সাইট উন্নয়নে আপনাদের লেখা ও পরামর্শ চাচ্ছি-সম্পাদক

কাওড়াকান্দি ফেরি ঘাটে ২ চাঁদাবাজ গ্রেফতার


র‌্যাব ৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের একটি দল লে. কমান্ডার নূর হাসান এর নেতৃত্বে আজ রাতে শিবচরের কাওড়াকান্দি ঘাটে এক বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে ট্রাকের হেলপার সেজে এবং মাইক্রোবাসের যাত্রীবেশে উক্ত ঘাট থেকে চাঁদাবাজির সময় হাতেনাতে মো. ফরহাদ খাঁ (২৬) ও মো. দুদু মিয়াকে গ্রেফতার করে। 
র‌্যাবের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা জানায়, স্থানীয় নেতা মাসুদ মাদবর, ফজলু, খোকা ও সুজন এর নির্দেশে তারা কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে প্রত্যেক ট্রাক ও বাস প্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে এবং মাইক্রোবাস প্রতি ১০ থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। 
তারা আরো জানায়, অন্যান্য সকল যানবাহন থেকে এমনকি যাত্রীদের কাছ থেকেও চাঁদা আদায় করে থাকে। এ ছাড়া যানজটের সময় গাড়ি প্রতি চাঁদার পরিমাণ আরো বেশি বেড়ে যায়। উভয়ের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বাখরেরকান্দি গ্রামে।
Read More ... »

চোর ধরতে গিয়ে

শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের কাজিরসুরা গ্রামে প্রতিরাতে সঙ্ঘবদ্ধ চোরের দল খেজুর গাছ থেকে রস চুরি করে হাড়িগুলো ভেঙ্গে ফেলেচোরের উৎপাত ঠেকাতে গাছি আনিস বেপারী শনিবার রাতে চোর ধরার জন্য সরিষা ক্ষেতে ওৎ পেতে বসে থাকে/ জনের চোরের দল খেজুর গাছে উঠে রস নামানো শুরু করে সময় গাছি আনিস বেপারী লাঠি দিয়ে চোরদের ধাওয়া করেতখন চোরের দল উল্টো গাছি আনিস বেপারীর উপর চড়াও হয়ে তাকে বেধরক মারপিট করেচোরের মার খেয়ে গাছি এখন অসুস্থ। 
Read More ... »

শিবচর থেকে অস্ত্রসহ ৪ সন্ত্রাসী গ্রেফতার

শিবচর থানার পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ দুপুর ১২টায় নিলখী ইউনিয়নের চর কামারকান্দি গ্রামে অভিযান চালিয়ে ১টি বিদেশী রিভলবার ৩টি রাউন্ড গুলিসহ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীকে আটক করেছে
চরমপন্থী অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত নিলখী ইউনিয়নের চর কামারকান্দি গ্রামে আজ দুপুরে চরমপন্থীদের উপস্থিতি টের পেয়ে শিবচর থানার ওসি আবদুল জলিলের নেতৃত্বে এসআই শেখ আবদুল্লাহ, এসআই মনির এএসআই মোবারকের একটি পুলিশ দল ঘণ্টা অভিযান চালায় সময় রমিজ ভূইয়ার সেকেন্ড ইন কমান্ড চরমপন্থী নেতা হাসা ভূইয়া (৩৫), জাহাঙ্গীর বেপারী (২২), রফিক ভূইয়া (৩০) মাহাবুব ভূইয়া (২২)কে আটক করেতাদের জবানবন্দির ভিত্তিতে হাসা ভূইয়ার ঘরে তল্লাসি চালিয়ে ১টি বিদেশী রিভলবার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেআটককৃতদের নামে শিবচর থানায় অস্ত্র, ডাকাতি খুনসহ ৫টি মামলা রয়েছে
Read More ... »
সাংঘাতিকী
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবী


তিনি কভু কবি আর, কভু হন ছড়াকার
আলোচক, বক্তা, চাটুকার, গীতিকার।
সংগঠক, গবেষক, সম্পাদক, শিল্পী
প্রীতিকার, স্মৃতিকার, চামচা ও তল্পী।
প্রকাশক, প্রাবন্ধিক, দল-লীগের ভক্ত
বদলান সুর, রূপ, প্রায় হর ওয়াক্ত।
সাংঘাতিক-সাংবাদিক, সেবক, উপদেষ্টা
অর্থ ও পদে তার বড় বেশী তেষ্টা।
এই ছিলেন সেই ছিলেন বাংলার দেশেতে
চিটিং আর দালালি করে পরিশেষেতে।
মানুষরে নাম দিয়ে শান দেয় লেজ তার
বোঝা হায়, বুঝা দায় কিসিঞ্জারি প্যাচ তার!
এই ঘরে দিন কাটে, ঐ ঘরে রাত্রি
শকুনির চোখ যেন-পকেটের যাত্রী।
মন্ত্রি বা যন্ত্রি সবাই হয় তার বন্ধু
চাইলেই তব হাতে দিতে পারে ইন্দু।
দেয় কভু কারো শিরে পদবি, গিফট, স্বর্ণ
মদ খেয়ে নাচে কভু পাবে হয়ে পর্ণো
বিশ্ব প্রবাসীর মনে ভাবে বোকা প্রায়
মতলব বাজী করে সর্বদা পেতে চায়।
এখানে বা ওখানে আছে কিছু লোক তার
চামচাগিরিতে সে ষষ্ঠমুখি মোখতার।
ওরে সাধু, পচা কদু, লেজ, মুখ সামলা
খাবি তুই কিল, গুতো, হবে শত মামলা।

১২ জুন ২০১০, লন্ডন

(পাঠক সাবধান, এই লোকটি এখন আপনার আশে পাশেই।
সে জানে আপনার পকেটে কিভাবে নিতে হয়)।
Read More ... »
বাংলা শব্দের ভোজ বিলাস 
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবী, (লন্ডন থেকে) 

অনেক দেশ এবং ব্যক্তি শব্দের জাত-পাত বিচার করে, শব্দকে পড়ায় ধর্মের পোষাক। তা সাহিত্যের বিচারে সমর্থনযোগ্য হলেও, দেশীয় বৃহৎ শব্দভান্ডারের প্রয়োজনে নমস্য নয়। বর্তমান বিশ্বে যেখানে প্রায় প্রতিদিন হেরে যাচ্ছে ভাষার আদিরূপ। সেখানে আমরা ভাষার জাত-পাত নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি না করে পারি। আরবি, বাংলা, ইংরেজি ও সংস্কৃত শব্দ বলেই শব্দটি হিন্দু, মুসলিম, ইংরেজ ও বাঙ্গালি হয়ে যায় না। 

একটি ইসলামি সঙ্গীতে মোহরম, ঈদ, ঈদগাহ, আল্লাহ, নবীর নাম আসাটা স্বাভাবিক। সেখানে ভাবের বিশ্লেষণে লেখক শব্দের সন্ধানে যান। একই ভাবে রাম-সীতার কাব্য-কথায় কৃষ্ণ, ভগবান, পূঁজো ধরণের শব্দ আসবেই। এ রকম শব্দ ছাড়া হিন্দুধর্মীয় সাহিত্য হতে পারবে না। কিন্তু যেহেতু, একজন মুসলমান মসজিদে পূঁজো দেয় না, কুরবানির সময় দেয় না বলী, তাদের নবীর উপর প্রশংসা বাণীর নাম কীর্তন নয়, কখনো মুসলমানের আল্লাহ হরি, রাম ও ভগবান হয় না, হওয়াতে মন ভরে না, ঠিক অনুরূপভাবে, একজন হিন্দু মন্দিরে এবাদত করে না, তাদের দেবীর নামে রচিত গাঁথা দরুদ নয়। একই ভাবে মনসার নামে পাঁঠাবলি কুরবানি হওয়া সহজ নয়। হিন্দুদের বলীর মাংসে মুসলমানের জিহ্বায় লোলুপতা আসে না, মজা জাগে কম। গোশত পেলে দোস্তের মত মনে হয়। হিন্দু ভায়েরা মাংসে যে স্বাদ পান, তা গোশতে পাবার কথা নয়। তাদের মাংসে যে রুচি, তা গোশতে নেই। তুলসি পাতার জল হিন্দুদের যে রকম প্রাণের পিপাসা মেটায়, মুসলমানের কাছে মহা পূণ্য-পবিত্র আরবের জমজমের পানিতে তা করবে বলে তারা বিশ্বাস করে না। দেশ ভেসে যায় বন্যার জলে, না বন্যার পানিতে, তা নিয়েও আমাদের দেশে রাজনীতি হয়, হয় গরম গরম রচনা। মাইকে বক্তৃতা চলে, অন্যদিকে মানুষ কাঁদে ক্ষিদে! গরু-ছাগল ভেসে যায় নোনা দরিয়ায়। ফতোয়ার ফয়সালা হয় না। অথচ, আমরা জল পানি উল্লেখ না করে, বন্যায় দেশ ভেসে যায় লিখতেও পারতাম। আমার একটি ছড়ায় আছে, ‘দেশ ভেসে যায় বন্যায়/ব্যাংক মেরে ব্যাংককে যায় আমার কন্যায়’। কিন্তু না, তা আমরা করি না, কারণ, জোর করে টেনে এনে শব্দকে জাতির টুপি-টিকি না পরালে কি আর সাহিত্যিক হওয়া যায়? 

