সাইট উন্নয়নে আপনাদের লেখা ও পরামর্শ চাচ্ছি-সম্পাদক

কালবৈশাখী ঝড়ে ৩টি গ্রামের ৭০টি ঘর-বাড়ি ও ১টি স্কুল বিধ্বস্ত : আহত ৪

(২৬ মে ২০১০) কালবৈশাখী ঝড়ে শিবচরের নিলখী ইউনিয়নের ৩টি গ্রামের অন্তত ৭০টি ঘর-বাড়ি ও ১টি প্রাথমিক স্কুল বিধস্ত ও অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গেছে। এসময় ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
এলাকাবাসি জানায়, আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে হঠাৎ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে শুরু হয় প্রচণ্ড কালবৈশাখী। ঝড়ো বাতাসে বিধ্বস্ত হয় নিলখী গোলাম জাহাঙ্গীর কবির প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কলাতলা চরকামারকান্দি, দক্ষিণ চরকামারকান্দি, সোনামিয়া মুন্সীকান্দি গ্রামের অন্তত ৭০টি টিনশেডের ও কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। ঝড়ে ঘরের উপড়ে গাছ পড়ে একই পরিবারের মন্না খাঁ (৪৮), স্ত্রী রঙ্গমালা বিবি (৪২), ছেলে রোকন খাঁ (২৬) ও একই গ্রামের মোতালেব দরানি (৩০) গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের শিরুয়াইল উপ-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
Read More ... »

লায়লার প্রভাবে শিবচরের চরাঞ্চলে আবারো ডুবে গেছে বাদাম, পাকা ধান ও পাট

23 May 2010 :: 10:12 am
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় লায়লার প্রভাবে গত তিনদিনে শিবচরের পদ্মা তীরবর্তী চরাঞ্চলের ৪টি ইউনিয়নসহ সারা উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েক শবিঘার পাকা বাদাম, পাকা ধান ও পাট আবারো প্লাবিত হয়েছে। পাকা ফসল হঠাৎ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কিষাণ-কিষাণীদের দিনরাত ধরে ডুবিয়ে ডুবিয়ে বাদাম তুলতে ও ধান কাটতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে পদ্মানদী বেষ্টিত চরজানাজাত, কাঁঠালবাড়ি, মাদবরচর গিয়ে দেখা যায়, লায়লার প্রভাবে গত ৭২ ঘণ্টায় পদ্মা ফুসে উঠে ৪/৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে  পদ্মা ও  সংযুক্ত নদী-নালার তীরবর্তী ফসলের ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৫শবিঘার বাদামের ক্ষেত, আড়াই শবিঘার ধান, ৪শবিঘার পাট তলিয়ে গেছে।
চরজানাজাত ইউপি চেয়ারম্যান বজলু সরকার বলেন, প্রায় ২০ দিন আগের পানিতে চরের ফসলের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কৃষক সর্বশান্ত হয়েছে। আর এবার গত ৩ দিনের পানিতে বাদামের বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রায় পেকে যাওয়ায় কৃষকরা বাদাম, ধান ডুবিয়ে ডুবিয়ে তুলছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান বলেন, পাকা ধান ও বাদাম ডুবে গেলেও এগুলো সম্পূর্ণ নষ্ট হবে না।  পেকে যাওয়ায় ডুবে যাওয়া ফসলগুলোর ২০ ভাগ ক্ষতি হবে। আর দু-একদিন পানি থাকলে পাটগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।
Read More ... »

সন্তানের পিতৃপরিচয়সহ স্ত্রীর অধিকার পেলেন রসনা



17 May 2010 :: 10:12 am

জন্মের পর জান্নাতুলের বয়স এখন সাড়ে সাত মাস। বাবার স্নেহ জোটেনি ভাগ্যে। বরং বাবার কারণেই জন্মের পাঁচ মাস আগে থেকেই 'একঘরে' জীবনের স্বাদ পায় সে। সেই জান্নাতুল ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর প্রথমবারের মতো বাবার কোলে যাওয়ার সুযোগ পেল। এ দৃশ্য মা রসনার চোখে জল এনেছে। হাজারো বঞ্ছনার মধ্যেও এ যেন এক চরম তৃপ্তি। সন্তানের পিতৃপরিচয়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের কপালেও স্ত্রীর অধিকার জুটল শিবচরের রসনা বেগমের।
শিবচর থানা পুলিশের তৎপরতায় বিয়ের মধ্য দিয়ে রসনা স্ত্রীর অধিকার ও জান্নাতুল সন্তানের অধিকার পায়।
দত্তপাড়া ফাঁড়ির দায়িপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রশান্ত দাস বলেন,  শিবচর থানার ওসি আ. জলিলসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ৭ মে বিকেলে অভিযুক্ত আলম বাওয়ালিকে শিরুয়াইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে শনিবার বিকেলে দত্তপাড়া ফাঁড়িতে কাজী ডেকে তাদের বিয়ের কাবিন করা হয়।'
প্রায় দুই বছর আগে দত্তপাড়া ইউনিয়নের জোনাব আলী মাদবরের একমাত্র মেয়ে মুড়িবিক্রেতা রসনা বেগমের সঙ্গে পাশের এসকান বাওয়ালির ছেলে আলম বাওয়ালির প্রেমের সূত্রপাত। প্রেমের সম্পর্ক গভীর হলে আলম রসনাকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ৭০ হাজার টাকা উত্তোলন করে। এর প্রায় এক বছর পর (মার্চ ২০০৯) টাকা নিয়ে গড়িমসি শুরু করলে রসনা আলমকে চাপ দেয়। আলম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ততদিনে রসনা প্রায় ৬ মাসের গর্ভবতী। এ কথা জানার পর আলম গা-ঢাকা দেয়। এর পর স্থানীয় প্রভাবশালী ও দত্তপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির হস্তক্ষেপে সালিস বৈঠকে আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ওইদিন বিকেলেই রসনাকে বিয়ে করার অঙ্গীকার করে ফের গা-ঢাকা দেয়। মেয়ে-সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় রসনার। সালিস বৈঠকের মাধ্যমে তাঁকে 'একঘরে' বা 'সমাজচ্যুত' না করলেও প্রতিবেশী বা আত্মীয়স্বজন সবাই মুখ ফিরিয়ে নেয় তাঁর পরিবারের ওপর থেকে। অঘোষিতভাবেই সমাজচ্যুত ছিল শিশুসন্তানসহ পরিবারটি।
Read More ... »

