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। পুলিশ জানায়, যশোর থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে মহিলা মাদক ব্যবসায়ীরা ফেরির অপেক্ষায় কাওড়াকান্দি ফেরি ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকে। পুলিশ সন্দেহ করে রোজিনা (৩০), জাবেদা খাতুন (৪৫), বরকাতুন্নেছা (৪৮) এর হাতে থাকা তিনটি ব্যাগে তল্লাসি চালিয়ে পলিথিনে মোড়ানো ২১ লিটার ফেন্সিডিল উদ্ধার করে। পরে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়ি যশোর সদর থানার নারায়ণপুর গ্রামে। এই ব্যপারে শিবচর থানায় মাদক দ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

শিবচরে ডাকাতি ২ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট

রবিবার রাত একটায় শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের সাদেকাবাদ গ্রামে মোতালেব মাদবরের বাড়িতে এক দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। জানা যায়, ১০/১২ জনের শসস্ত্র ডাকাতদল জানালার গ্রিল কেটে মোতালেব মাদবরের ঘরে প্রবেশ করে সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ২৩ হাজার টাকা, ২টি মোবাইল সেটসহ প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
Read More ... »

২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত চরমপন্থী সদস্য গ্রেফতার

শনিবার (২৯ আগস্ট) রাত ৯টায় শিবচর থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উমেদপুর ইউনিয়নের কাচিকাটা গ্রাম থেকে ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী চরমপন্থী দলের সক্রিয় সদস্য মোহাম্মাদ আলী হোসেন সরদার (৩২) কে গ্রেফতার করেছে। জানা যায়, সাজাপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি আলী হোসেন সরদার কাচিকাটা গ্রামে তার বাড়ির আঙিনায় বসে সহযোগীদের নিয়ে আড্ডা দেওয়ার সময় পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, ২০০৬ সালে ঢাকার ডেমরা থানার একটি অস্ত্র মামলায় মহানগরীয় জজকোট চরমপন্থী আলী হোসেন সরদারের নামে ২৭ বছরের সাজা ঘোষণা করে। পরে সে ৩ বছর ফেরারি অবস্থায় ছিল। গ্রেফতারকৃত আলী হোসেন সরদার উমেদপুর ইউনিয়নের কাচিকাটা গ্রামের কালু সরদারের ছেলে। তার নামে শিবচর, ডেমরা ও মুন্সিগঞ্জ থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও খুনসহ ৭টি মামলা রয়েছে।
Read More ... »

কুয়েত শিবচর প্রবাসী সমবায় সমিতির আত্মপ্রকাশ ও ইফতার-দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

শেখ এহছানুল হক খোকন (কুয়েত থেকে)॥ গত ২৭ আগস্ট কুয়েত সিটির গুলশান হোটেলে শিবচর প্রবাসী সমবায় সমিতির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়। সমিতির সভাপতি মোঃ সোহবার হোসেন খলিফার সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন- আতাউল গণি মামুন, অন্যতম সংগঠক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী; বিশেষ অতিথি শেখ আকরামুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু পরিষদ; নেকমোহাম্মদ, সমিতির উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সম্মিলিত মিডিয়া গ্রুপ কুয়েত; আকবর হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী; অলিউল্লাহ্ খালাসী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী; মোঃ ইয়াকুব, বুর‌্যো চীপ আজকের সূর্যোদয়; বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট আলী আজম; প্রকৌশলী কাজী মঞ্জুরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কুয়েত; মনির হোসেন মন্টু, সভাপতি ঋতুরঙা শিল্পী গোষ্ঠী; মইন উদ্দিন মইন, সভাপতি সবুজ বাংলা সাংস্কৃতিক জোট; আব্দুল লতিফ, বিএনপি নেতা; আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিন, সভাপতি জাতীয় পার্টি; ইসমাইল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাতীয়পার্টি; আল-আমিন চৌধুরী স্বপন, বিএনপি নেতা; সাংবাদিক শেখ এহছানুল হক খোকন; ইমতিয়াজ, প্রতিনিধি আজকের সূর্যোদয়; কবি জাহাঙ্গীর হোসেন বাবলু সহ সামাজিক, রাজনৈতিক ও দুর দুরান্ত থেকে আগত দুই শতাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শিবচর প্রবাসী সমবায় সমিতির সহ সভাপতি ফোরহাদ আলী খলিফা, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল ইসলাম (বাচ্চু) ও সদস্যদের মধ্যে মোঃ সাইফুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, মাসুদ মাতবর, সহিদ উল্লাহ খালাসী, এম.এ মান্নান মিয়া, উজ্জ্বল হোসেন, ফারুল মোড়ল, হাফেজ খলিফা, মোক্তার হোসেন, শরিয়ত উল্লাহ খালাসী, রফিকুল ইসলাম, মাসুদ হাওলাদার, সরোয়ার হোসেন, মোঃ মাদুস আলী, মুছলেম তালুকদার, নওসের আলী, মাসুদ খান, আব্দুর রাজ্জাক ফকির, আঃ বারেক মিয়া, মিজানুর রহমান, সুরুজ মিয়া তালুকদার, মহতাব খান, ওমর ফারুক, মজিবর সিকদার, রাখিতুল্লাহ ভূইয়া, আক্কাছ বেপারী, মোঃ রাফি সহ কর্মকর্তা ও সকল সদস্যের উপস্থিতি ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ আলোচনা প্রবাসের মাটিতে উৎসাহ ও প্রেরণার সঞ্চার করে। মাওলানা ইসমাইল হোসেনের দোয়া মাহফিলে শিবচর প্রবাসী সমবায় সমিতি সহ সকল প্রবাসী মুসলামানদের জন্য দোয়া করেন। ইফতারের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।


Read More ... »

৫০ বোতল বাংলা মদ উদ্ধার : স্বামী-স্ত্রীসহ আটক তিন

বুধবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১২ টায় শিবচর থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৌরসভার জেলখানা রোড থেকে ৫০ বোতল বাংলা মদসহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। জানা যায়, কাওড়াকান্দি ফেরিঘাট এলাকা থেকে একটি ভ্যানযোগে কাদির মাদবর (২৮), ইকবাল মাদবর (৩২) ও তার স্ত্রী রুবিনা (৩০) জেলখানা রোড দিয়ে তাদের নিজ বাড়ি বহেরাতলা ইউনিয়নের দাইকান্দি যাবার পথে শিবচর থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের কাছে থাকা ২টি ব্যাগে তল্লাসি চালিলে ৫০ বোতল বাংলা মদ উদ্ধারসহ তাদেরকে আটক করে। আটককৃত কাদির মাদবর ও ইকবাল মাদবর বহেরাতলা ইউনিয়নের দাইকান্দি গ্রামের চান মিয়া মাদবর ও করিম মাদবরের ছেলে। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

আখক্ষেত থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় গুলি ও অস্ত্র উদ্ধার

মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বেলা ১১ টায় উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের চরচান্দ্রা এলাকার একটি আখক্ষেত থেকে র‌্যাব ৩ রাউন্ড গুলি ও ১টি পাইপগান উদ্ধার করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৮ মাদারীপুরের ডিএডি শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের চরচান্দ্রা গ্রামের কাসেম মুন্সীর একটি আখেক্ষেতের ভেতর থেকে পলিথিনে মোড়ানো ৩ রাউন্ড গুলি ও ১টি দেশীয় তৈরি পাইপগান উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ডাকাত আটক

সোমবার (২৪ আগস্ট) মধ্যরাতে উপজেলার পাঁচ্চর কৃষি ব্যাংকের জানালার গ্রিল কেটে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ব্যবসায়ীরা ধাওয়া করে ফয়জল ফরাজী (২৫) নামে এক ডাকাতকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
জানা যায়, ৫/৬ জনের ডাকাতদল সোমবার মধ্যরাতে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, পাঁচ্চর শাখার জানালার গ্রিল কেটে ব্যাংকে প্রবেশের সময় নৈশপ্রহরী হোসেন হাওলাদার ডাকাতদের উপস্থিতি টের পেয়ে শোরগোল শুরু করে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নৈশপ্রহরীর চিৎকার শুনে ডাকাতদের ধাওয়া করে ফয়জল ফরাজী নামে একজনকে আটক করে পরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। আটককৃত ডাকাত ফয়জল পাঁচ্চর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের লাল মিয়া ফরাজীর ছেলে। এ ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

মোটরসাইকেল চাপায় জেলে নিহত

শনিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৮ টায় শিবচর-পাঁচ্চর সড়কের নলগোড়া এলাকায় মোটর সাইকেল চাপায় জেলে সাধু মালো (৫২) নিহত হয়েছে। শিবচর থেকে একটি মটর সাইকেল কাওড়াকান্দি ফেরিঘাটে যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাধু মালোকে রাস্তার উপর চাপা দেয়। মুহুর্তে সাধু মালো রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে। এলাকাবাসী তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথম শিবচর হাসপাতাল পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। ঘটনার পর মটর সাইকেল আরোহী গাড়িসহ পলাতক রয়েছে। নিহত সাধু মালো শিবচর পৌরসভার নলগোড়া এলাকার রামকৃষ্ণ মালোর ছেলে।
Read More ... »

