সাইট উন্নয়নে আপনাদের লেখা ও পরামর্শ চাচ্ছি-সম্পাদক

শিবচরে খড়ায় ও পানির অভাবে বপণকৃত বীজ গজাচ্ছে না ।। হাজার হাজার পাটচাষীর কপালে ভাঁজ

19 April 2010:: 03:13pm
পাটের জন্য বিখ্যাত শিবচরের হাটগুলোতে পাট বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ২৯শ’ টাকায়। নিম্নমানের পাটও বিক্রি হচ্ছে ১৯শ’ থেকে ২১শ’ টাকায়। তাই কৃষকের মুখে তৃপ্তির হাসি। কিন্তু এ কৃষকের মুখের তৃপ্তির হাসি ম্লান করে টানা অনাবৃষ্টির ভাজ এখন অন্তত ৩০ হাজার পাটচাষীর কপালে। 
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্র জানায়, পাটের জন্য বিখ্যাত মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় প্রায় ৪০ হাজার পাট চাষী রয়েছে। চলতি বছর পাটের উচ্চ মূল্যের কারণে প্রায় সাড়ে ৩৭ হাজার একর জমিতে পাটবীজ আবাদ করা হয়। এরমধ্যে সাড়ে ৭ হাজার একর জমিতে সেচের মাধ্যমে পাট আবাদ শুরু হলেও ৩০ হাজার একর জমিতে সেচ সুবিধা নেই। তাই প্রখর রোদে অধিক তাপমাত্রায় মাটি গরম হয়ে ৩০ হাজার একর জমিতে বপণকৃত বীজ উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। 
উপজেলাটি পদ্মা, আড়িয়াল খাঁসহ ১০৭টি জলাশয় অধ্যুষিত নিম্নাঞ্চল হওয়ায় প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠের শেষ দিক থেকে আষাঢ়ের মাঝামাঝি সময়েই উপজেলার বেশিরভাগ জমিই পানিতে প্লাবিত হয়। ফলে এ উপজেলায় চৈত্র মাসের শুরুতেই পাট আবাদ (বীজ বপণ) শুরু হয়। চলতি বছর পাটের মূল্য ২৭শ’ থেকে ২৯শ’ টাকা হওয়ায় এ বছর কৃষকরা পাট আবাদে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। কিন্তু এ অঞ্চলে চৈত্র শেষেও কোন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল ৩০ হাজার একর জমিতেই বীজ গজায়নি। আর সেচের উপর নির্ভরশীল সাড়ে ৭ হাজার একর জমির পাট গজালেও কৃষককে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে দফায় দফায় সেচ দিতে হচ্ছে বলে কৃষি কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে । 
শিবচর পৌর এলাকার ডিসি রোডের কৃষক অরুণ হাওলাদার বলেন, এই বৎসর পাটের দাম মণ প্রতি ২৭শ’ থেকে ২৯শ’ টাকায় উঠছে। এই লাইগা আমরা হাজার হাজার কৃষক খুব খুশি হইয়া আরো বেশি জমিতে পাট বুনছি। কিন্তু এহন বৃষ্টির লাইগা আমাগো মাঠের পর মাঠের পাট গজাইতেছে না। আমরা এহন কি করমু ? জানি না। সামনের বৈশাখের পর জ্যৈষ্ঠ থিকাই মাঠে জল আইবো। অথচ গত ১ মাস ধইরা বীজ বুইনাও বৃষ্টির অভাবে গজাইতেছে না। 
উৎরাইলের কৃষক এনাছউদ্দিন বলেন, ৬ বিঘা জমিতে সেচ দিতাছি। আর ৩ বিঘা জমি সেচের বাইরে ওই জমিতে ১ মাস ধইরা বীজ ছিডাইয়া রাখছি। যে খড়ার তাপ। এক একবার প্লাবন সেচ দিতে বিঘায় ৭শ’ টাকা খরচ হইতাছে। বৃষ্টি না হইলে পাট কোনভাবেই ভালো হইবো না। কৃষকরা মারা পরবো। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান বলেন, পাটের উপর এ উপজেলার কৃষি অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল। বৃষ্টি না হওয়ায় উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার একর জমির পাট উৎপাদন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। যার সাথে প্রায় ৩০ হাজার কৃষকের ভাগ্যও জড়িত। উপজেলাটি নিম্নাঞ্চল, তাই দু’মাসের মধ্যে পানিতে প্লাবিত হওয়ার শংকা থাকায় পাট আবাদ চরম হুমকির মধ্যে রয়েছে। 

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

Widget By Devils Workshop
 

আজকের চাঁদ

CURRENT MOON

© 2009-2010 shibcharsangbad | Design by: Md. Abul Hossain Miah

^ উপরে আসুন