'খাইতে পাই না, পড়মু ক্যামনে'


16 May 2010 :: 02:14 pm
বিদ্যালয়ে দেয়াল ঘেঁষে মলিন মুখে দাঁড়ানো একটি ছেলে। দেখেই মনে হলো, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে। 'মন খারাপ করো না। রেজাল্ট খারাপ হয়েছে তাতে কি?'_এ কথা বলতেই ছেলেটি মৃদু হেসে বলল, 'স্যার আমার নাম সুজন। জিপিএ ৫ পেয়েছি। কিন্তু ইতিমধ্যেই লেখাপড়া ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে কম্পিউটার দোকানে কাজ শিখছি তো। তাই ভাবছি, এ রেজাল্ট ও সনদ দিয়ে কী করব?'
এভাবেই নিজের অনুভূতি জানায় শিবচরের খানকান্দি সৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সুজন চন্দ্র সূত্রধর। প্রাইভেট পড়িয়ে ও দর্জি পিতা সুদেব সূত্রধরকে সহযোগিতা করে খেয়ে-না খেয়েই সাফল্য পেয়েছে সুজন।
শিবচর পৌর এলাকার নলগোড়ায় সুজনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দেড় শতাংশ জমিতে পাটকাঠির বেড়ার ঘর। জরাজীর্ন ঘরে নেই কোনো পড়ার টেবিল। পরিবারের সবার পরনের পোশাক দেখে সহজেই বোঝা যায়, নুন আনতে তাদের পান্তা ফুরায়।
জানা গেল, অন্যের দোকানে দর্জির কাজ করে সুজনের বাবা সুদেব সূত্রধরের দৈনিক আয় ৭০ থেকে ১০০ টাকা। মা ইলা রানী অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। মাঝেমধ্যে কাজ করেন একটি বেসরকারি সংস্থায়। অন্যের বাড়ি কাজের বিনিময়ে পাওয়া কাপড়ই তাঁর সম্বল। ছেলের সাফল্যেও মায়ের চোখে যেন অন্যরকম এক বিষাদ। একটি মাত্র শার্ট-প্যান্ট পরেই ক্লাস করতে হতো সুজনকে। কখনো পান্তা খেয়ে আবার কখনো এক গ্লাস পানি খেয়ে যেতে হতো ক্লাসে। বেশির ভাগ বই বন্ধুদের কাছ থেকে ধার করে পড়ত। কেরোসিনের অভাবে প্রায় রাতেই পড়তে পারত না। তাই সূর্যের আলোই ছিল তার ভরসা।
সুজন বলে, 'আমি অনেক কষ্ট কইরা খাইয়া-না খাইয়া পড়ছি। আমার ডাক্তার হইতে ইচ্ছা করে। কিন্তু বাড়ির কেউ তো পেট ভইরা খাইতেই পারি না। পড়মু কেমনে? আমার স্কুল থেকে আমার কোনো বেতন নেয় নাই। স্যাররাও অনেক সহযোগিতা করছেন। বন্ধুরাও বই হাওলাদ দিছে পড়তে।'
মা ইলা রানী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, 'আজ সকালেও আমার ছেলেডা না খাইয়া রেজাল্ট আনতে গেছে। জন্মের পর ওগো কোনোদিন পেট ভইরা মুখে কয়ডা ভাতও দিতে পারি নাই। শুধু কোনো আত্দীয়ের অনুষ্ঠানে মাংস-পোলাও চোহে দেখছে। অভাবের কারণে সুজন লেখাপড়া ছাইড়া এহন কম্পিউটারের দোকানে কাম শিখতাছে।'
বাবা সুদেব বলেন, 'ওর মা-ই মাইনষের কাছ থিকা চাইয়া চাইয়া কোনোমতে পুলাডারে পড়াইছে। এত গরিব মাইনষের পুলা কি আর পড়তে পারে? আমার পুলাডা পড়ার সুযোগ পাইলে ঠিকই ডাক্তার হইতে পারত।'
সৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক এ কে এম নাসিরুল হক বলেন, 'সুজন সুযোগ পেলে যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারত। কিন্তু দারিদ্র্যের কষাঘাতে ওরা নিষ্পেষিত। দুই বেলা খেতেই পায় না। কারো সহযোগিতা ছাড়া তার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।'
Read More ... »

মাতৃ-মৃত্যুর হার কমানোর প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় শিবচরের ১৮শ হতদরিদ্র মা চরম বিপাকে