শ্বশুর-শাশুড়ির হাত-পা বেধে গৃহবধুকে অপহরণ

আজ (২২ আগস্ট) রাত ১টায় শিবচর উপজেলার চর জানাজাত সামাদ চৌধুরীকান্দি গ্রামে শ্বশুর-শাশুরির হাত-পায়ে রশি বেধে পুত্রবধুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ঘরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও সাংসারিক অন্যান্য মালামাল দুর্বৃত্তরা লুট করে নিয়ে যায়।
জানা যায়, ১০/১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত ঘরের কপাট ভেঙ্গে শফর উদ্দিন উকিল (৬০) ও তার স্ত্রী রাশিদা (৪৫) কে হাত-পা রশি দিয়ে বেধে পুত্রবধু আকলিমা (২২) কে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় ঘরে থাকা ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৫০ হাজার টাকা, ২টি মোবাইল সেটসহ সাংসারিক অন্যান্য মালামাল লুট করে দুর্বৃত্তরা চলে যায়। উক্ত ঘটনার সময় অপহৃত আকলিমার স্বামী জয়নাল উকিল ঢাকায় ছিল। শফর উকিল ও তার স্ত্রীর আর্ত্ম চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে তাদের হাত-পায়ের রশি খুলে উদ্ধার করে। পুলিশ চর জানাজাতের বিভিন্ন স্থানে তল্লাসি চালিয়ে এখন পর্যন্ত অপহৃত আকলিমার হদিস পায়নি। শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল জানান, উক্ত ঘটনাটি প্রেমঘটিত ব্যাপার হতে পারে। মেয়েটির হদিস পাওয়া গেলে ঘটনার সত্যতা বেড়িয়ে আসবে।
Read More ... »

বিয়ে বাড়ির আনন্দ শোকাবহ বিষাদে পরিণত ॥ আড়িয়াল খাঁ নদে বর-কনের ট্রলার ডুবি : নিখোঁজ ৮

বুধবার (১৯ আগস্ট) রাত ৯টায় শিবচর উপজেলা দত্তপাড়া খাড়াকান্দি গ্রামে বর মওলা মাদবরের বাড়িতে বিয়ের আনন্দ এক বেদনা-বিধুর শোকাবহ বিষাদে পরিণত হয়েছে। সন্ন্যাসীরচর পুরাতন ফেরিঘাট এলাকার বর ও কনে বহনকারী ৫৩ জন যাত্রীসহ ট্রলারটি আড়িয়াল খাঁ নদে নিমজ্জিত হলে ৫৩ জন যাত্রীর মধ্যে ৪৫ জন সাঁতার কেটে পাড়ে উঠতে পারলেও এরমধ্যে ৮ জন নিখোঁজ রয়েছে।
জানা যায়, গত বুধবার বিকেলে দত্তপাড়া খাড়াকান্দি এলাকার রহমান মাদবরের ছেলে বর মওলা মাদবর চর মানাইর এলাকার মান্নান ফকিরের মেয়ে রিনা (২২)র সহিত বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ট্রলারযোগে আড়িয়াল খাঁ নদ দিয়ে তার বাড়ি দত্তপাড়ায় রওয়ানা করলে পুরাতন ফেরি ঘাটের কাছে বিপরীত দিক থেকে আসা বালি বোঝাই একটি ট্রলারে ধাক্কা লেগে বর-কনের ট্রলারটি ডুবে যায়। এতে বর ও কনেসহ ৪৫ জন যাত্রী সাঁতার কেটে পাড়ে উঠলেও ৮ জন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজেরা হল- দেলোয়ার শেখের ছেলে কামরান (৭), নুরু মাদবরের মেয়ে বর্ষা (৭) ও বৃষ্টি (৫), মান্নান মাদবরের ছেলে হাসান (৮), টুকু ফরাজীর ছেলে মিজান (৯), বারেক ফরাজী (৮১), হান্নান মাদবরের মেয়ে সোমা (৫) এবং ছামাদ শেখের ছেলে আলমগীর (৩৫), এদের বাড়ি দত্তপাড়া ইউনিয়নের খাড়াকান্দি গ্রামে। বুধবার মধ্যরাত থেকে ৫টি ট্রলার দিয়ে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও নিখোঁজদের সন্ধান এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
Read More ... »

নিউইয়র্ক

মীজান রহমান

দু'সপ্তাহের উপর হয়ে গেল আমি ক্যানাডার বাইরে। শীতের পাখিদের মত উড়ে এসেছি দক্ষিণের ঊষ্ণতায়। নিউইয়র্কে আমার মেয়ে উর্বি, ক্যালিফোর্নিয়ায় বড় ছেলে বাবু। এ-ঊষ্ণতার জুড়ি নেই। প্রথম মাসটি নিউইয়র্কে, পরেরটি ক্যালিফোর্নিয়ায়। এক উপকূল থেকে আরেক উপকূলে। নিজেকে কল্পনা করি এক উড়ুক্কু পারাবতের মত---এক মহাসাগরের বার্তা বয়ে যাচ্ছি আরেক মহাসাগরের কাছে।
বেশ আছি এখানে। সীমাহীন আরাম। রান্নাবান্না নেই, কাপড়ধোয়া নেই, বিছানা করা নেই, ধূলা মোছা নেই, এমনকি দুপুরে যে ফলমূল খাই সেগুলোও উর্বি অফিসে যাবার আগে কেটে রেখে যায় আমার জন্যে---মানা শুনবার মেয়ে নয় সে। এখানে আমার কোনও কাজ নেই। অটোয়াতে কাজ আমাকে খুঁজে বেড়াত সারাক্ষণ, অন্তহীন কাজ। এখানে আমি কাজকে খুঁজি অন্তহীন অবসরের মাঝে। সময় কাটাই বই পড়ে। লেখালেখি করি একটু-আধটু, যৎকিঞ্চিৎ গণিতচর্চাও করতে হয়। সারাদিন একা একা বাসায় থেকে আর আছেই বা কি করার। ওরা দুজনই চাকরিজীবি---উর্বি নিউইয়র্কের পৌর-প্রকৌশলী, জীবন প্রযুক্তিবিশারদ। উদিতা, ওদের একমাত্র সন্তান, গ্রেড এইটের ছাত্রী। তিনজনই কাজ নিয়ে ব্যস্ত, আমিই কেবল কাজশূন্যতার হালকা হাওয়াতে দুলছি। টেলিভিশন আছে চোখের সামনে, দেখিনা। টেলিভিশন আমি প্রায় কখনোই দেখিনা। ছেড়ে রাখি, তাকাইও বা মাঝে মাঝে, কিন্তু দেখিনা। শব্দটা সঙ্গ দেয়, পর্দার আলোটা কল্পনাকে সজাগ রাখে। এখানে আমি তা'ও করি না। দরকার হয়না। এখানে সেই সুক্ষ্ম নৈঃশব্দটি নেই। গ্রীবা তুলে তাকালেই নগরের ব্যস্ত জীবন তীরের মত ছুটে চলে চোখের সামনে। এখানে আমি হেমন্তের পাতাঝড়ার শব্দটিও শুনতে পাইনা, সব চাপা পড়ে যায় গাড়ির চাকার নিচে। বিকেলবেলা যখন হাঁটতে বেরুই রাস্তায়, তখন মনে হয় যেন আমার পায়ের কোন শব্দ নেই, এই যে হঠাৎ হঠাৎ শালিকেরা উদয় হয় ঝোপের আড়াল থেকে, কখনোবা নভেম্বরের বাউল বাতাস ঝটকা বেগে দোলা দিয়ে যায় গাছেদের, তাদেরও কোন শব্দ শোনেনা কেউ। সব শব্দকে পিষে মারছে নগর তার চাকার তলায়।
নিউইয়র্ক বিশাল শহর। 'বিশাল'এর চেয়ে বিশালতর কোনও শব্দ আমার জানা নেই যা দিয়ে বর্ণনা করতে পারি একে। দৈর্ঘ্যে প্রস্থে উচ্চতায়, ধনে জনে সম্পদে----বিশাল। বিপুল। যেদিকে তাকাই সেদিকেই বিস্ময়, বিশ্বজয়ী মানবচিত্ত এখানে স্রষ্টার আসন অধিকার করেছে। চারিদিকে কেবল মানুষেরই জয়জয়কার। দালানগুলো আকাশ দখল করেছে, সুড়ঙ্গগুলো পাতাল দখল করেছে, সেতুগুলো বশ করেছে ক্ষুরধার জলধারাকে। এ-শহরে মানুষ আসে স্বপ্ন নিয়ে----ছোট মানুষ, বড় মানুষ, স্বল্পধী, তীক্ষ্ণধী, ধীহীন শ্রীহীন সর্বরকম মানুষই এখানে আসে রাশি রাশি স্বপ্ন নিয়ে। এ-শহর স্বাপ্নিকের শহর, কল্পনা ও নির্মাণের শহর। সৃষ্টির ফোয়ারা বয় এখানে। দেশবিদেশের স্বাপ্নিক মানুষ এখানে আসে সাফল্যের সোনালি কল্পনা নিয়ে। নিউইর্কের এই যে বিপুল বিস্তার, এ তো সেই স্বপ্নেরই সোনালি ফসল। আবার ভাল করে তাকালে দেখা যাবে এখানেই কত অজস্র ভাঙ্গা স্বপ্নের কঙ্কাল ছড়ানো সর্বত্র। ভাগ্যলক্ষ্মী কারো জন্যে রচনা করেছে সাফল্যের স্বর্ণদ্বার, কারোবা ব্যর্থতার সীমাহীন অন্ধকার। পৃথিবীর যত সুখ এখানে, যত দুঃখ এখানে। এ-শহরে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠদের বাস, পৃথিবীর যারা হীনতম তাদেরও। বৃহত্তম আর ক্ষুদ্রতম দুয়েরই সহাবস্থান এ-শহরে। পৃথিবীর পরম সুন্দর এখানে, চরম কুৎসিৎও এখানেই। পরম বিস্ময় আর চরম বিস্মরণীয়ও এখানেই। চরম নিষ্ঠুরতার দৃশ্য যেমন দেখা যাবে সর্বত্র তেমনি দেখা যাবে পরম করুনারসের অবারিত প্রবাহ। নিউইয়র্ককে দেখতে চাইলে 'মেড ইন চায়না' যন্ত্র নিয়ে আসবেন না, আসবেন ভেতরের চোখদুটি নিয়ে । এ-শহরের রহস্য বুঝতে হলে আপনার নিজেরও খানিক রহস্য থাকা প্রয়োজন।