কোন একজন তার ছেলেকে বাজার থেকে মাছ-গোশত আনতে আদেশ করতে পারে। ঘরোয়াভাবে গোশত শব্দ রুচিকর। তৃপ্তিদায়ক। কিন্তু একজন লেখক তার লেখায় মাছ-মাংস বলবেন। এটি সুন্দর, যুক্তিগ্রাহ্য, মানান সই এবং অর্থবহ। মাছ-গোশতে আছে জিহ্বার স্বাদ। মাছ-মাংসে আছে সাহিত্যের উপকরণ। মাছ-মাংশ শব্দদ্বয়ে মা মা ছন্দময় ধ্বনিটি মনে- মননে অনুরণন আনে। গোশত ভরায় পেট, মাংস আনে সাহিত্যে শক্তি, শর্করা ও ভিটামিন। 

যেহেতু, পেট আমাদের বাঁচায়, তাই দরকার গোশতের। আর এই বাঁচাটা যেহেতু সমাজ, সভ্যতা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির জন্য তাই মাংসও খাওয়া চাই নিয়মিত-পরিমিত। মাছ-গোশত অথবা মাছ-মাংসের বিষয়টি এ ভাবে মেনে নিলে শব্দে জাত-পাত নিয়ে জাত্যামি আর থাকবে না। গোশত-মাংস খেতেও পারব, লিখতেও পারব। 

(২) 

আমাদের বাংলাসাহিত্যে অনেকে মধ্যপন্থী হতে চেষ্টা করেছেন। সফল হন নি। তারা শব্দের জাত-পাত রক্ষা করার নামে মাঝামাঝি একটি প্রতিশব্দকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে, শব্দটি ডাকে সাড়া দিয়েছে, এসেছে, বসেছে, কিন্তু কোন কথা বলতে পারে নি। কোন ভূমিকা রাখতে পারে নি। যেন নিরহ-নির্বোধ মেহমান। নির্বোধ অতিথি যেমন বড় কোন সভা-সমাবেশে নিজেকে অপরাধী মনে করে, লজ্জা পায়। শব্দটিও সে রকম। কারণ, তাকে ডেকে বসানো হয়েছে ঠিকই কিন্তু যথার্থ মর্যাদা দেয়া হয় নি। 

মুসলামানের আল্লাহ এবং হিন্দুর ভগবান এর প্রতিশব্দ প্রভু, বিভুকে মেনে নিলে সাহিত্যের আপত্তি না থাকতে পারে, কিন্তু এতে ভক্তের মন ভরে না। একজন ‘আবেদ’ আল্লাহ নামে যে ঈমানি জজবা পান, একজন হিন্দু পূজাঁরি ভগবান স্মরণে যে আত্মতুষ্টি এবং তৃপ্তি পান তা প্রভু-বিভুতে নেই। ‘যতই কাঁদি, তবু, প্রিয়ার মন ভরে না কভু। মনের মজা এবং সাহিত্যের স্বার্থ এক নয়। আমার মূল বক্তব্য এখানেই। 