15 May 2010 :: 11:14 am
মাতৃ-মৃত্যুর হার কমাতে সরকার পরিচালিত মাতৃ ভাউচার স্কীম প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ না থাকায় গত প্রায় ৫ মাস ধরে মাদারীপুরের শিবচরের প্রায় ১৮শ প্রসূতি মা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। প্রতিদিনই এ সকল হতদরিদ্র মায়েরা নবজাতকদের কোলে করে হাসপাতালের বারান্দায় সংশ্লিষ্টদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। বারবার ধরনা দিয়েও ৫ মাস ধরে এসকল মায়েরা শূন্য হাতে বাড়ি ফিরছেন।
সূত্র জানায়, মাতৃ-মৃত্যুর হার কমানোর লক্ষ্যে গরীব ও দুস্থ মহিলাদের গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসবোত্তর সেবা দিতে ২০০৮ সালের মার্চ থেকে দেশের ৩২টি জেলার ৩৩ উপজেলায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় মাতৃ ভাউচার স্কীম নামের প্রকল্প চালু করে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে একজন হতদরিদ্র মা নিবন্ধীকরণে ১০ টাকা, প্রসবপূর্ব দুইবার রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষার জন্য ১৪০ টাকা, প্রসব পূর্ব তিনটি চেকআপে ১৫০ ও প্রসবোত্তর একটি চেকআপে ৫০ টাকা, প্রতিবার যাতায়াত বাবদ ১শ টাকা, নিরাপদ (স্বাভাবিক) প্রসবে ৩০০ টাকা ও ঔষধ বাবদ ১শ টাকা অর্থাৎ মোট ৭শ ৫০ টাকা পাবে। তাছাড়া জটিল প্রসব ভ্যকুয়াম ডিএন্ডসির জন্য ১ হাজার টাকা, খিচুনীর (এক্লামসিয়া) ১ হাজার টাকা ও সিজারিয়ান সেকশন এবং ঔষধ বাবদ ৬ হাজার টাকা পেয়েছেন। সাথে প্রতি মা ও শিশুকে উপহার স্বরূপ ১টি তোয়ালে, ২টি শাড়ি, সাবান, টাকা দেয়া হয়। সেবা প্রদানকারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সহকারীরাও প্রতিটি সেবার জন্য বিভিন্ন হারে টাকা পেয়ে থাকেন। দেশের ৩৩টি উপজেলার মধ্যে মাদারীপুরের শিবচরে  ২০০৮ সালে প্রায় ২১শ জন হতদরিদ্র মা, ২০০৯ সালে প্রায় ৩২শ মা এই সেবা পান। কিন্তু ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মে মাস পর্যন্ত প্রায় ১৮শ মা এ কার্যক্রমের আওতাভুক্ত হলেও এদের কোন অর্থ দেয়া হচ্ছে না। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে চরাঞ্চল ও হতদরিদ্র মায়েদের প্রসূতিকালীন স্বাস্থ্যসেবা।
এরকমই এক মা সুফিয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী ভ্যান চালাইয়া সংসার চালায়। সরকারি এই টাকাডা পাইলে একটু ভালমন্দ খাইতাম। পুলাডার ১৫ দিন বয়সে দুইবার হাসপাতালে আইলাম কিন্তু কিছু পাইলাম না। কবে দিবো তাও কিচ্ছু কয় না ?
দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী আফরোজা বেগম বলেন, এই প্রকল্প চালুর পর আমার এলাকায় মাতৃ-মৃত্যুর হার অনেক কমে গেছে। তবে গত ৪ মাসে আমার ইউনিয়নে প্রায় ১২০ জন মা প্রসূতীকালীন সেবার অন্তর্ভুক্ত হলেও আমরা কোন সহযোগিতা করতে পারছি না। গরিব মানুষগুলো বারবার ঘোরাঘুরি করছে। তাছাড়া আমরাও এই প্রকল্পে কোন অর্থ পাচ্ছি না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মতিয়ার রহমান বলেন, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় মায়েরা বারবার আমাদের কাছে এসেও কোন অর্থ পাচ্ছে না। দ্রুত আবারও অর্থ বরাদ্দ না করলে এ উপজেলার হতদরিদ্র মা ও শিশুদের প্রসূতিকালীন স্বাস্থ্যসেবা চরম ঝুঁকিতে পড়বে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, প্রকল্পটি মা ও শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা বারবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করছি। জরুরি ভিত্তিতে অর্থ ছাড় দেয়া উচিৎ।
এই প্রকল্পের শিবচর উপজেলা সমন্বয়কারী মো. কবির হোসেন বলেন, ২০০৮ সালের মার্চ থেকে ২০০৯ সালে পর্যন্ত এ প্রকল্পের ফলে শিবচরের প্রসূতিকালীন মাতৃ-মৃত্যুর হার প্রায় শূন্যের কোঠায় এসেছে। অর্থ বরাদ্দ না থাকায় চলতি বছর কোন মাকেই এ সেবাগুলো দেয়া যাচ্ছে না। 
Read More ... »

এএসআই মিজান ও এটিএন বাংলার ক্যামেরাম্যান মিঠুর হত্যার প্রধান আসামি রাহাতকে রাতের অন্ধকারে শিবচরে কবর দেয়া হলো

15 May 2010 :: 09:45am
রমনা থানার এএসআই মিজান ও এটিএন বাংলার ক্যামেরাম্যান মিঠুর হত্যার প্রধান হোতা ডিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে  নিহত রাহাদুল ইসলাম (রাহাতকে) শুক্রবার রাতের আঁধারে নিজ বাড়ি শিবচরের যাদুয়ারচরে কবর দেয়া হয়েছে। নিহতের অভিভাবকরা রাহাত দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছে বলে এলাকায় জানালেও এলাকাবাসী সকলেই রাহাতের অপরাধের কথা আগে থেকেই অবগত ছিল। জানাজায় মাত্র ৭/৮ জন মানুষ অংশ নেয়। রাত আনুমানিক ৯টায় একটি পিকআপে (ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৪-০৬৯৩) করে রাহাতের লাশ কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে নিজ বাড়িতে আনা হয়।
রাহাতের পিতা লালমিয়া শরীফ বলেন, ৩ বোনের ১ ভাই রাহাতের বিভিন্ন কৃতকার্যের জন্য তাকে অনেক আগেই ত্যাজ্য করি। প্রায় ১৫ মাস জেল খাটার পর গত ৩ মাস পূর্বে বের হয়ে একটি প্রাইভেটকার কিনেছিল। গত বৃহস্পতিবার সড়ক দুর্ঘটনায় রাহাত নিহত হয়।
রাহাতের দুলাভাই আনোয়ার মিয়া ক্ষোভের সাথে বলেন, উগ্র চলাফেরার কারণে রাহাতকে শুধু ত্যাজ্য নয় ওর সাথে কোন আত্মীয় স্বজনেরও যোগাযোগ ছিল না। আজকের এই পরিণতির জন্য ও নিজেই দায়ী।
উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার পল্লবীর ইষ্টার্ন হাউজিং এলাকায় ডিবি পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে পরিবহন ছিনতাই চক্রের নেতা রাহাত নিহত হয়।
Read More ... »