এই রহস্যভরা বিশাল শহরেই সুখের সংসার আমার তিনটি প্রিয় মানুষের----উর্বি-জীবন-উদিতা। ছোট্ট বাসা তাদের, নগরকেন্দ্র থেকে নিরাপদ দূরত্বে, স্ট্যাটেন আইল্যাণ্ড নামক এক তরুছায়াচ্ছন্ন নীলাভ দ্বীপের ওপর, যেখানে রাতের বেলা কান পেতে থাকলে আটলান্টিকের গাঢ় নিঃশ্বাস শোনা যায়। ওদের জীবন প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের এক সুবর্ণ মোহনা। সপ্তাহের প্রতিটি কাজের দিন তারা বাস করে ইংরেজিভাষী জগতে----এক শব্দ বাংলা বলার উপায় নেই। উদিতার স্কুলেও তাই। বিকেলে বাড়ি ফেরার পর ওরা বাংলাদেশে চলে যায়----বাংলা ছাড়া অন্য কোন ভাষায় তারা কথা বলেনা নিজেদের মধ্যে। শনি-রোববারও তাই। এই একটি পরিবার উত্তর আমেরিকায় (বিরল হলেও নিশ্চয়ই আরো অনেক পরিবার আছে এরকম) যাদের কাজের জীবন এক জগতে, ঘরের জীবন আরেক জগতে। এবং দুই জীবনেই তারা সমান সুখি ও স্বচ্ছন্দ্। তাদের বাংলা যেমন ত্রুটিহীন, ইংরেজিও নিখুঁত। এদিকে সাংস্কৃতিক জীবনও কানায় কানায় পূর্ণ। জীবনের পেশা যদিবা প্রযুক্তি, প্রাণ তার গানের সুরেতে আঁট করে বাঁধা। কৈশোর থেকেই সে সুরের পাগল। গান লেখে, সুর দেয়, নিজে গায়ও----বাংলার পরমধন্য পঞ্চকবির সনাতন ধারায়। কর্মজীবনে অবসর তার বিরল, তবুও যেটুকু বিরতি কর্ম আহার আর নিদ্রার ফাঁকে, তার সবটুকুই সে সঁপে দেয় সুরদেবতার পাদমূলে। কখনো গান, কখনো বাঁশি, কখনো গীটার, কখনোবা কীবোর্ড। দেশে থাকলে এতদিনে শীর্ষতারকার স্থান দখল করে নিত নিঃসন্দেহে।
ওদিকে উর্বিও ছাড় দেবার পাত্রী নয়। ওর নেশা হল অভিনয়। নিউইয়র্ক শহরের বাঙ্গালি পাড়ায় এমন কোনও নাট্যগোষ্ঠী নেই যারা উর্বির খবর জানেনা এবং তাদের কোনও অনুষ্ঠানাদিতে ওর অংশগ্রহণ কামনা করেনা। এত যে তার ব্যস্ততা ( সকাল চারটেয় ঘুম থেকে উঠে পাঁচটার মধ্যে অফিসে পৌঁছানো , যাতে আড়াইটায় মেয়েকে স্কুল থেকে তুলে বাড়ি ফিরতে পারে), তবুও নাটকের শঙ্খধ্বনি শোনামাত্র তার মন ময়ূরের মত নেচে ওঠে। নাওয়া খাওয়া ছাড়তে হলেও সে পাগলের মত ছুটে যায় যেখানে যাওয়া দরকার। 
হয়ত ভাবছেন, এতকিছু করার সময় পায় কি করে তারা। তাহলে বলি এতকিছু করার পর তারা কি করে। প্রতি রোববার সকাল সোয়া দশটায় গাড়িবোঝাই রসদপত্র ( হারমোনিয়াম, খাতাপত্র, পানির বোতল, কোকের বোতল অনেকগুলো, মোয়াসিঙ্গারা জাতীয় কিছু খাদ্যসামগ্রি) নিয়ে ত্রিশ মাইল দূরের বাঙ্গালিপাড়া, অর্থাত্‌ কুইন্সের জ্যাক্সন হাইটসের দিকে রওয়ানা হয়। পৌনে বারোটা নাগাদ তারা ৭৩তম স্ট্রীট আর ৩৪তম এভিনিউর মোড়ে অবস্থিত সরকারি স্কুলটির ধারে এসে পার্ক করে। স্কুলের দরজা খোলা হয় ১২টার দুচার মিনিট আগে। আস্তে আস্তে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আসতে শুরু করে তাদের বাবা-মায়েদের হাত ধরে। শুরু হয় 'উদীচী স্কুলের' বাংলাশিক্ষার সাপ্তাহিক পরিক্রমা। কেবল বাংলা ভাষাই নয়, সংস্কৃতিও। গান, নৃত্য, অঙ্কন, নাটক----সবই কিছু কিছু শেখানো হয় সেখানে। প্রথম পর্বে ছাত্র-শিক্ষক সবাই জড় হয় বড় হলঘরটিতে (শিক্ষকদের বেশির ভাগই কার্যত অবৈতনিক, ছাত্রদের কাছ থেকে নামমাত্র যেটুকু মাসোহারা পাওয়া যায় তাতে শিক্ষকদের বেতন দেওয়া দূরে থাক, প্রয়োজনীয় খরচপত্রগুলোও মেটানো শক্ত )। অধ্যক্ষ জীবন বিশ্বাসের পরিচালনায় জাতীয় সঙ্গীত গায় সবাই----এটা বাধ্যতামূলক। তারপর একটি দুটি গানের মহড়া, দেশাত্মমূলক বেশির ভাগই। সাড়ে বারোটার দিকে ছেলেমেয়েরা যে যার ক্লাসে চলে যায়। সন্ধ্যা ছটায় স্কুলগৃহ খালি করে দিতে হয়----ভাড়া করা স্কুলের সবকিছুই চুক্তিমাফিক বরাদ্দকৃত। ছুটির পর একে একে বাড়ি চলে যায় সবাই----সবার শেষে যায় উর্বি-জীবন-উদিতা, ক্লান্ত তৃপ্ত অবসন্ন দেহে। পরের দিন সাত সকালে তো আবার একই নিয়মের পুনরাবৃত্তি। গত আট বছর ধরে ওরা চালাচ্ছে স্কুলটি। আট বছর ধরে তাদের জীবন এই স্কুলটির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। পশ্চিম বিশ্বের অধিকাংশ মানুষই সপ্তাহে পুরো দুটো দিন ছুটি পায়----শনি আর রবিবার। ইচ্ছে করলে শুক্রবার বিকেলেই তারা বাক্সপত্র নিয়ে গাড়ি হাঁকিয়ে যেকোন যায়গায় চলে যেতে পারে দুদিনের ছুটিতে, যা জীবন-উর্বির জীবনে সম্ভব নয়। এতে কি তাদের আক্ষেপ আছে কোনও? মোটেও না। এ'ই তাদের ছুটি। এ কাজ তাদের প্রাণের তাগিদে করা। তারা শুধু নয়,উদীচীর সঙ্গে জড়িত প্রতিটি বাঙ্গালিই----শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, সকলেই। উদিতার এখন টিনেজ বয়স, কিন্তু উত্তর আমেরিকার অন্যান্য টিনেজদের মত সে নয়। সে শুধু বাংলা বলেই না, বাংলা গান করে, নাচে, অভিনয় করে, আবৃত্তি করে।
উত্তর আমেরিকার কোনও বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানই বেশিদিন টেকে না----প্রধানত ব্যক্তিগত রেষারেষি ও দলীয় কোন্দলের জন্যে। আমার জানামতে নিউইয়র্কের উদীচী স্কুলটি তার ব্যতিক্রম। তার প্রধান কারণ জীবনের দক্ষ, বিচক্ষণ পরিচালনা। উর্বি-জীবন, এ-মানুষদুটির মত সংস্কারমুক্ত বাঙ্গালি আমি খুব কমই দেখেছি। কে হিন্দু কে মুসলমান আর কে বৌদ্ধ-খৃস্টান এ নিয়ে তাদের বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। ধর্মবৈষম্যের ঘৃণ্য বিষয়টাই অত্যন্ত ন্যক্কারজনক তাদের রুচিতে। আমার মতে এটিই উদীচীর দীর্ঘায়ুতা ও জনপ্রিয়তার মূল কারণ। এর ফলে এখানে বাংলাশিক্ষার নামে ধর্মীয় শিক্ষাদানের কোন গুপ্ত প্রচেষ্টা থাকে না, যা আমি দেখেছি কোন কোন জায়গায়। এবং এর কারণেই হয়ত এই একটি বাংলা স্কুল যেখানে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ দু'জায়গার অভিভাবকরাই ভরসা পান ছেলেমেয়েদের নিয়ে আসতে।
ব্যক্তিগতভাবে আমি যখনই বেড়াতে আসি ওদের বাড়িতে তখনই, রোববার এলেই, অতি আগ্রহের সংগে চলে যাই উদীচী স্কুলে। ওরা স্কুল চালায়, আমি বারান্দায় বসে বই পড়ি। আজকাল উত্তর আমেরিকার প্রায় কোথাও পুরোপুরি বাঙালি পরিবেশ আমি পাই না, মনটা উপোস করে থাকে। সে অভাবটি খানিক পূরণ হয় উদীচীতে এলে। ছোট একটা আশার আলো জ্বলে ওঠে মনে।
এবার এমন হল যে প্রথম রোববারটি সারাদিন স্কুলে না থেকে সময় কাটালাম পুরনো বন্ধু শহীদ কাদরির বাসায়। ওর স্ত্রী নীরা, আমাকে মীজানভাই বলে ডাকে, দু'হাজার দুই থেকে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ পরিচয় আমাদের প্রধানত আমার লেখালেখির বরাতে। দু'হাজার তিনে ওদের বিয়ে হয়। আমাদের পুরনো বন্ধুত্বে একটা নতুন মাত্রা যোগ হয় এতে করে।


