প্রেমিকের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম মোবাইল সেট কেড়ে নেয়ায় নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন মাদারীপুর জেলার শিবচর পৌর এলাকার লাবনী আক্তার (২০) । শরীরের প্রায় শতভাগ দেহ ঝলসে লাবনী এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, শিবচর পৌর এলাকার যাদুয়ারচর এলাকার নুরুল ইসলাম বাসারের বড় মেয়ে লাবনী আক্তারের সাথে নিকটাত্মীয় রংপুরের চিলমাড়ি এলাকার মোহাম্মদ আলীর দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোনে প্রেম চলছিল। এরই সূত্র ধরে গত ১৫ দিন আগে মোহাম্মদ আলী লাবনীদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। ৫ দিন অবস্থানের পর মোহাম্মদ আলী তার কর্মস্থল ঢাকায় ফিরে যায়। কিন্তু এই ক'দিন লাবনী আক্তার ও মোহাম্মদ আলীর চলাফেরায় সন্দেহ হলে গত শুক্রবার (৫ মার্চ) অভিভাবকরা লাবনীর মোবাইল ফোনসেটটি নিয়ে যায় এবং লাবনীকে রাগারাগি করা হয়। এরই সূত্র ধরে গতকাল মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১১ টায় নিজ বাড়ির উঠানে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন শরীরে ছড়িয়ে পড়লে তার আর্তচিৎকারে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শিবচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ঢাকায় নিয়ে যায়।
লাবনীর মামি সালমা বেগম বলেন, লাবনীরা ৫ বোন, ১ ভাই এতবড় সংসার নিয়ে কষ্ট করে তাই আমাদের বাড়িতেই থাকে। এর আগে একবার লাবনীর ঢাকার কালীগঞ্জের আবু কালাম নামে এক ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু স্বামীর বয়সের সাথে ওর বয়সের পার্থক্য বেশি হওয়ায় স্বামীর সাথে সম্পর্ক খারাপ ছিল। কিন্তু বর্তমানে যে ছেলের সাথে সম্পর্ক সেও ভাল না। ফলে ওর মা-বাবা সম্পর্কে বাধা দেয় ও যোগাযোগের মাধ্যম মোবাইল ফোনসেট নিয়ে নেয়। এজন্যই হয়তো মনের কষ্টে এরকম ঘটিয়েছে।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আশরাফুল ইসলাম তমাল বলেন, মেয়েটির সারা শরীরের প্রথম স্তরের চামড়া প্রায় সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে স্যালাইন দিয়ে গত রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী শিবচর থানার এসআই অলিদুজ্জামান বলেন, লাবনীর পরিবারের সদস্যদের সাথে আলাপে মনে হয়েছে প্রেমে বাধা দেয়া ও বয়স্ক ব্যক্তির সাথে বিয়ে দেয়ার কষ্ট থেকে স্বেচ্ছায় শরীরে আগুন দিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
0 মন্তব্য(সমূহ):
Post a Comment