বিরোধীদলীয় নেত্রীর দক্ষিণাঞ্চল সফর : শিবচরের কাওড়াকান্দি ঘাটে খালেদা জিয়াকে ফুলেল সংবর্ধনা

12 May 2010 :: 03:21pm
দক্ষিণাঞ্চল সফর উপলক্ষে আজ বুধবার দুপুরে শিবচরের কাওড়াকান্দি ঘাটে দলীয় নেতাকর্মী সমর্থকরা বেগম খালেদা জিয়া ও সফরসঙ্গীদের ফুলেল সংবর্ধনা দিয়েছে। বেলা ১ টায় বিরোধীদলীয় নেত্রীকে বহনকারী কাকলী ফেরিটি কাওড়াকান্দি ৩নং ফেরি ঘাটে পৌছলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী হেলেন জেরিন খান, হেমায়েত হোসেন আওরঙ্গ, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন তালুকদার, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহান্দার আলী, উপজেলা বিএনপির সভাপতি নাজমুল হুদা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান, যুবদল সভাপতি বাকাউল করিম খানসহ কয়েক হাজার নেতা কর্মীরা মুহুমুহু স্লোগানে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায়। কর্মী সমর্থকদের ভিড়ে প্রায় ২০ মিনিট বিরোধীদলীয় নেত্রী ঘাট এলাকায় আটকে পরেন। পরে বিরোধী দলীয় নেত্রীর গাড়ি বহর ফরিদপুরের ভাঙ্গা হয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এর আগে সকাল থেকেই ঘাট এলাকায় পুলিশ, ডিবি, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা ঘাট এলাকা ও আশেপাশের এলাকা নিdMgYচ্ছিদ্র নিরাপত্তা গড়ে তুলে। প্রিয় নেত্রীরা আগমন উপলক্ষে শিবচর, মাদারীপুর ছাড়াও শরিয়তপুর, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকেও সমর্থকরা ভিড় করে। 
Read More ... »

'আমেরিকান সিটিজেন স্বামীহারা সন্তানহীন পাত্রীর জন্য দায়িত্ববান পাত্র চাই'