আধুনিক বাংলা কবিতায় শহীদ কাদরির কি স্থান সেসম্বন্ধে বহু গুণিজনের বহু জ্ঞানসমৃদ্ধ আলোচনা-সমালোচনা লিপিবদ্ধ হয়েছে গত তিন দশকে। তাতে নতুন কিছু যোজন করার যোগ্যতা বা ক্ষমতা আমার নেই। শহীদ আমার যৌবনের বন্ধু, অত্যন্ত প্রিয় বন্ধু, ওটুকুই যথেষ্ঠ আমার জন্যে। আমার ছোটবেলার বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই বিপুল সাফল্য অর্জন করেছে পরবর্তী জীবনে। তাঁরা প্রসিদ্ধি চেয়েছিল, পেয়েছেও। খ্যাতির মোহ একেবারে নেই এমন দাবি নিখাদ সততার সঙ্গে করতে পারবে এহেন সাধুব্যক্তির সাক্ষাত আমার ভাগ্যে আজো ঘটেনি। তবে খ্যাতির কামনায় কাতর হওয়া, সে চরিত্র শহীদের নয়।
কিঞ্চিত লেখাপড়াজানা লোকেদের মধ্যে খানিক কৃত্রিমতা এবং লোকদেখানোর দুর্বলতা অনেকেরই। তারা হলেন, আমার বিচারে, মধ্যবিধ (mediocre), আমি নিজেকেও সে কাতারে ফেলি। তারা পানিতে ডুব দিয়ে দুটি বুদবুদ তোলেন, তারপর তাদের কোনও চিহ্ন থাকে না। খ্যাতির লালসাটি সচরাচর তাদের মধ্যেই দেখা যায় সবচেয়ে প্রকটভাবে। শহীদ এসবের অনেক উর্ধে। খ্যাতিকাতরতা একটি রুচিহীন অশ্লীলতা ওর কাছে। সত্যিকার ঋদ্ধ ও সিদ্ধ মানুষ যাঁরা তাদের কাছে 'সাফল্যে'র কোনও পারমার্থিক গুরত্ব নেই। শহীদের চরিত্রে একরকম বিদগ্ধ বৈরাগ্য আছে যা তাকে বিষয়ের প্রতি বিমুখ করে, স্থূল সাফল্যের প্রতি বিরূপ করে, এমনকি কোনও বিশেষ লক্ষ্যের প্রতিও করে উদাসীন। সে একজন সত্যিকার নির্মোহ পুরুষ।
আমি দেশ ছেড়েছি '৬২ সালে। বলতে গেলে প্রায় তখন থেকেই আধুনিক বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে আমার যোগাযোগ পুরোপুরিই ছিন্ন হয়ে গেছে। বিশেষ করে বাংলা কবিতার সঙ্গে। ছোটবেলায় কবিতা পড়তাম, আর দশটা বাঙালি ছাত্রের মতই। গভীরভাবে বুঝতাম তা নয়, তবুও ভাগ্যক্রমে দু'চারজন কবিসাহিত্যিকের সঙ্গে একটা হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, সম্ভবত কাছাকাছি পাড়ায় থাকার জন্যে। তাদের অনেকেই এখন দেশের বরেণ্য পুরুষ। তার মধ্যে শহীদ একজন। ওর কবিতা অবশ্যই আমি বুঝি না, কিন্তু ওর বক্তব্যটুকু হয়ত আন্দাজ করতে পারি কিছুটা। ও একটি অতলান্ত সমুদ্র সেটুকু বুঝি। কখনো দীঘির জলের মত শান্ত---তখন তাঁকে সাধারণ ছাপোষা মানুষদের মতই নিরীহ মনে হয়। আবার যখন এলোপাথাড়ি ঢেউ এসে ওকে উত্যক্ত করতে শুরু করে, তখন সে ক্রুদ্ধ গর্জনে ভীমাকার মূর্তি ধারণ করে----সেসময় তার সঙ্গে কোনরকম তর্কযুদ্ধে লিপ্ত হওয়া মানে নির্ঘাত্‌ আত্মবিনাশের পথে ধাবিত হওয়া। ভয়ভীতি বলে কিছু নেই ওর। 
শহীদ কাদরি যেমন মানুষ হিসেবে অন্য কারো মত নয়, কাব্যজীবনেও সে অন্য কবিদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আশির দশকের গোড়াতে সে যখন কাব্যসৃষ্টির সর্বোচ্চ শিখরে ঠিক তখনই কি এক রহস্যময় কারণে সে যেন সিদ্ধান্ত নেয়ঃ আর নয়, ঢের হয়েছে লেখা। গৌতম বুদ্ধের মত মুকুট ফেলে বনের আশ্রয় নেওয়া যেন। আমাদের গণিতশাস্ত্রে আলেকজাণ্ডার গ্রথেনডাইক বলে এক অর্ধ-উন্মাদ জিনিয়াস আছেন যে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ গণিতজ্ঞ হিসেবে প্রায় সর্বসম্মত স্বীকৃতিলাভ করবার অনতিকাল পর ৪২ বছর বয়সে স্পেনের পিরেনিজ পর্বতের এক জঙ্গলাকীর্ণ গুপ্তস্থানে গিয়ে সেই যে আত্মগোপন করে রইলেন, তারপর চল্লিশ বছরের উপর পার হয়ে গেল, আজ পর্যন্ত তাঁর খোঁজ পায়নি কেউ। শহীদ কোনও পর্বতকন্দরে লুকোতে যায়নি গ্রথেনডাইকের মত, তবে বাংলা কবিতায় সে'ও অনেকটা নিখোঁজ সম্রাটেরই মত। ওর পিরেনিজ ছিল প্রথমে বিলেত, তারপর যুক্তরাষ্ট্র। উভয় জায়গাতে সে নিজের শরীরের ওপর অকথ্য অত্যাচার করেছিল-----কাগজের বিছানায় মোটা বইএর বালিশে মাথা রেখে ঘুমনো থেকে শুরু করে অর্ধাহার অনাহার---সবকিছুর সঙ্গেই বেশ ঘনিষ্ঠ পরিচয় হয়েছে তার। তিন সালে তার তৃতীয় স্ত্রী নীরা যেন আমেরিকার কোস্টগার্ডদের মতই তাকে ঝড়ের সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে ওর নিউইয়র্কের বাসাতে। কিন্তু এদ্দিনে তার শরীর অনেকটাই ক্ষয় হয়ে গেছে। প্রধানত কিডনি, তারপর আরো অনেককিছু। মানুষের মন যতই উর্ধাচারী হোক দেহ তাকে কখনই ভুলতে দেবেনা যে তার পাখাদুটি শক্ত সূতো দিয়ে বাঁধা মাটির সঙ্গে----একদিন না একদিন সেখানেই ফিরতে হবে তাকে।


