17 May 2010 :: 10:12 am
জন্মের পর জান্নাতুলের বয়স এখন সাড়ে সাত মাস। বাবার স্নেহ জোটেনি ভাগ্যে। বরং বাবার কারণেই জন্মের পাঁচ মাস আগে থেকেই 'একঘরে' জীবনের স্বাদ পায় সে। সেই জান্নাতুল ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর প্রথমবারের মতো বাবার কোলে যাওয়ার সুযোগ পেল। এ দৃশ্য মা রসনার চোখে জল এনেছে। হাজারো বঞ্ছনার মধ্যেও এ যেন এক চরম তৃপ্তি। সন্তানের পিতৃপরিচয়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের কপালেও স্ত্রীর অধিকার জুটল শিবচরের রসনা বেগমের।
শিবচর থানা পুলিশের তৎপরতায় বিয়ের মধ্য দিয়ে রসনা স্ত্রীর অধিকার ও জান্নাতুল সন্তানের অধিকার পায়।
দত্তপাড়া ফাঁড়ির দায়িপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রশান্ত দাস বলেন, শিবচর থানার ওসি আ. জলিলসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ৭ মে বিকেলে অভিযুক্ত আলম বাওয়ালিকে শিরুয়াইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে শনিবার বিকেলে দত্তপাড়া ফাঁড়িতে কাজী ডেকে তাদের বিয়ের কাবিন করা হয়।'
প্রায় দুই বছর আগে দত্তপাড়া ইউনিয়নের জোনাব আলী মাদবরের একমাত্র মেয়ে মুড়িবিক্রেতা রসনা বেগমের সঙ্গে পাশের এসকান বাওয়ালির ছেলে আলম বাওয়ালির প্রেমের সূত্রপাত। প্রেমের সম্পর্ক গভীর হলে আলম রসনাকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ৭০ হাজার টাকা উত্তোলন করে। এর প্রায় এক বছর পর (মার্চ ২০০৯) টাকা নিয়ে গড়িমসি শুরু করলে রসনা আলমকে চাপ দেয়। আলম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ততদিনে রসনা প্রায় ৬ মাসের গর্ভবতী। এ কথা জানার পর আলম গা-ঢাকা দেয়। এর পর স্থানীয় প্রভাবশালী ও দত্তপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির হস্তক্ষেপে সালিস বৈঠকে আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ওইদিন বিকেলেই রসনাকে বিয়ে করার অঙ্গীকার করে ফের গা-ঢাকা দেয়। মেয়ে-সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় রসনার। সালিস বৈঠকের মাধ্যমে তাঁকে 'একঘরে' বা 'সমাজচ্যুত' না করলেও প্রতিবেশী বা আত্মীয়স্বজন সবাই মুখ ফিরিয়ে নেয় তাঁর পরিবারের ওপর থেকে। অঘোষিতভাবেই সমাজচ্যুত ছিল শিশুসন্তানসহ পরিবারটি।

0 মন্তব্য(সমূহ):
Post a Comment