তাই বলে, শব্দের জাত-পাত লেখক কর্তৃক নির্ণীত হওয়া কাম্য নয়। সেটা লেখকের কাজ নয়। কোন নির্দিষ্ট শব্দের প্রতি লেখকের আগাম আগ্রহ বা দুর্বলতা থাকলে লেখাটি আর সাহিত্য হয়ে উঠে না। 

লন্ডনে লেখকের বই-পুস্তক সম্পাদনা করা, সাহিত্য সভায় সাহিত্য বিষয়ে আলোচনা করা এবং প্রকাশনা উৎসবে কথা বলার জন্য মাঝে-মধ্যে আমি অনুরুদ্ধ হই। সুযোগ হয় তাঁদের লেখার ছত্রে ছত্রে হাঁটতে। আমি দেখেছি যে, কেউ কেউ একটি শব্দকে আদর করতে গিয়ে বাক্যে ও ভাবের গভীরতায় প্রবেশ করাটাকে কঠিন করে তুলেছেন। গতি হারাতে সহায়তা করেছে মাত্রা অনুপ্রাসকেও। খুবই সুন্দর একটি কথা বা কবিতাকে তারা স্বর্গের দ্বার থেকে বিদায় জানিয়েছেন। তখন তার কষ্টসাধ্য আরাধ্য কাজটি লেখা হলেও সাহিত্য হয়ে উঠতে পারে নি।। 

শব্দকে আমরা ডাকতে পারি না। ভাব বিষয় ছন্দ এবং মাত্রাই শব্দকে টেনে নিয়ে আসবে। আহবান করবে, বসতে দেবে যথাযথ মর্যদায়। কথা বলতে দেবে। শব্দ আসবে আপনার স্বার্থে। যেমন মৌমাছি ছুটে যায় ফুলে নিজের গরজে । মৌমাছির মধু আহরণ নিজের জন্য হলেও তা কাজে আসে সকল সৃষ্টির, ঠিক সাহিত্য নিজের হলেও তা থেকে উপকৃত হতে হবে বিশ্বের মানব সভ্যতা। সাহিত্য আপনার জন্য নয়-মানুষের জন্য। কোন লেখকের মাথায় লেখার আগে শব্দ চিন্তা থাকলে তিনি আর সে আবহ থেকে বের হতে পারেন না। পরিকল্পিত শব্দধারণা একটি সীমাবদ্ধতার চিত্র এঁকে দেয়। শব্দ আসবে শব্দের জন্য। জসিম উদ্দিন থেকে একটি উদাহরণ দেয়া যাক: 
এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে
ত্রিশ বছর ভিজিয়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে। 

আমরা জানি, এটি ইসলামি কবিতা নয়। কবর ষোল আনা আরবি শব্দ। তারপরও লেখক শব্দটি বেছে নিয়েছেন। কারণ, বিশ্ব বাঙ্গালীরা ভাল ভাবেই শব্দটিকে চিনে এবং জানে। শ্মশানের চেয়ে কবর অনেকটা জীবন্ত । শ্মশানের ছাই আর কবরের মাটির মরমিতা এক নয়। শ্মশান নির্বাক বেদনার দাহ, কবর সবাক হাড্ডির কান্না। কবরের কাছে যতটা নিবেদিত, সমর্পিত এবং বিগলিত হওয়া যায় শ্মশানের ছাই ততটা টানে না। কবর একটি চিত্র এঁকে দেয়। মনে হয় ভেতরে কে যেন আছে। শ্মশানের হায় হুতাশ আকাশে ঘুরে বেড়ায়। কবরে ত্রিশ বছর নয় যুগ যুগ ধরে কাঁদা যায়। ফেলা যায় দুই নয়নের জল। এই অর্থে আলোচ্য কবিতায় অত্যন্ত সার্থক ভাবেই শ্মশান এর স্থলে কবর শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। লেখক মুসলিম বলে কবর শব্দের আমদানী করেন নি। শব্দটি এসেছে সাহিত্যের প্রয়োজনে। ভাবের মোহে। পরিস্থিতির আবহে। না হয় তিনি 'জল’ কেও জলাঞ্জলি দিতে চেষ্টা করেতন। তিনি তা করেন নি। জল এসেছে জ্বলজ্বল করে সাহিত্যকে আলোকিত করার প্রয়াসে। জল ছাড়া কবিতাটি হতো না। এখানে জল যেভাবে তৃষ্ণা মেটাচ্ছে পানি তা পারতো না। শব্দের ধরণ এখানে বিবেচ্য নয়। গাথুঁনিটাই প্রধান। 