নিজের আগুনে নিজেই দগ্ধ হবার কাহিনী খুব বিরল নয় ইতিহাসে----সম্ভবত আমাদের প্রিয় কবি শহীদ কাদরিও তেমনি এক উদাহরণ। ওকে বেশ কাছে থেকে দেখবার সৌভাগ্য হয়েছে আমার----সে অভিজ্ঞতা একদিকে যেমন দারুণ আনন্দের, আরেকদিকে প্রচণ্ড কষ্টের। কত বিশাল সম্ভাবনা ছিল মানুষটির----এদ্দিনে হয়ত কিংবদন্তীর পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারত কাব্যজগতে, কিন্তু এখন তার স্থান শুধু কবিতাপ্রেমিকদের অন্তরে আর সাহিত্যালোচকদের জ্ঞানগর্ভ অভিসন্দর্ভে। ওর মত প্যাশন (এর ভাল বাংলা আমার জানা নেই, কারো জানা থাকলে দয়া করে আমাকে বলবেন। প্রাণাগ্নির কাছাকাছি একটা শব্দ কিন্তু ঠিক প্রাণাগ্নি বোধ হয় নয়) আমি অন্য কারো মধ্যে দেখিনি। প্যাশন তার জীবনের জন্যে, জীবনের যত সুখ যত আনন্দ বিরহ বিস্ময়, যত রূপ রস গন্ধ, যত প্রেম যত মুক্তি বন্ধন, যত জ্ঞান যত বিজ্ঞান, মানুষের কল্পনা আর মেধা দিয়ে গড়া যত কীর্তি, সবকিছুর জন্যেই তার সীমাহীন প্যাশন। তার প্যাশন প্যাশনেরই জন্যে। বাংলা কবিতার এক অত্যুজ্জ্বল নক্ষত্র হয়েও সকল যুগের সকল জ্ঞানের প্রতি তার অনুরাগ, তার কৌতূহল আমাকে বিস্মিত করেছে। আমি গণিতের একটি ক্ষুদ্র অংশ ছাড়া আর কিছু বুঝিনা সংসারে। এই ক্ষুদ্র অংশটির প্রতিও তার আগ্রহের অন্ত নেই। সে যেন এক সর্বভুক ডাইনাসোর যার সবকিছু গ্রাস করা চাই, সবকিছু আহরণ করা চাই। অগস্ত্য মুণির মত সম্ভব হলে সে জ্ঞানবিজ্ঞানের পুরো সমুদ্রটাই শোষণ করে নিত। 
তবুও কেন তার এই সীমিত সাফল্য?
আমার নিজের মতটাই বলি তাহলে। আমার মতে তার সবই ছিল,একটি মৌলিক বস্তু ব্যতিরেকে। তার নাম স্বপ্ন। শহীদ কাদরির কি বিশেষ স্বপ্ন ছিল? মানে তার নিজস্ব, ব্যক্তিগত স্বপ্ন? কোনও উচ্চাকাঙ্ক্ষা? সঠিক জানিনা, তবে আমার যেন মনে হয়, না। সাফল্য বলতে আমরা সাধারণ অর্থে যা বুঝি----নামযশ প্রভাব প্রতিপত্তি পদক পদবী, ইত্যাদি। এসবের জন্যে মেধা ও শ্রমের বাইরে আরো দুটি মৌলিক জিনিসের প্রয়োজন-----স্বপ্ন ও প্যাশন। স্থায়ী কীর্তি রেখে চাইলে এমন এক বিশাল স্বপ্ন থাকতে হয় যার প্রভাবে যুগ যুগ ধরে আরো বহু প্রজন্মের ভেতর সেই একই স্বপ্নের বীজ অঙ্কুরিত হয়, সঞ্চারিত হয়। সেই স্বপ্ন ও সেই অগ্নি ছিল আইনস্টাইন আর রবীন্দ্রনাথের, ছিল পিকাসো আর সেক্সপিয়ারের। তাই তাঁরা ইতিহাসে অমরত্ব লাভ করেছেন। সেই উপাদানটি সম্ভবত নেই আমার বন্ধুটির। সেই আকাঙ্ক্ষাটিও নেই তাঁর। এই একটি বিবাগী মানুষ যাকে কোনও বিশেষণ দিয়ে আটকানো যায়না , কোনও ছক ছাপে বাঁধা যায়না। সে একান্তভাবেই শহীদ কাদরি, এক এবং অভিন্ন।
এবার ওর সঙ্গে আলাপ হল মৃত্যু আর বিশ্বাস নিয়ে। মৃত্যু কিভাবে সাধারণ মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রিত করে সেটা সবারই জানা----পৃথিবীর যাবতীয় প্রতিষ্ঠিত ধর্মই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। মজার ব্যাপার হল, মৃত্যু অনেক অসাধারণ মানুষের জীবনকেও দারুণভাবে প্রভাবিত করে কখনও কখনও। ভল্টেয়ার সারাজীবন ঈশ্বরবিশ্বাসীদের নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করেছেন, অথচ মৃত্যুর আগে তিনি পাদ্রী ডাকিয়ে প্রার্থনা করিয়েছিলেন, যথাযথ খৃষ্টান পদ্ধতিতে দেহসৎকার কামনা করেছিলেন। সারাজীবন অবিশ্বাসী বলে খ্যাত আমাদের প্রিয় কবি শামসুর রাহমানও শুনেছি মৃত্যুকালে প্রথাগত তৌবা পাঠ করেছিলেন। অপরদিকে বার্টাণ্ড রাসেল শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁর অবিশ্বাসের আদর্শে অটল ছিলেন, যেমন ছিলেন বাংলাদেশের বিখ্যাত বুদ্ধিজীবি আহমদ শরীফ ও ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা ওয়াহিদুল হক। ধর্মবিশ্বাসীরা দারুণ দম্ভের সঙ্গে প্রচার করে বেড়ান যে আইন্সটাইনের মত বিশাল বিজ্ঞানীও ছিলেন তাঁদের দলে। আইনস্টাইন ছিলেন কি ছিলেন না তার কোনও অখণ্ডনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই, এবং থাকলেও তাতে প্রমাণ হয় না যে ঈশ্বর সত্যি সত্যি আছেন বা নেই। তবে মৃত্যু যে অমর মানুষদের সঙ্গেও বিচিত্রভাবে খেলা করতে পারে তার উদাহরণ ভুরি ভুরি। মৃত্যু যখন আসন্ন হয়ে পড়ে তখন মানুষের বুদ্ধি ও মননের জগতটিকে দখল করে নেয় প্রকৃতি। চেতনা কুয়াশাচ্ছন্ন হয়, বিচারবুদ্ধি হয় দারুণভাবে ব্যাহত। তখনকার বিশ্বাস অবিশ্বাস কোনক্রমেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
সৌভাগ্যবশত শহীদ বা আমি কারো অনুভবের মধ্যে আসন্ন অবসানের সম্ভাবনা প্রবেশ করেনি আজো। তবে মৃত্যু ওর ঘরের দোরকোঠাতে এসে দাঁড়িয়েছিল, একবার নয়, দুবার। দ্বিতীয়বারের ঘটনাটির একটা রোমহর্ষক বর্ণনা শুনলাম ওর মুখ থেকে এবার। হাসপাতালের বিছানা শুয়ে যন্ত্রণায় কাতর। পেটের অসুখ দারুণ আকার ধারণ করেছে। বাথরুমে যেতে হচ্ছে বারবার, বারবার। মলদ্বার দিয়ে নির্গত হচ্ছে অনর্গল স্রোত। সে মলের রঙ সাধারণ পায়খানার মত নয়----গাড়ির ইঞ্জিনে যে তেল ব্যবহার করতে হয় ঠিক যেন সেই রঙ, শহীদের নিজেরই বর্ণনা অনুযায়ী। ডাক্তাররা বিবিধ ওষুধপত্র দিয়ে সেই অবিরাম মলস্রাব রোধ করার আপ্রাণ চেষ্টা করে ব্যর্থ হবার পর তাকে পাঠিয়ে দিলেন নিউইয়র্কেরই আরেক হাসপাতালে যেখানে এক নামকরা বিশেষজ্ঞ কাজ করতেন। দুঃখের বিষয় যে ডাক্তারটির এতই নামডাক সারা মহাদেশব্যাপী যে তিনি প্রায়ই দেশের বাইরে চলে যেতেন জরুরি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনে। সেবার তাঁর ডাক পড়েছিল ক্যানাডার কোন এক হাসপাতালে। শহীদ যখন মুমূর্ষু অবস্থায় জরুরি অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় তখন তিনি ক্যানাডার সীমান্তে পৌঁছুবার উপক্রম। নিউইয়র্ক থেকে চূড়ান্ত জরুরি বার্তা এল তাঁর সেলফোনে যে তাঁর গাড়ি ঘোরাতে হবে, নইলে একটি রোগীর মৃত্যু অনিবার্য। আসলে সেই যে কালো রাবের মত দেখতে পায়খানা ওটা ছিল রক্ত। পেটের পর্দা ছিঁড়ে মল বেরিয়ে শেষমেষ যা বেরুচ্ছিল সেটা ছিল নিখাদ রক্ত, তাজা রক্ত। পুরো চব্বিশ ঘন্টা ধরে একাধারে রক্তস্রাব হচ্ছিল ওর। সেটা প্রথম হাসপাতালের ডাক্তাররা বুঝতে পারেননি। এখন রোগী রক্তশূন্যতায় মরণোন্মুখ। ক্যানাডামুখি গাড়ি ফিরে এল নিউইয়র্কে। সোজা হাসপাতালে। জীবনমৃত্যুর খেলা। একমুহূর্ত সময় নষ্ট করার উপায় ছিল না।
যাই হোক, অস্ত্রোপচার হল সফলভাবেই। পাকস্থলীর ফুটো মেরামত হয়ে গেল। রক্তক্ষরণ বন্ধ। রোগী ফিরে এল তার শয্যায়। জ্ঞান ফিরে এল আস্তে আস্তে। কিন্তু এই জ্ঞান ফিরে আসা আর না আসার মাঝখানে এক অলীক রাজ্যের অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাঁর। তারই এক অবিশ্বাস্য বর্ণনা শুনলাম ওর মুখ থেকে। এক ভয়াবহ মায়াপুরি যেখানে অশরীরি ছায়াদের বিচরণ। সে এক বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা বটে। এই মায়াপুরিই কি সেই শাস্ত্রবর্ণিত পরলোক যার অস্তিত্বের ওপর আমাদের অনেকেরই সীমাহীন সংশয়? সে প্রশ্ন জীবনের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কারো মনে উদয় হবে না হয়ত, কিন্তু মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে উপনীত একজন ভয়ানকভাবে অসুস্থ মানুষের মনে সেটা জাগতে পারে বই কি। বিশ্বাসী না হলেও পারে।
আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠল শহীদ। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবার পর সেই সার্জেনের সঙ্গে একদিন দেখা করার কথা । পরীক্ষা-টরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে শহীদ বেরিয়ে আসবে তাঁর অফিস থেকে এমন সময় তিনি পেছন থেকে ডেকে উঠলেনঃ "মিস্টার কাদরি, আর ইউ এ বিলিভার?"
এরকম সরাসরি প্রশ্ন আজকাল কেউ করে না সাধারণত। মুহূর্তের জন্যে ও হয়ত কথা খুঁজে পাচ্ছিল না। হ্যাঁ না কিছু বলার আগেই ভদ্রলোক বলে উঠলেনঃ "ইফ ইউ আর নট মেবি ইউ সুড বি, ফর দি ফ্যাক্ট ইউ আর এলাইভ ইজ নাথিং বাট এ মিরাকেল।"
ডাক্তারটি নিজে যে একজন ঈশ্বরবিশ্বাসী মানুষ তাতে কোনও সন্দেহ থাকে না এর পর। তিনি দৈবত্বে বিশ্বাস করেন, তাই তিনি দৈবঘটনা মানেন। কিন্তু যার বিশ্বাসের খুঁটি ভেঙ্গে গেছে জ্ঞান ও বোধের ভিত্তিতে, তাকে যদি কোনদিন ফিরে আসতে হয় মৃত্যুর মুখ থেকে,তাহলে তার মনও কি টলে উঠতে পারে না নতুন করে? সত্যি কি তাই? দৈবসত্তা ছাড়া কি দৈবঘটনা সম্ভব? আসলেই কি সেগুলো দৈবঘটনা? নাকি সম্ভাব্যতার নিম্নতম মাত্রায় পৌঁছানো ঘটনার অবিশ্বাস্য বাস্তবায়ন মাত্র? অবিশ্বাস্যতাই কি অলৌকিকতার মত মনে হয়না জীবন ও মৃত্যুর মধ্যবর্তী স্থানে? ব্যক্তিগতভাবে আমাকে এখনও সে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়নি, কিন্তু শহীদের হয়েছে। এবং সে প্রশ্নের পুরোপুরি মীমাংসা এখনো বোধ হয় হয়নি। বিশ্বাসের পেছনে বৈজ্ঞানিক কোনও যুক্তি নেই সেটা সে জানে , কিন্তু যমের থাবা থেকে ফিরে আসা সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার নিরিখে দ্বিতীয় একটা যুক্তি দাঁড়াতে পারে বটে, যার ভিত্তি বিজ্ঞান নয়, দর্শনও নয়, কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্নরকম এক লোকোত্তর জ্ঞান যা শুধু শহীদের মত একটি 'পুনর্জীবিত' মানুষের পক্ষেই লাভ করা সম্ভব। আমি সেজগতের খবর জানিনা।