11 May 2010 :: 11:22 am
শিবচর 'আমেরিকান সিটিজেন (২৮) স্বামীহারা সন্তানহীন পাত্রীর জন্য দায়িত্ববান পাত্র চাই।' দেশের নামিদামি পত্রিকাগুলোতে এ ধরনের বিজ্ঞাপনের রয়েছে ব্যাপক কদর। অথচ এর আড়ালেই অহরহ ঘটছে প্রতারণা। এবার এ রকমই একটি প্রতারণার শিকার শিবচর পৌর এলাকার সুরুজ মাদবর (৩০)। 
সুরুজ মাদবরের আছে স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে। শিবচর পৌরসভার চরগুয়াতলা বাহেরচরে তাঁর বাড়ি। মৌসুমী ব্যবসায়ী, ভালোই চলছিল সংসার। ইউরোপের যেকোনো দেশে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল তাঁর দীর্ঘদিনের। এর মধ্যে গত ৮ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় পত্রিকায় মোবাইল ফোন নম্বরসহ 'আমেরিকান সিটিজেন (২৮) স্বামীহারা সন্তানহীন পাত্রীর জন্য দায়িত্ববান পাত্র চাই' লেখা বিজ্ঞাপন পড়ে ফাঁদে পা দেন সুরুজ। যোগাযোগ করলে অপর প্রান্ত থেকে ঢাকায় দ্রুত যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয় তাঁকে। ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় কুড়িল বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন এআরএস ৬তলা ভবনের ষষ্ঠতলায় যান সুরুজ। তাঁকে জানানো হয়, কনের আমেরিকায় চারটি বাড়ি এবং ঢাকার বনানীতে ৬ নম্বর রোডে একটি ১২তলা বাড়ি আছে। এ ছাড়া তিনটি তৈরি পোশাক কারখানাও আছে তাঁর। সব শুনে সুরুজ বিয়েতে রাজি হওয়ায় এক হাজার ৭০০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়ে কনে দেখাদেখি শেষে ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পাঁচ হাজার টাকা কাবিন খরচ দিয়ে আমেরিকায় বসবাসকারী নাসরীন সুলতানা রিয়ার (৩০) সঙ্গে এফিটেভিটের মাধ্যমে বিয়ে হয় তাঁর। এরপর নিজের ভাগের জমিটুকু বিক্রি করেন। শ্বশুরবাড়ি থেকেও চাপের মুখে টাকা আনেন। গত আড়াই মাসে পাসপোর্ট, ভিসা, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, মার্কেটিং খরচবাবদ প্রায় দুই লাখ টাকা সুরুজের দিতে হয় নতুন স্ত্রী রিয়াকে। এর মধ্যে গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে রিয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের উত্তর সখীপুরে পাঁচ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে দেন সুরুজকে। সুরুজও নতুন স্ত্রীকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা হাতখরচ দেন। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও আমেরিকার ভিসা না হওয়ায় এপ্রিলের মধ্যসপ্তাহ থেকে রিয়াকে চাপ দিতে থাকেন সুরুজ। পরে কাগজ হওয়ার ঘোষণা দিয়ে ১৪ মে ফ্লাইটের কথা জানিয়ে রিয়া ভিসার জন্য আরো এক লাখ টাকা চান। সুরুজ নতুন বিয়ের কথা গোপন রেখে আমেরিকায় যাওয়ার কথা বাড়িতে জানান। চলতি মে মাস থেকে বারবার রিয়া এক লাখ টাকার জন্য চাপ দিতে শুরু করলে সন্দেহ হয়। সুরুজ বিষয়টি তাঁর খালু ইমরান বেপারিকে জানান। পরে খালু ও সুরুজ শলাপরামর্শ করে নিজের কাছে টাকা না থাকার কথা বলে রিয়াকে টাকা নিতে খালুর বাড়ি আসার কথা বলেন। গত শনিবার রিয়া শিবচরে আসার কথা। কিন্তু শুক্রবার সকালে সুরুজ ও তাঁর খালু সুরুজের নামে রেজিস্ট্রিকৃত টাঙ্গাইলের উত্তর সখীপুরে পাঁচ শতাংশ জমি যাচাই করতে গিয়ে দেখেন জমির মালিক সুরুজ নন। আকাশ ভেঙে পড়ে সুরুজের মাথায়। মাথা ঠাণ্ডা রাখার পরামর্শ দেন খালু। শনিবার বেলা ১১টায় সুরুজের সঙ্গে শিবচরে আসেন রিয়া। সেখানে শিকলে বেঁধে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হলে বেরিয়ে আসে রিয়া নামধারী দুই সন্তানের মা সোনালি দেবনাথের 'আমেরিকান কন্যা' সাজার নানা কাহিনী। রবিবার আশেক নামের রিয়ার এক আত্মীয় সুরুজকে ২৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে গেছেন। সোমবার রাত আড়াইটায় কথিত সোনালি দেবনাথকে সুরুজের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে শিবচর থানার পুলিশ। 
প্রতারণার শিকার সুরুজ মাদবর বলেন, 'আমি অনেক দিন ধরেই বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করতাছি। এ জন্য জমিও বিক্রি করছি। শ্বশুর বাড়িতেও টাকা চাইছি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেইখা যোগাযোগ করি। সবার অজান্তেই রিয়াকে বিয়ে করি। টাকা দেই। সবাই আমার সাথে এত সুন্দর অভিনয় করে, বুঝতে পারি নাই সব সাজানো।' 
সুরুজের স্ত্রী লুবনা বেগম বলেন, 'আমার দুই সন্তান। অবস্থাও খারাপ না। এর পরও সে এগুলা কইরা ধরা খাইল। এই মহিলা আরো অনেক যুবকের জীবন নষ্ট করছে। দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া উচিত।' 
সুরুজের খালু ইমরান বেপারি বলেন, 'বিষয়টি জানার পর আমার খটকা লাগে। এরপর আমি ও সুরুজ যাচাই করে বুঝতে পারি এটি ভূয়া। মেয়েটি বড় কোনো চক্রের। বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত।' 
রিয়া রূপী সোনালি দেবনাথ বলেন, 'যে টাকা নিই, তার ১০ ভাগ টাকা আমি পাই, বাকিটা মিডিয়া অফিসের মাহমুদ, তারেক, নাজমারা নেয়। আমার মতো আরো অনেক মেয়ে কানাডা, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের সিটিজেন পরিচয়ে এই কাজ করে। শারীরিক গঠন সুন্দর মেয়েরাই এ কাজে আসে। আমাকে দিয়ে এ পর্যন্ত ৮-১০ জন যুবকের সঙ্গে প্রতারণা করানো হয়েছে।' 
শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ. জলিল বলেন, 'মেয়েটি বড় ধরনের প্রতারক চক্রের সদস্য। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করছি। তবে যুবকটিও ভালো না। কারণ, সে প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। আবার কথিত স্ত্রী রিয়াকে তিনদিন শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।'
Read More ... »

