17 April 2010 :: 02:03pm
উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের সামসুদ্দিন মৌলভীরকান্দি গ্রামে হেলেনা বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধু এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন। শুক্রবার গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা এসিড নিক্ষেপ করলে হেলেনা বেগমের গলা (ঘাড়ের একাংশ), বুক, স্তন ও পা ঝলসে গেছে। তাকে শিবচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত শুক্রবার গভীর রাতে (সাড়ে দশটায়) শিবচর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের সামসুদ্দিন মৌলভীরকান্দি গ্রামের ব্যবসায়ী শওকত শেখের স্ত্রী তিন সন্তানের জননী হেলেনা বেগমের (৩০) শরীরে এসিড ছুড়েন স্থানীয় প্রভাবশালী ছামাদ ঘরামিসহ ৪/৫জন সন্ত্রাসী। এসময় হেলেনার আর্তচিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে হেলেনাকে উদ্ধার করে শিবচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
হেলেনা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, রাত সাড়ে দশটার দিক আমি আর শিশু কন্যা জান্নাত (১) ঘরে বইসা কেক খাইতেছিলাম। হঠাৎ কইরা গালে ও শরীরে পানি ছিডা লাগে। আমি জানালা দিয়া টর্চ মাইরা দেহি ছামাদ ঘরামিসহ ৪/৫জন দৌড়াইয়া যাইতাছে। ততক্ষণে শরীর দেহি পুইড়া যাইতাছে। পরে আশে পাশের মানুষ সারা শরীরে পানি দিছে। প্রায় এক বছর আগে আমি ছামাদ ঘরামির কাছ থিকা সুদে ২০ হাজার টাকা আইনা একজনরে দিছিলাম। এরপর থিকাই হে আমারে কুপ্রস্তাব আর টাকার জন্য চাপ দিতো।
হেলানার স্বামী শওকত বলেন, ঘটনার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম। ছামাদ ঘরামি অনেকদিন ধইরাই হেলেনারে কুপ্রস্তাব দিতাছিলো। এইজন্যই রাগ হইয়া সম্ভবত সে এসিড মারছে।
পার্শ্ববর্তী তারা বিবি বলেন, এর আগেও ছামাদ ঘরামি টাহা ও নজর খারাপ দেইখা হেলেনারে আমার বাড়িতে আইয়াই মাইর ধইর করছিলো। কালকো রাইতে হেলেনার চিৎকার হুইনা যাইয়া দেহি ওর মেক্সি পুইরা গেছে , সারা শরীরও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হইছে।
অভিযুক্ত মো. ছামাদ ঘরামি মোবাইলে জানান, স্যার ওর সাথে আমার টাকার কোন ঝামেলা নাই। এটা আমার সাথে শত্রুতা। অন্য কেউ এই ঘটনা ঘটাইছে। আর দোষ পড়ছে আমার ঘাড়ে।
কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম সিকদার বলেন, মানুষ কেমনে মানুষরে এসিড মারে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ঝলসানোর ধরণ দেখে মনে হচ্ছে এটি দুর্বল এসিড (কার্বলিক বা ব্যাটারির জন্য ব্যবহৃত)। এসিডে তার গলা, বুক, বাম স্তন, মুখের আংশিক ও বাম পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শিবচর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ. জলিল বলেন, এ ব্যাপারে ৩ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

0 মন্তব্য(সমূহ):
Post a Comment