প্রতি রোববার জীবন-উর্বি-উদিতার সঙ্গে ফিরে আসি স্ট্যাটেন আইল্যাণ্ডের বাসায়। নিজে গাড়ি চালাই না বলে চারদিকে তাকিয়ে দেখতে পারি রাতের নগরকে। রাতের নিউইয়র্ককে একেকসময় একেকরকম মনে হয় আমার। একই রূপসীকে একেক পোশাকে দেখার মত, তার কুহকিনী চোখদুটি একেকভাবে দিশেহারা করে বিমোহিত পথিককে। কখনো মনে হয় কোনও মায়াবী হ্রদের জলে ভাসমান লাখো লাখো তেলের প্রদীপ, কখনোবা সারি সারি সমুদ্রবিহারী জাহাজের বলরুমে মন্দলয়ের নৃত্যলীলায় নিমগ্ন যুগল যুগল প্রেমিকপ্রেমিকা। আসলে নিউইয়র্কের মানুষ জানে দিনের আলো নিভে গেলে কেমন করে জ্বালতে হয় রাতের প্রদীপ। তাদের শহর কেবল ইঁটপাথরের পাষাণ দানব নয়, ললিত প্রাণের প্রমিত ছন্দও স্পন্দিত হয় তার শোনিতপ্রবাহে। দিনের আলোকে এর বিপুলতায় আমরা অভিভূত হই, রাতের আলোকে এর আনন্দধারাতে হই আপ্লুত। নিউইয়র্কের মত শহর পৃথিবীতে নেই, আমার মতে। সাফল্যের চূড়ায় উঠতে চাইলে নিউইয়র্কে যেতে হবে, সেটা বাণিজ্যেই হোক আর শিল্পকলাতেই হোক। নিউইয়র্ক হল সাফল্যের এভারেস্ট। 
স্ট্যাটেন আইল্যাণ্ড থেকে নিউইয়র্কের যে কোনও জায়গায় যেতে সাধারণত লোকে ফেরিতে করে এপার-ওপার হয়, নতুবা গাড়িতে সেতু পার হয়। সেতুটির নাম ভেরাজানো-ন্যারোজ ব্রিজ----সংক্ষেপে ভেরাজানো। বিদঘুটে নামটির একটা ইতিহাস আছে। ন্যারোজ একটি প্রণালীর নাম----সেতুর নিচে বিশাল এক জলাশয় যেখানে হাডসন নদী তার সমস্ত জল উজাড় করে ঢেলে দেয় আটলান্টিকের কাছে নিয়ে যাবার জন্যে। আর ভেরাজানো একটি ব্যক্তির নাম। ইতালি থেকে আগত জিওভানি দ্য ভেরাজানো নামক ষোড়শ শতাব্দীর এক বিশিষ্ট পরিব্রাজকের সম্মানার্থে সেতুটির নামকরণ। একসময় এটিই ছিল বিশ্বের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১.৩ মাইল। যে কোন সামুদ্রিক জাহাজ এর নিচ দিয়ে যাতায়াত করতে পারে, এতটাই উচ্চতা। দূর থেকে মনে হয় পুরো সেতুটাই আকাশ থেকে ঝুলছে-----মাটির সঙ্গে কোনভাবেই সংযুক্ত নয়। বাস্তবের শরীরে গাঁথা এক বিশাল অবাস্তব। এর সত্যিকার সৌন্দর্য ফুটে ওঠে রাতের বেলা। প্রতি রোববার ওদের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে ভেরাজানোকে মনে হয় প্রকাণ্ড এক আলোকিত মোতির মালা অলৌকিক কোনও রূপসীর গলায় ঝুলে আছে । রূপসীটি কল্পনায়, মালাটি চোখের সামনে জ্বলন্ত রূপের শিখা। সে এক অসাধারণ দৃশ্য। চোখ ফেরাতে পারিনা যতক্ষণ না জীবনের গাড়ি ভিন্ন পথে মোড় নিতে শুরু করে।
পৃথিবীর অন্যান্য শহরে সন্ধ্যার পর মনে হয় শহরটি রাতের অন্তর্গত হয়ে গেল। কেবল নিউইয়র্কেই মনে হয় উলটো----এখানে রাত্রি হয় নগরের অন্তর্গত। মানুষের কল্পনার রং দিয়ে গড়া এ এক কল্পরাজ্য।   