পদ্মার বুকে মাছের ফাঁদ

09 May 2010 :: 11:18 am
বড়শি দিয়ে ডিঙি নৌকায় চড়ে মাছ ধরছেন সামছুদ্দিন ভাংগী। ধান ও বাদাম তলিয়ে গেছে তাই সাতজনের সংসারের এই কর্তাকে মাছ ধরে তা বিক্রি করে পরিবারের সদস্যদের মুখে আহার দিতে হয়। শুধু সামছুদ্দিন নন, বর্ষায় চরাঞ্চলের জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ চরের বাসিন্দাকে মাছ ধরার ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। ফলে বিস্তৃত পদ্মা নদীতে বাড়ছে মাছ ধরার অবৈধ বাঁধ। তাও একটি দুটি নয়। রবিবার পর্যন্ত কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক অবৈধ বাঁধ স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে এই অবৈধ বাঁধের সংখ্যা। গত ৭ থেকে ১০ দিনে পানি বৃদ্ধির ফলে এখন শিবচরের পদ্মায় অবৈধ নদী জোড়া আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে পোনা মাছ, ডিমওয়ালা মাছ, জাটকাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিধনের মহোৎসব চলছে। তাই চরাঞ্চলের ফসল হারানো হাজার হাজার হতদরিদ্র কৃষক শেষ ভরসা মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কায় হতাশ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন সবাই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও যেন দেখার কেউ নেই। খোদ মৎস্য অফিস সূত্র জানিয়েছে, তাদের নেই অভিযান চালানোর আইনগত ক্ষমতা। এ সুযোগে অপতৎপরতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মাওয়া-কাওরাকান্দি রুটের মূল চ্যানেলেও দেখা গেছে এ অবৈধ বাঁধ। ফলে নৌযান চলাচলেও বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। সরেজমিনে পদ্মা নদী ঘুরে দেখা গেছে, কাওরাকান্দি ফেরিঘাটসংলগ্ন পদ্মায়, জনবিচ্ছিন্ন চরজানাজাতের কাওলিপাড়া, চরচান্দ্রা, জলসন, নেপালের হাওর, পোড়াকান্দিরখোল, মীর আলী সরদারকান্দি, বাড়ইকান্দি, চানবেপারিকান্দি, কাঁঠালবাড়ী, মাগুরখণ্ড, মাদবরচর, বন্দখোলা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে নদীজুড়ে আড়াআড়ি প্রায় অর্ধশতাধিক বাঁধ দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নির্বিচারে নিধন চলছে। একেকটি বাঁধ ২০০ মিটার থেকে ৬০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। বাঁধগুলোতে অসংখ্য বাঁশ গেড়ে মশারি, ছালা বা কারেন্ট জাল দিয়ে ঘেরা। নিচে মাছ আটকানোর দোয়াইর ও বড়শি। ফলে জাটকা, চিংড়ি, রুই, কাতলা, আইড়, পাঙ্গাস, বোয়ালের মা মাছ ও পোনাসহ বিভিন্ন মাছ আটকা পড়ছে। বাঁধগুলোতে ব্যবহৃত জাল দিয়ে এক ইঞ্চির পোনা মাছ বের হওয়ারও সুযোগ নেই। অথচ সাড়ে চার সেন্টিমিটারের নিচে ফাঁসযুক্ত জাল ব্যবহার ও নদীতে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতামূলক বাঁধ দেওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। এদিকে চরাঞ্চলে আরো অর্ধ সহস্রাধিক অবৈধ বাঁধ তৈরির প্রস্তুতি চলছে। এসব বাঁধের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা জড়িত বলে জেলেরা অভিযোগ করেন। তবে বাঁধগুলোর অধিকাংশ মাছ শিকারী সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে সটকে পড়ে। 
দক্ষিণ চরজানাজাত এলাকার একটি অবৈধ বাঁধের জেলে করিম মিয়া জানান, সেখপুরের জনৈক ব্যক্তি এই বাঁধ দিয়েছে। তাঁকে দৈনিক বেতনে রেখেছে। এই বাঁধে ছোট-বড় সব ধরনের মাছই ধরা পড়ে।
সাধারণ পদ্ধতিতে মাছ ধরতে থাকা জেলে ইউনুছ বলেন, 'যে বানগুলা (বাঁধ) দেহেন। এইগুলা সব বাইরের মাইনষে দিছে। চরের মাইনষের কি এত টাহা আছে? এহন আর কয়ডা বান। সামনে শত শত বান দিব। তাতে চরের হাজার হাজার মাইনষের কোনো উপকার হয় না। এই বছর চরের কৃষকের সব ফসল নষ্ট হইছে। মাছও যদি না পায় কেমনে চলব?' চন্দ্রপাড়া এলাকার জেলে দলের সর্দার আফসার উদ্দিন বলেন, 'মূল পদ্মায়ও বান আছে। ফেরিতে যে মন্ত্রী আর অফিসাররা যায় তারা কি চোহে দেহে না? নদীতে কী হইতাছে।'
চরজানাজাত ইউপি চেয়ারম্যান বজলু সরকার বলেন, 'পদ্মায় পানি বাড়ায় ইতিমধ্যেই অর্ধশতাধিক অবৈধ বাঁধ দিয়ে নির্বিচারে পোনা মাছ ও মা মাছসহ সব ধরনের মাছ নিধন শুরু হয়েছে। বাহিরের মানুষ টাকা দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে বর্ষায় শত শত বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করে।'
শিবচর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনিরুল মামুন বলেন, 'মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের নদীতে অভিযান চালানো দুরূহ হওয়ায় বাঁধের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তা ছাড়া আমরা মৎস্য অধিদপ্তরের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হলেও কোনো অভিযান চালাতে হলে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আইনগতভাবে মৎস্য বিভাগ অভিযান চালাতে পারে না। এ ছাড়া বাঁধ অপসারণের জন্য বাজেটও অপ্রতুল।' এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, 'নদীতে কোনো প্রকার বাঁধ দেওয়ার সুযোগ নেই। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ। আমি বিষয়টি জেনেছি। শিগগিরই চরাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে সব বাঁধ অপসারণ করা হবে।'
Read More ... »

ডাকাতি শেষে পালানোর সময় শিবচরে ৩ চরমপন্থী অস্ত্র, গুলি ও ডাকাতির মালামালসহ আটক

09 May 2010 :: 10:15 am
শিবচরের নিলখীতে ৩ বাড়িতে ডাকাতি শেষে পালানোর সময় ৩ চরমপন্থীকে ধারালো অস্ত্র, ২ রাউন্ড গুলি ও ডাকাতির মালামালসহ মনির মোল্লা গ্রুপের ৩ চরমপন্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ. জলিল জানান, গত রাতে (শনিবার রাত ২ টায় ) চরমপন্থী নেতা মনির মোল্লার নেতৃত্বে ১০-১২ জনের চরমপন্থী পুলিশ এএসআই মোবারকের পরিচয় দিয়ে নিলখীর চরকামারকান্দি গ্রামের রাজা সিকদার, নাজমা বেগম ও মোহাম্মদ মাদবরের ঘরে প্রবেশ করে। চরমপন্থীরা আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে প্রায় দেড় লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। চরমপন্থীদের উপস্থিতি টের পেয়ে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা ফাঁকা গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালাতে থাকে। এসময় এলাকাবাসী ধারালো অস্ত্র ও গুলিসহ বাদশা হাওলাদারকে (৩৮) আটক করে। পরে শিবচর থানার পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে শহিদুল রাড়ী (২৬), বাবুল মিয়াকে (২৮) ডাকাতিকৃত ৩টি মোবাইল সেট, একটি বডিস্প্রে, একটি মানিব্যাগ উদ্ধার করে। 
Read More ... »

শিবচর-মাদারীপুর সড়কে গাছ কাটার মহোৎসব ॥ অপ্রশস্ত সড়ক প্রশস্তের নামে প্রশস্ত সড়কেরই গাছ নিধন