এই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা দেখি, ইসলামি শব্দ দিয়েও একজন মুসলিম কবি একটি সার্বজনীন কবিতা সৃষ্টি করতে পারেন। অতিক্রম করতে পারেন জাত-পাতের সীমানাও। এটাই সাহিত্য চায়। আমি চাই। 


(৩) 


রাজনৈতিক মেনোফেস্টোতে যত কথাই থাকুক না কেন, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে তারা তাতে সংশোধনী আনেন। করেন সংযোজন বা বিয়োজন,-কালের এবং বৈশ্বিক প্রয়োজনে তা করতে হয়। একজন লেখকও সে রকম। নেতারা রাষ্ট্র চালান, লেখক চালান নেতার মন-মানসিকতা। নেতারা লেখা থেকে নীতি পান। তাই লেখককে কলম ধরার সময় অনেকগুলি চোখ খোলা রাখতে হয়। 

পরিশেষে বলি, (প্রায়োগিক অর্থে) শব্দের জাত-পাত আছে। আছে বাড়ি-ঘর, ঠিকানা, বৈশিষ্ট্য, স্থান, কাল, পাত্র, শ্রেণীবিন্যাস, রাগ বিরাগ, মান-অভিমান, দ্বন্দ্ব-কলহ, বিবাহ-বিরহ এবং তালাকও। এ সবই হয় সাহিত্যের প্রয়োজনে, সৃষ্টির স্বার্থে। ধ্বংস-সংঘাতের জন্য নয়। শব্দের এই বিভাজন হিন্দু-মুসলিম দর্শনের নয়। দংশনরে নয়। দর্পনের। ’৪৭ সালের দ্বি-জাতিতত্ত্বের মত নয়, মাহাত্মা গান্ধির অহিংসার মত। ’৭১ এর মত একটি স্বাধীন, নির্ভেজাল রাষ্ট্র পাবার সংগ্রামের মত। শেখ মুজিবুর রহমানের ‘ভাতে মারবো, পানিতে মরবো’র মত নয়। 

সাহিত্যের বিভাজন ভাল। এতে করে নানা রকম, ভিন্ন স্বাদের এবং সাধের সাহিত্য সৃষ্টি হয়। উপকৃত হয় জাতি, সমাজ, ও সভ্যতা। তৃপ্তকর হয় শব্দ-সাহিত্যের ভোজ বিলাস। 

তবে, সাহিত্যিকদের বিভাজন কাম্য নয়। ইহাতে মন্দ এবং দ্বন্দ্ব বাড়ে। জাতি, সমাজ ও সভ্যতার ক্ষতি হয়। শব্দ-সাহিত্যে কালিমা পড়ে। 

তখন মাংসও যায়, হারাতে হয় গোশতের স্বাদও। 


২৩.০৬.২০১০ লন্ডন।
Read More ... »
ইউরোপে বাংলাদেশ 
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হাবিবী, (লন্ডন থেকে) 


১৬ তারিখ থেকে দুই সপ্তাহের জন্য ইংল্যান্ডের স্কুল কলেজ বন্ধ। ইস্টার হলি ডে। শনি ও রবিবার আমি একটি বাংলা স্কুলে শিক্ষকতা করি বিধায় বাইরে যাওয়া হয় না। স্কুলটি আমার বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে। নাম 'বাংলাদেশ কালচারাল সোসাইটি স্কুল'। আমরা এখানে বাংলা-আরবির পাশাপাশি আবৃত্তি ও গান শেখাই। এ ধরণের স্কুলের জন্য স্থানীয় সরকার (বরা) আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে না। ছেলে এবং স্ত্রী অনেকটা অসুস্থ। বাসার সব কাজই আমাকে করতে হয়। এ দেশে বাসা-বাড়িতে কাজের ছেলেমেয়ে রাখা শতকরা ৯০ জনের পক্ষে সম্ভব নয়। 