স্ট্যাটেন আইল্যাণ্ড,নিউইয়র্ক,
৩০ নভেম্বর, '১০, মুক্তিসন ৩৯
Read More ... »

চার বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা

গতকাল (১৮ আগস্ট) উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নে একই রাতে চার বাড়িতে ডাকাতেরা ডাকাতির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। উৎরাইল চৌধুরী বাড়ির ইকবাল চৌধুরীর ঘরের ৭/৮ জনের ডাকাতদল জানালার গ্রিল কেটে ঘরে ঢোকার সময় গৃহকর্তার ছোট ভাই সালাহউদ্দিন চৌধুরী দেখে ফেললে ডাকাতেরা তাকে কিল ঘুরি মেরে পালিয়ে যায়। ঐ রাতেই একই গ্রামের আরব মৃধার বাড়িতে ডাকাতেরা দরজা ভাঙার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এছাড়াও উত্তর চর তাজপুর গ্রামের আকমত মুন্সী ও প্রবাসী সালাম ঢালীর ঘরের দরজা ভাঙতে গেলে লোকদের চিৎকারে ডাকতদল পালিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
Read More ... »

বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশু নিহত

সোমবার (১৭ আগস্ট)সকাল ৯ টায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের হাজী শরিয়াতুল্লাহ সেতুর পশ্চিম পাড়ে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে পপি আক্তার (৯) ঘটনাস্থলে মারা গেছে। কাওড়াকান্দি থেকে একটি লোকাল বাস ভাঙ্গা যাওয়ার পথে পপি রাস্তা পারাপরের সময় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায়। গাড়িসহ চালক পলাতক। নিহত পপি দত্তপাড়া বাবলাতলা গ্রামের আবু কালামের মেয়ে।
Read More ... »

জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা পায়খানার ছাদে : জাতীয় শোক দিবস পালনে শিবচরের এক কলেজে ব্যাতিক্রম ঘটনা

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে শিবচরের নুরুল আমিন বিশ্ব বিদ্যালয় কলেজে ছাত্ররা শোক দিবসের কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। দুপুর ১২টার দিকে কলেজে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা কলেজের সামনে না টানিয়ে কলেজের পায়খানার ছাদে ফেলে রাখা হয়েছে। কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযোগ করে জানান, শোক দিবসের কর্মসূচী পালনের উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে ৮টায় কলেজে গিয়ে কলেজের গেট বন্ধ পাওয়া যায়। কলেজে কোন পতাকা টানানো হয় নাই। পরে কলেজের অধ্যক্ষের মোবাইলে ফোন দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এতে কলেজের ছাত্রলীগসহ সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ক্ষিপ্ত হয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকাল ১০টার সময় কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে। জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা কলেজের পায়খানার ছাদে ফেলে রাখা হয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শিবচর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে ফোন করে ঘটনাটি জানানো হয়।
জানা যায়, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা নুরুল আমিন বেপারী বিকল্প ধারার কেন্দ্রীয় কমিটির একজন নেতা। কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ লুৎফর রহমান নুরুল আমিন বেপারীর ছোট ভাই। উমেদপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ দাদন হাওলাদার বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই বিএনপি করে। বর্তমানে বিকল্প ধারার রাজনীতি করেন। জাতীয় শোক দিবসে কলেজের ঘটনাটা আসলেই ঘৃণিত দোষীদের বিচার হওয়া উচিত। শিবচর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ সামসুদ্দিন খান বলেন, কলেজের ছাত্রলীগের ফোন পেয়ে কলেজে গিয়ে দেখি দুপুর ১২ টার সময়ও কলেজের সামনে জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা টানানো নেই। পতাকাগুলো বাথরুমের ছাদে পরে আছে। জাতীয় শোক দিবসে এমন একটা ঘটনা খুবই ন্যাক্কার জনক। আজ বিকেলের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দোষী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, কলেজে সকালেই পতাকা টানানো হয়েছিলো। তবে ওটা পরে কলেজের ছেলেরা কলেজের পায়খানার ছাদে ফেলে দিয়েছে। কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি খালেদ হাসান পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক এনায়েত করিম ছাত্রদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ আওয়ামী লীগের বিপরীত রাজনীতি করে বলেই তারা এ জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে। জাতীয় পতাকা খারাপ জায়গায় ফেলে রেখে তারা শুধু ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকেই অপমান করে নাই। তারা সারা দেশকে অপমান করেছে। আমরা এটার সঠিক বিচার দাবী জানাই।
Read More ... »

যথাযোগ্য মর্যদায় ১৫ আগস্ট পালিত

এ.কে.এম. নাসিরুল হক: শিবচরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের যৌথ উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট পালিত হয়। শিবচর পৌরসভা ও উপজেলার ১৮ ইউনিয়নে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়। জাতীয় সংসদের হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী লিটন এমপি বহেরাতলা, ভদ্রাসন, শিবচর, পাঁচ্চর, মাদবরেরচর, সন্ন্যাসিরচর, বন্দরখোলা ও দত্তপাড়া ইউনিয়নে গণভোজের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। মাদারিপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাহাবুদ্দিন মোল্লা, শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম তালুকদার, ভাইস চেয়ারম্যান সামসুল আলম খান, মাদারিপুর জজ কোর্টের পিপি এডভোকেট সুজিত চ্যাটাজি বাপ্পি, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Read More ... »

জেলেকে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা

উপজেলার চর বাচামারা গ্রামে শনিবার (১৫ আগস্ট) ভোরে জেলে জয়নাল মাদবর (৩২)কে কতিপয় সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করেছে। জানা যায়, জয়নাল শনিবার ভোরে পদ্মানদী থেকে মাছ শিকার করে তার বাড়ি চর বাচামারা গ্রামে ফিরছিল। এ সময় রাস্তার পাশে ওৎ পেতে থাকা চিহ্নিত সন্ত্রাসী মিজান মাদবার ও মিরাজসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জন দুর্বৃত্ত পুর্ব শত্রুতার জের ধরে তার গতিরোধ করে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। পড়ে এলাকাবাসী মুমূর্ষু জয়নালকে প্রথমে শিবচর পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
Read More ... »

আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দার গ্রেফতার

বুধবার (১১ আগস্ট) রাত ১০টায় শিবচর থানার পুলিশ গোপান সংবাদের ভিত্তিতে কাওড়াকান্দি ফেরিঘাট এলাকা থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দার হযরত আলী (৫০)কে গ্রেফতার করেছে। জানা যায়, কাওড়াকান্দি ফেরিঘাট এলাকা দিয়ে হযরত আলী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করলে শিবচর থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দার হযরত আলীকে গ্রেফতার করে। আটককৃত ডাকাত সর্দার হযরত আলী শরিয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানার জালালপুর গ্রামের করম আলী বেপারির ছেলে। তার বিরুদ্ধে শিবচর, মুন্সিগঞ্জ, ভাঙ্গা, গোসাইরহাট থানায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন ও অস্ত্রসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
Read More ... »

মাদকাসক্ত যুবকের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় যুবতীকে কুপিয়ে জখম

সোমবার (১০ আগস্ট)সকালে উপজেলার কুতুপুবপুর ইউনিয়নের বড় কেশবপুর গ্রামে মাদকাসক্ত যুবক শফিকুল মাদবর (২৮)এর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় একই গ্রামের দবির মিয়ার মেয়ে শামিরন আক্তার (২০)কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করেছে উক্ত মাদকাসক্ত যুবক।
জানা যায,গত বেশ কিছুদিন ধরে মাদকাসক্ত যুবক শফিকুল মাদবর শামিরনকে উক্ত্যক্ত করে আসছিল। রবিবার রাতে শফিকুল শমিরনকে কুপ্রস্তাব দেয়। শামিরন শফিকুলের কুপ্রস্তাবের কথা শুনে তাকে ঝাড়ুপেটা করে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল সোমবার সকালে ধারালো ছুড়ি দিয়ে শামিরনকে এলোপাথারিভাবে কুপিয়ে তাকে মৃত ভেবে এলাকা ত্যাগ করে চলে যায়। শামিরনকে প্রথমে শিবচর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতলে প্রেরণ করে। মুমূর্ষু শামিরন এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। মাদকাসক্ত যুবক শফিকুলকে আসাসী করে শিবচর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