07 May 2010 :: 12:25 pm
মাদারীপুর-শিবচর সড়কে গাছ কাটার মহোৎসব শুরু হয়েছে। সড়ক প্রশস্ত করার জন্য অপ্রশস্ত সড়কের বাধা সৃষ্টিকারী গাছ কাটার কথা থাকলেও প্রশস্ত সড়কের গাছ কেটে নেয়া হচ্ছে। তাও আবার প্রশস্ত সড়কের পাশের অনিরাপদ গাছ রেখে কাটা হচ্ছে নিরাপদ দূরত্বের মোটা গাছগুলো।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ, ঠিকাদার ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, পাঁচ্চর-শিবচর-মাদারীপুর সড়কের ১৮তম কিলোমিটার অংশ হতে ৩৪তম কিলোমিটার অংশ পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে সড়ক ১২ ফুট থেকে ১৮ ফুট প্রশস্তকরণে বাধা সৃষ্টিকারী বৃক্ষাদি অপসারণকল্পে নিলাম দেয়া হয়। ঢাকার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী বৃক্ষপালনবিদের কার্যালয় থেকে মোট ১৬টি ভাগে ১৫২টি গাছ ১৫ দিনের মধ্যে অপসারণের দায়িত্ব দেয়া হয় ৭ জন ঠিকাদারকে। প্রথম গ্রুপের ৯টি গাছ ৫০ হাজার ৮শ ৮০ টাকা, দ্বিতীয় গ্রুপের ১০টি গাছ ৪৭ হাজার ৯শ ৪০ টাকা, তৃতীয় গ্রুপের ১২টি গাছ ৪৯ হাজার ৯শ ৫৮ টাকা, চতুর্থ গ্রুপের ২০টি গাছ ৪৮ হাজার ৬৪ টাকাসহ ১৬টি গ্রুপে গাছগুলো নিলাম হয়। ইতোমধ্যে গত বুধবার থেকে শিবচরের বাঁশকান্দি ইউনিয়নে শেখপুর অংশে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ১৮ ফুট প্রশস্ত সড়কে প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রুপের গাছগুলো অপসারণ শুরু হয়েছে। গাছগুলোও সড়কটি থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকার পরও গাছগুলো কর্তন করায় ও সব গাছগুলো পানির দরে বিক্রি করায় এলাকাবাসীসহ জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের মাঝেও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অথচ বিস্ময়ের বিষয় দরপত্রে সড়ক প্রশস্তকরণের ক্ষেত্রে গাছ অপসারণের কথা উল্লেখ থাকলেও ১৮ ফুট প্রশস্ত সড়কেই চলছে গাছ নিধন। 
সরেজমিনে সড়কটির শেখপুর শিকদারকান্দি সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মোট ২৩ জন শ্রমিক ৩ ভাগে ভাগ হয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রপের গাছগুলো অপসারণ করছে। ১৮ ফুট প্রশস্ত সড়কের অংশে ৯ ও ১০ নং গাছ (লাল কালির চিহ্ন সম্বলিত) দুটি নিরাপদ দূরত্বে নদীর দিকে হেলে থাকতে দেখা গেলেও গাছগুলোকে সড়কটির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা  করে কাটা হচ্ছে। এছাড়াও ৭ নং চিহ্ন সম্বলিত শিশু গাছসহ অধিকাংশ গাছগুলো ১৮ ফুট প্রশস্ত সড়কের নিরাপদ দূরত্বে থাকলেও গাছগুলো কর্তন করা হচ্ছে। ৭নং গাছটিসহ অধিকাংশ কর্তনকৃত গাছগুলোর পার্শ্ববর্তী চিকন গাছগুলো সড়কটির অনিরাপদ দূরত্বে থাকলেও বেছে বেছে পুরাতন ও মোটা গাছগুলোই কর্তন করা হচ্ছে। এতে এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শিকদারকান্দি গ্রামের মোতালেব খান বলেন, সড়ক ১৮ ফুট করবো তাই গাছ কাটতাছে। কিন্তু শেখপুর ব্রিজের পর সামনের মোড় পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তা ১৮ ফুটই আছে। তারপর এই গাছগুলা কাটে কেন? গাছগুলাতো হেইলা আছে নদীর দিকে রাস্তার সমস্যা কি? আসল কথা হইলো শিশু গাছ, কড়ই গাছ, মেহগিনি গাছগুলা মোটা হইছে সারও হইছে। এইজন্য হেগো নজর লাগছে। নাইলে রাস্তার ভেতরের চিকন গাছ থুইয়া রাস্তার বাইরের মোটা গাছ কাটবো কেন!
স্থানীয় এলাকাবাসী মজিবর, রবিউলসহ অনেকে ক্ষোভের সাথে বলেন, রাস্তা বাড়ানোর নাম করে সড়ক-ঘেষা গাছগুলো না কেটে নিরাপদ দূরত্বে থাকা মোটা ও বড় গাছগুলো দেদারসে কাটা হচ্ছে। যার এক একটির মূল্য কম করে ২৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। অথচ টেন্ডারে ১০-১২টি গাছের দাম ধরা হয়েছে ৪৫ থেকে ৫২ হাজার টাকা পর্যন্ত। বাঁশকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, শেখপুর সেতুর পর ইটভাটা পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কটি ১৮ ফুট প্রশস্ত। এ অংশে একটি মরা শিশু গাছ ছাড়া বাকি কোন গাছই সড়কটির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়।
গাছ কাটার কাজে নিয়োজিত শ্রমিক মো. আলীম বলেন, আমরা ২৩ জন শ্রমিককে ১ হাজার সিএফটি কাঠ কাটার চুক্তিতে আনা হয়েছে। ১ হাজার সিএফটিতে অন্তত ২শ গাছ হবে।
গাছ কাটা শ্রমিকদের ঠিকাদার মো. সরোয়ার বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের দেখিয়ে দেয়া গাছগুলোই কাটা হচ্ছে। বাকি কিছু বলতে পারব না।
নিলামে ৬টি গাছের গ্রুপ ক্রয়কারী ঠিকাদার লিটন শিকদার বলেন, সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে আমরা ৭ জন ঠিকাদার এই সড়কের ১৬টি গ্রপের ১৪৫ অথবা ১৫২টি গাছ ক্রয় করেছি। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের মার্কিং করা গাছই কাটছে ঠিকাদাররা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বরত উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. ফেরদৌস বলেন, সড়কটির ১৮তম কিলোমিটার থেকে ৩২ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কে ১২ ফুট থেকে ১৮ ফুট প্রশস্তকরণে বাধা সৃষ্টিকারী ১৫২টি গাছ টেন্ডারের মাধ্যমে কাটা শুরু হয়েছে। তবে সড়কটির স্বার্থেই ১৮ ফুট প্রশস্ত শেখপুর এলাকার ১ কিলোমিটার ও সাদীপুর অংশের দেড় কিলোমিটার এলাকার বেশকিছু গাছও কাটা হচ্ছে। এরমধ্যে শেখপুরের মসজিদ সংলগ্ন ২/৩টি গাছ নিরাপদ দূরত্বে থাকা সত্বেও মুসল্লীদের অনুরোধে কাটা হচ্ছে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের হলেও গাছ কাটার সময় উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করতে হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা তা করেনি। আমার কাছেও বিষয়টি নিয়ে নানান অভিযোগ এসেছে। কিন্তু গাছগুলো সওজ-এর হওয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারছি না।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আ. রেজ্জাক বলেন, মূলত গাছ কাটতে হবে ১২ ফুট প্রশস্ত সড়ক অংশে। তবে কোন গাছ ১৮ ফুট অংশে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে সেই গাছ কাটতে পারে।
Read More ... »