আমি একটি কলেজে কাজ করি এবং পিএইচডির স্বপ্ন নিয়ে অক্সফোর্ডে যাই। যার কারণে লন্ডনের এই প্রবাসজীবন আমার কাছে অনেকটা কঠিন। এখানে অনেক কষ্ট, যা হয়ত বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করতে চাইবে না। এদিকে সুন্দর আবহাওয়া, মন বলে বাইরে যাই। গাছে মুকুলিত হচ্ছে কিশলয়, ভেতরে ভেতরে রেণু-পরাগের লুকোচুরি অসম প্রেমের নতুন চিঠির মত। ছেলেমেয়েকে নিয়ে পার্কে যাই। নাম 'হারেঙ্গে সিভিক সেন্টার পার্ক'। উল্লেখ্য যে, এদেশের পার্কগুলি ছিমছাম পরিপাটি, সুন্দর, সাজানো-গুছানো। ছেলেমেদের বিনোদনের যাবতীয় সুব্যবস্থা এখানে করা থাকে। লন্ডনে অনেকগুলি বড় ছোট পার্ক আছে। কিন্তু সুবিধাদি প্রদানের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কোন শ্রেণী-বিন্যাস করে না। জাত-গোষ্টির বিতর্ক নেই। 
পার্কের ভেতর ফুলের বাগান, ফুটবল খেলার মাঠ, প্লাস্টিক বা লোহার চেয়ার টেবিল খেলাধুলার নানান সরঞ্জামাদি দেখে মনে হবে আপনি কোন এক বিশেষ আবেষ্টনীর আবহে আছেন। আমি বলি, British park is for Think, Thing and Sing. দেখার, উপভোগ করার এবং মনের সুখে বসে গান করার মত নির্জন স্থান আর হয় না। বসে থাকুন একা অথবা মহিলা-বন্ধুর কোলে, না কারো কোন শ্যেনদৃষ্টি নেই। নেই মামা-মাতব্বরের রক্তচক্ষু। 
কুকুরের বিষ্টা ফেলার আলাদা ব্যবস্থা, একটি কলা খেলে তার বাকলটি কোথায় ফেলবেন, কোন রঙের বোতল-গ্লাস, কাগজ (পাতলা-মোটা), টিনের বোতল, কাপড়-চোপড় কোথায় ফেলবেন তার জন্য নির্দিষ্ট 'বিন' বসানো আছে। 'বিনে'র গায়ে লেখা থাকে, যদি কোন কারণে 'বিন' নষ্ট হয়, খোলা না যায় অথবা আবর্জনায় ভরে ওঠে, আপনি কাকে (ফ্রি) ফোন করবেন। লেখা থাকে, সপ্তাহের কোনদিন এবং কখন লরি এসে তা নিয়ে যাবে। 
পার্কে কোন গার্ড বা মালি নেই। পুলিশের ডান্ডা এবং নেতার কিল-ঘুষির কোন ভয় নেই, তারপরও সব আছে। মনে হয় আমাদের কেউ দেখছে। এক অদৃশ্য শক্তি যেন আমাদের শাসন করছে। চকলেটের একটি ছোট কাগজও যেখানে সেখানে ফেলতে মন চায় না। অপরাধবোধ, লজ্জা, রীতি-নীতি, রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা যেন বিবেক ধরে টানে। পথে- ঘাটে কিছু ফেলা তো দূরের কথা এদেশের মানুষ চলার পথে কোন কাগজ-ময়লা দেখলে তা নিজের হাতে তুলে নিয়ে নির্ধারিত 'বিনে' ফেলে আনন্দ লাভ করে। আমাদের ঘরের বাইরের দরজা পর্যন্ত সরকারি দায়িত্বে সপ্তাহে একবার পরিস্কার করা হয়। এর পরও আমরা একটি শুষ্ক পাতাও উঠোনে পড়তে দেই না। নিজের হাতে যখন এ রকম কাজগুলি আমরা করতে পারি তখন আমাদের ভাল লাগে। মনে হয়, আজ একটি সুন্দর এবং সমাজ সেবামূলক কিছু করা হল। 
আমার মনে পড়ে ২০০৬ সালের কথা। সেবার আমি দেশে গিয়েছিলাম। বিস্কেটের খালি একটি প্যাকেট এবং খালি একটি পানির বোতল কোনোখানে ফেলার জন্য 'বিন' না পাওয়ায় আমার ব্যাগে করে দীর্ঘক্ষণ পথ হেঁটেছি। আমার সাথে আমার কিছু বন্ধু-আত্মীয় ছিল। তারা জানতে চাইল কেন আমি সে সব ফেলছি না। বললাম, আমি একটি 'বিন' এর সন্ধান করছি। তারা অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে জানতে চাইল আমি ঠিক মত আছি কিনা! হয়ত তাদের ধারণা, আমার মাথার কোন অংশে সমস্যা আছে। বন্ধুদের মধ্যে ভার্সিটিতে পড়ুয়া সরকারি বড় কর্মকর্তাও ছিল। সেই-ই এক ধরণের বিদ্রূপের ছলে বলল 'ফেলে দে এখানে, এটা লন্ডন নয়'। 