আটরশি ও চন্দ্রপাড়ার লাখো মুরিদের ভিড়ে কাওড়াকান্দি-মাওয়া রুটে হাজার পরিবহন আটকা ॥ পুলিশের লাঠিচার্জে অর্ধশত যাত্রী আহত

বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) রাতে বিশ্বমুসলিমের পবিত্র রজনী শবেবরাতের নামাজ শেষে আটরশির বিশ্বজাকের মঞ্জিল ও চন্দ্রপাড়ার লাখো মুসলিমের ভিড়ে কাওড়াকান্দি ও মাওয়ারুটের দু'পাড়ে প্রায় এক হাজার পরিবহন আটকা পড়ে আছে। ফজরের নামাজ শেষে আটরশি ও চন্দ্রপাড়ার মুরিদগণ ঢাকার পথে রওয়ানা হলে কাওড়াকান্দি ফেরিঘাটে দু'ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৪ কি.মি. যানজটের সৃষ্টি করে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সামাল দিতে ব্যর্থ হলে অনিয়মতান্ত্রিক অবস্থায় পরিবহন চলাচল করায় মূহুর্তেই ঘাটের যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। পড়ে ভাঙ্গা হাইওয়ে, পাঁচ্চর হাইওয়ে ও শিবচর থানা থেকে কাওড়াকান্দি ফেরিঘাটে যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কাওড়াকান্দি ঘাটের অবস্থা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও পুলিশের বেধরক লাঠিচার্জে প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হয়েছে। ঢাকার কামরাঙ্গির চরের আবু কালাম জানান, "আটরশি থেকে ফজরের নামাজ শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম। আমিসহ আরও কয়েকজনের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে।" নারায়ণগঞ্জের চাষারা এলাকার বাহাউদ্দিন মোল্লার প্রাইভেটকারের কাচ ভেঙ্গে তাকে পিটুনি দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের লাঠিচার্জের ব্যাপারে জানতে চাইলে পাঁচ্চর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আসাদ জানান, লাখো মানুষের পদচারণা ও হাজার হাজার পরিবহনকে সামাল দিতে ছোট-খাটো এ ধরনের দু-একটা ঘটনা ঘটতে পারে।
গত কিছুদিন ধরে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটে ফেরি স্বল্পতা রয়েছে। নদীতে ১৪টি ফেরি চলাচল করলেও ৪টি আরিচায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং ৩টি মেরামতের জন্য ডকে উঠানো হয়েছে। বর্তমানে ৭টি ফেরি চলাচল করছে মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটে। ফেরি স্বল্পতাই যানজটের পাল্লাকে দিন দিন ভারী করছে। অন্যদিকে নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে সময় লাগে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা।
Read More ... »

পদ্মানদী থেকে ৬ জলদুস্য আটক ॥ ৪টি রামদা ও ২টি ট্রলার উদ্ধার

বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) ভোর রাতে শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের মাগুরখণ্ড এলাকার পদ্মানদীতে জেলেদের ট্রলার থেকে মাছ লুট শেষে এলাকাবাসী ধাওয়া করে ৬ জলদস্যুকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
জানা যায়, জলদস্যু সাইদুল ইসলাম (৩৫), জুয়েল (২২), আলমগীর বেপারী (৪০), রাজ্জাক মোল্লা (২৪), জাহাঙ্গীর হোসেন (২২), রাজিব মোল্লা (৩৫) জেলেদের ১৩টি মাছের ট্রলারে লুট শেষে চলে যাওয়ার সময় জেলেদের চিৎকারে এলাকাবাসী ও অন্যান্য জেলেরা ১৫/২০টি ট্রলার নিয়ে জলদস্যুদের ধাওয়া করে ৬ জনকে আটক করে। পরে আটককৃত জলদুস্যদের শিবচর থানার পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়। পুলিশ জলদস্যুদের ২টি ট্রলারতল্লাসী চালিয়ে ৪টি রামদা উদ্ধার করে। আটককৃত জলদস্যুদের বাড়ি চরজানাজাত ইউনিয়নের মোল্লাকান্দি গ্রামে। এই ব্যাপারে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Read More ... »

শিবচরে পদ্মানদীতে নৌকা ডুবি, জেলে-কন্যা নিখোঁজ

বুধবার (৫ আগস্ট) সকাল ৯টায় শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা কাজিরসুরা এলাকায় পদ্মানদীতে বাবার সাথে মাছ শিকার করতে গিয়ে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হয়েছে জেলে-কন্যা অজুফা আক্তার (১১) । বন্দরখোলা কাজিরসুরা চর এলাকায় জেলে তারা মিয়া ঘরামি তার শিশুকন্যা অজুফাকে নিয়ে একটি ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে জাল নিয়ে পদ্মানদীতে মাছ শিকার করতে যায়। আকস্মিক বাতাসে নদীতে নৌকা ডুবে গেলে জেলে তারা মিয়া ঘরামি সাঁতার কেটে পাড়ে উঠলেও অজুফার আর ফিরে আসেনি।
Read More ... »

পড়ল ধরা নারীলোভী

শিবচর উপজেলার খাড়াকান্দি গ্রামের ধনাঢ্য ব্যক্তি ফয়জুল শেখ (৪৫) নারীলোভে সর্বসমেত ২১টি বিয়ে করলেও অধিকাংশই ঘটেছে লোকচক্ষুর আড়ালে। প্রকাশ্যে তিনি স্বীকৃতি দিয়েছেন চার স্ত্রীকে। তাদের গর্ভে আসা ১০ সন্তানের তিনজন বর্তমানে প্রবাসে আছে। বছর দেড়েক আগে এই প্রৌঢ় নিজ এলাকার মেয়ে নাসিমা আক্তারকে (১৭) বিয়ে করেন। শেষাবধি গোপন আর গোপন না থাকায় ব্যাপারটি সবার মুখে মুখে প্রশ্ন হয়েই দেখা দেয়। ফলে গত শনিবার স্থানীয় মাতব্বর মতি হাওলাদার ও মেম্বার আইয়ুব আলী হাওলাদারের নেতৃত্বে বিচার সভা বসে। এতে ফয়জুল শেখ অভাবী মেয়েদের দুর্দশা বুঝে টাকা-পয়সা ঢেলে বিয়ের নামে তাদের শয্যাসঙ্গিনী বানানোর কথা স্বীকার করেছেন।
ওই বিচারে নাসিমাকে ২১তম স্ত্রী করে নেওয়ার কাগজপত্র প্রমাণপত্র হিসেবে দেখানো হলেও কঠিন রায়ই মিলেছে তার ভাগ্যে। তাতে অপরাধীকে প্রায় হাজার জনতার উপস্থিতিতে ৪১ বার জুতাপেটা করা বাদেও নেওয়ানো হয়েছে নাকেখত। সেই সঙ্গে তার নবজাতক কন্যাটির লালন-পালনার্থে ফয়জুল শেখের কাছ থেকে আদায় করা হয় এক লাখ টাকা। আর ভবিষ্যতে সাবধান থাকার প্রশ্নে বিচারক তাকে জানিয়ে দিয়েছেন অন্য রকমের কথা। এতে বলা হয়েছে, অপরাধী ২১তম স্ত্রী নাসিমা আক্তারকে কখনও দেখতে গেলে ফের ভাগ্যে মিলবে এই জুতাপেটা এবং নাকেখত।
Read More ... »

শিবচরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১

শনিবার (১ আগস্ট) বিকেলে শিবচর-দত্তপাড়া সড়কের বাদশাকান্দি গ্রামে নসিমনের চাকায় পিষ্ট হয়ে সাব্বির হোসেন (৪) ঘটনাস্থলে মারা গেছে। শিবচর থেকে যাত্রী বোঝাই একটি নসিমন দত্তপাড়া যাওয়ার পথে সাব্বির রাস্তা পারাপারের সময় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। পুলিশ গাড়িটি আটক করেছে। গাড়ি চালক পলাতক। নিহত সাব্বির দত্তপাড়া ইউনিয়নের বাবলাতলা বাদশাকান্দি গ্রামের সেফায়েত মুন্সীল ছেলে। সাব্বিরের মৃত্যুর পর থেকে এলাকাবাসী দত্তপাড়া-শিবচর সড়কটি পায় ৬ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
Read More ... »
Widget By Devils Workshop
 

আজকের চাঁদ

CURRENT MOON

© 2009-2010 shibcharsangbad | Design by: Md. Abul Hossain Miah

^ উপরে আসুন