এবার ভেঙ্গেছে বাঁধ : তলিয়ে গেছে নতুন নতুন ফসলের ক্ষেত


06 May 2010 :: 11:21am
শিবচরের চরাঞ্চলে এবার কাওলিপাড়া বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে অন্তত ১২শ’ বিঘার ধান। পানিতে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকার বোরোর মাঠ,বাদামের ক্ষেত। বিশেষ করে চরাঞ্চলের একমাত্র ফসল হারিয়ে কৃষকের ঘরে ঘরে হাহাকার নেমে এসেছে। জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্লাবণকে চরাঞ্চলের কৃষকদের জন্য মহাবিপর্যয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ধার-কর্য বা ঋণের টাকা পরিশোধের চিন্তায় কৃষকের ঘরে এখন শুধু বিষন্নতা। 
সরেজমিনে চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে,গতকাল বুধবার সকালে চরজানাজাত ও কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের কাওলিপাড়া বাঁধ ভেঙ্গে অন্তত ১২শ বিঘার ধান নিমিষেই তলিয়ে যায়। পদ্মাবেষ্টিত এ চরাঞ্চলের ৪টি ইউনিয়ন মাদবরচর,চরজানাজাত,বন্দরখোলা,কাঁঠালবাড়ির ১০ হাজার কৃষকের অন্তত ১৫ হাজার বিঘার বোরো ধান ও আড়াই হাজার বিঘার বাদাম পানিতে তলিয়ে গেছে। গত ৩ দিনে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ও পূর্ণিমার প্রভাবে পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়ে চরাঞ্চলের একমাত্র ফসল হারিয়ে কৃষকের ঘরে ঘরে আহাজারি নেমে এসেছে। পানি বৃদ্ধির গতি অস্বাভাবিক হওয়ায় হাজার হাজার বিঘার জমির কাচা ধান পানির নিচেই রয়ে গেছে। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠের উপর দিয়ে এখন ট্রলার ও নৌকা চলতে দেখা গেছে। একদিকে ধান ও ফসল হারানো অপরদিকে মহাজন,ব্যাংক ও এনজিওদের ঋণের টাকা পরিশোধের চিন্তায় বিমর্ষ হয়ে পড়েছে। কৃষক ও পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে চরাঞ্চলজুড়ে হাহাকার নেমে এসেছে। চরাঞ্চলের জনপ্রতিনিধিরা এ সংকটকে কৃষকের জন্য চরম বিপর্যয় বলে আখ্যা দিয়ে দ্রুত সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। 
মাদবরচরের হাফিজ মিয়া বলেন,এ বছর আগেভাগে পানি আহায় আমাগো চরের হাজার হাজার বিঘার ধান ও বাদাম তলাইয়া গেছে। এবার আমরা পুলাপাইন নিয়া কি খামু? ধানই পামু কই? ধার বা ঋণের টাকাই বা দিমু কইর থিকা? আল্লায় জানে। দয়া কইরা আমাগো বাঁচান। 
চরজানাজাত ইউপি চেয়ারম্যান বজলু সরকার বলেন, এই চরের চারটা ইউনিয়নের প্রায় লাখো মানুষ এই ধান ও বাদামের উপর নির্ভরশীল। বাকি সময় এই জমিতে পানি থাকে। তাই ফসল হারিয়ে কৃষকদের ঘরে এখন শুধু হাহাকার। 
মাদবরচর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়ায় চরের হাজার হাজার বিঘার প্রতিদিন ধান ও বাদাম এখন পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান বলেন, চরাঞ্চলসহ সারা উপজেলার ধানসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে চরের কৃষকের এক্ষতি তাদের জন্য চরম সংকট আকারে দেখা দিবে। কারণ এ ফসলের উপরই মূলত হতদরিদ্র এ মানুষগুলো নির্ভরশীল। চরে হাহাকার নেমে আসবে। 
Read More ... »
Widget By Devils Workshop
 

আজকের চাঁদ

CURRENT MOON

© 2009-2010 shibcharsangbad | Design by: Md. Abul Hossain Miah

^ উপরে আসুন