'অতীত তুমি ভুবনে ভুবনে/ কথা কয়ে যাও গোপনে গোপনে'। আজ থেকে চার বছর আগের কথা। ছেলেমেয়েদের সাথে এখন পার্কে। বিকাল বেলা। বাসায় ফিরতে হবে। গাছের মগডালে কয়েকটি পাখির কূজন। অন্য পাখিরা কোথায় যেন দূরে উড়ে যাচ্ছে। মন বলে দেশে যাই। ফিরে যাই মা-বাবার কোলে, শাপলা জলে, শিমুল তলে, ঘাসের ঘ্রাণে, ফড়িং এর গানের দেশ-আমার সোনার বাংলাদেশে। আবেগ থেমে যায়। নিজেকে অপরাধী ভাবি। যদি বন্ধুদের বুঝাতে না পারি যে, বাংলাদেশ সুন্দর একটি দেশ, এ আমাদের মায়ের দেশ। আমরা মাকে যেমন ভালবাসি ঠিক তেমনি দেশকেও ভালবাসতে হবে, মা এর গায়ে একটি ধুলোও পড়তে দেব না, পড়লে হাত দিয়ে আদরে তা মুছে দেব। বলব, 'মা তোর বদন খানি মলিন হলে আমি নয়ন জলে ভাসি'।-এটাই যে মাতৃভক্তি। দেশপ্রেম! না আর পারি না। বন্ধুরা আবার বলবেন, 'রাখ ও সব, এটি লন্ডন নয়'! 

১১ এপ্রিল ২০১০

লেখক, লন্ডনের স্থায়ী বাসিন্দা। পড়াশুনা করছেন অক্সফোর্ডে। প্রকাশিত গ্রন্থ ১০টি।
sagarsahara@hotmail.com
Read More ... »

তথ্য-প্রযুক্তি

২২ মার্চ ২০১০
ইউনিয়ন পর্যায়ে অনলাইন ডিজিটাল ম্যাপিং তৈরি করেছে এলজিইডি

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুতের পাশাপাশি গ্রামীণ অনলাইন ডাটা বেইজ উন্নয়নের মাধ্যমে এর গ্রামীণ এলাকার সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এলজিইডির গ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিস (জিআইএস) ইতিমধ্যে দেশের সকল ইউনিয়নে ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুত করেছে, যা খুব শিগগিরই তাদের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। জিআইএস ইউনিটের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ‘শিগগিরই যে কোনো ব্যক্তি ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার ইউনিয়নের ডিজিটাল ম্যাপে প্রবেশ করে এলাকার হেলথ কমপ্লেক্স, বিদ্যালয়, মসজিদ, বাজারসহ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে।’
Read More ... »
Widget By Devils Workshop
 

আজকের চাঁদ

CURRENT MOON

© 2009-2010 shibcharsangbad | Design by: Md. Abul Hossain Miah

^ উপরে আসুন